‘ভদ্রলোকদের’ উদ্দেশে মোদীর ডাক— তৃণমূলকে বিদায় দিতে প্রস্তুত কি কলকাতা?
দমদমের সভা থেকে মোদীর বার্তা: ‘বাঁচতে চাই, বিজেপি তাই’— তৃণমূলকে বিদায় দিয়ে বিকশিত বাংলা গড়ার ডাক
বাংলায় বিধানসভা ভোটের এখনও আট মাস বাকি। কিন্তু নির্বাচনী আবহ ইতিমধ্যেই ঘন হচ্ছে। গত চার মাসের মধ্যে তৃতীয়বার পশ্চিমবঙ্গ সফরে এসে শনিবার দমদমে বড় সভা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কংগ্রেস-বাম জমানার পর ২০১১ সালে মানুষ ‘মা-মাটি-মানুষ’-এর ওপর ভরসা রেখেছিল বলে স্মরণ করালেও, তাঁর দাবি— পরিস্থিতি আগের চেয়েও খারাপ। ভর্তি দুর্নীতি, মহিলাদের ওপর অত্যাচার, অপরাধ, কৃষক অবহেলা— প্রতিটি ক্ষেত্রেই তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বাংলা কাজ চায়, বাংলা মেয়েদের সুরক্ষা চায়, কৃষকদের সম্মান চায়। অপরাধীদের জায়গা সরকার নয়, জেলে। এই পরিবর্তন আনতে পারে কেবল বিজেপি।”
মোদীর দাবি, দিল্লি থেকে উন্নয়নের জন্য পাঠানো টাকা সাধারণ মানুষের জন্য ব্যয় হয় না, বরং তৃণমূলের ক্যাডারদের স্বার্থে লুঠ হয়ে যায়। স্মার্ট সিটি মিশন থেকে পরিকাঠামো উন্নয়ন— সব ক্ষেত্রেই বাংলাকে পিছিয়ে রাখছে রাজ্য সরকার বলে অভিযোগ তুলেছেন তিনি। বাংলার ‘ভদ্রলোকদের’ উদ্দেশে তাঁর সরাসরি বার্তা— “তৃণমূলকে বিদায় দিন, ওরা থাকলে বাংলার ভাল হবে না।”
উন্নয়নের বিকল্প মডেল হিসেবে তিনি আশ্বাস দেন—
দমদম-সহ শিল্পাঞ্চলগুলিকে ফের কারখানার শহরে পরিণত করা
মেট্রো ও রেলের বিস্তৃত নেটওয়ার্ক
গঙ্গায় ক্রুজ ও হেরিটেজ ট্যুরিজমের বিকাশ
তরুণদের জন্য কর্মসংস্থানের নতুন দিগন্ত
এছাড়া, প্রতিরক্ষা শিল্পের প্রসঙ্গে মোদী বলেন, “ইছাপুরে আধুনিক রাইফেল তৈরি হচ্ছে, যা স্থানীয়দের চাকরির সুযোগও দিচ্ছে। কংগ্রেস সেনাকে বিদেশনির্ভর করেছিল, বিজেপি দেশীয় অস্ত্রে পাকিস্তানকে শিক্ষা দিয়েছে।”
তবে তাঁর ভাষণের বড় অংশ জুড়ে ছিল অনুপ্রবেশ প্রসঙ্গ। অভিযোগ তুলেছেন— “অনুপ্রবেশকারীরা বাংলার চাকরি কেড়ে নিচ্ছে, কৃষকদের জমি দখল করছে, মা-বোনেদের উত্যক্ত করছে। বাংলার ডেমোগ্রাফি বদলে যাচ্ছে। বিজেপিই একমাত্র এই অনুপ্রবেশ রুখতে পারবে।”
একই সঙ্গে সংসদে আনা অ্যান্টি করাপশন বিলের প্রসঙ্গ টেনে তৃণমূলের মন্ত্রীদের দুর্নীতির মামলা ও জেলযাত্রার উদাহরণ তুলে ধরে মোদী কটাক্ষ করেন— “তৃণমূল আইন মানে না, সংবিধান মানে না।”
কলকাতার আবেগের সঙ্গে উন্নয়ন ও দুর্নীতিবিরোধী বার্তা মিশিয়ে মোদীর স্লোগান—
“বাঁচতে চাই, বিজেপি তাই”— ইতিমধ্যেই নির্বাচনী প্রচারের মূল মন্ত্র হয়ে উঠছে।
সব মিলিয়ে দমদমের সভা থেকে বিজেপির স্পষ্ট বার্তা— ২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনের দিকে এখন থেকেই ঝাঁপিয়ে পড়ছে দল।
No comments:
আপনার মতামত এর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ 👇
👉 যদি মনে হয় বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ, পোস্টটি শেয়ার করুন 🔄নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন