টিএমসিপি-র প্রতিষ্ঠা দিবসে পরীক্ষা পিছোল না কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়
📰 Y বাংলা নিউজ | বিশেষ প্রতিবেদন :- টিএমসিপি-র প্রতিষ্ঠা দিবসে পরীক্ষা পিছোল না কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়
উপাচার্যের আপসহীন অবস্থান ঘিরে তুঙ্গে বিতর্ক, মীরা পাণ্ডের লড়াইয়ের সঙ্গে তুলনা
---
শাসক দলের ছাত্র সংগঠন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি) প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর দিনে পরীক্ষা পিছোনোর অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের (Calcutta University) উপাচার্য শান্তা দত্ত দে (Santa Dutta Dey)। সরকারের বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও নিজের সিদ্ধান্তে অনড় থেকে বৃহস্পতিবার নির্ধারিত পরীক্ষাই নিল বিশ্ববিদ্যালয়।
অন্যদিকে, একই দিনে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় (Burdwan University) সহ একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষা পিছিয়ে দিয়েছে। দিনটির রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক গুরুত্ব বিবেচনা করেই তারা এই সিদ্ধান্ত নেয় বলে খবর। কিন্তু কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান পুরোপুরি আলাদা— উপাচার্য স্পষ্ট জানিয়ে দেন, পরীক্ষার দিন পরিবর্তনের প্রশ্ন নেই।
---
মীরা পাণ্ডের কথা মনে করাচ্ছে শান্তা দত্তর দৃঢ়তা
উপাচার্যের এই অবস্থান অনেককেই মনে করাচ্ছে রাজ্যের প্রাক্তন নির্বাচন কমিশনার মীরা পাণ্ডের কথা। প্রায় ১২ বছর আগে পঞ্চায়েত নির্বাচনে সরকারের আপত্তিকে অগ্রাহ্য করে তিনি তিন দফায় ভোট করান, এমনকি সন্ত্রাস কবলিত এলাকায় আধা সেনা নামিয়েছিলেন। তাঁর দৃঢ় অবস্থান রাজ্যপাল ও আদালতের সহায়তায় সেদিন প্রশাসনিক ইতিহাসে নজির তৈরি করে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, শান্তা দত্তও সেই পথেই হেঁটেছেন— প্রশাসনিক দায়িত্বের জায়গায় রাজনৈতিক চাপকে প্রাধান্য না দিয়ে কর্তব্যকেই শীর্ষে রেখেছেন।
---
পরীক্ষার দিনে আপস না করার সিদ্ধান্ত
বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ পরিচালন কমিটি সিনেট, যা সাধারণত বছরে দু’বার বৈঠক করে সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুমোদন করে। চাইলে উপাচার্য সিন্ডিকেটকে দিয়ে পরীক্ষা পিছোনোর সিদ্ধান্ত আনতে পারতেন। কিন্তু তিনি সেই পথে হাঁটেননি। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধিকার ও ছাত্রদের ভবিষ্যতের স্বার্থে নির্ধারিত দিনেই পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
এই দৃঢ়তায় বহু মহল থেকেই প্রশংসিত হচ্ছেন শান্তা দত্ত— অনেকেই তাঁকে “মেরুদণ্ড সোজা প্রশাসক” আখ্যা দিয়েছেন।
---
বাম জমানার বনধ বনাম বর্তমান পরিস্থিতি
বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিক-কর্মচারীদের দাবি, বাম আমলেও বনধ বা ধর্মঘটের কারণে কয়েকবার পরীক্ষা পিছোনো হয়েছিল। তবে সেগুলি হয়েছিল অনিবার্য পরিস্থিতির কারণে— যেমন গণপরিবহন সম্পূর্ণ স্তব্ধ হয়ে যাওয়া। কিন্তু এবারের ঘটনাটি ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন।
শুধুমাত্র একটি ছাত্র সংগঠনের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে পরীক্ষা পিছোনোর দাবি তাঁরা মেনে নেননি।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মিছিল বা যানজটের কারণে ছাত্রছাত্রীদের যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, তার জন্য কলকাতা পুলিশকে আগে থেকেই সতর্ক করা হয়েছিল। ফলে বৃহস্পতিবার পরীক্ষাও নির্বিঘ্নেই সম্পন্ন হয়।
---
উপসংহার
রাজনৈতিক চাপ, সরকারের অনুরোধ কিংবা শাসক ছাত্র সংগঠনের দাবি— কোনও কিছুকেই গুরুত্ব না দিয়ে কেবলমাত্র ছাত্রস্বার্থ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদাকে প্রাধান্য দিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। প্রশাসনিক দৃঢ়তা এবং আপসহীন অবস্থানের কারণে বর্তমানে শিক্ষাক্ষেত্র থেকে রাজনৈতিক মহল— সর্বত্রই তিনি আলোচনায়।
No comments:
আপনার মতামত এর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ 👇
👉 যদি মনে হয় বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ, পোস্টটি শেয়ার করুন 🔄নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন