ভারতের লক্ষ্য: বিশ্বের শীর্ষ ২০ ব্যাঙ্কের মধ্যে স্থান করে নেওয়া

ভারতের লক্ষ্য: বিশ্বের শীর্ষ ২০ ব্যাঙ্কের মধ্যে স্থান করে নেওয়া

ভারতের লক্ষ্য: বিশ্বের শীর্ষ ২০ ব্যাঙ্কের মধ্যে স্থান করে নেওয়া

আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৪:০৯

ভারতীয় ব্যাঙ্কের লক্ষ্য

ভারত সরকার চাইছে, ২০৪৭ সালের মধ্যে বিশ্বের শীর্ষ ২০ ব্যাঙ্কের মধ্যে অন্তত দুটি ভারতীয় ব্যাঙ্কের স্থান নিশ্চিত হোক।

বিশ্বের শীর্ষ ব্যাঙ্কের তালিকায় প্রথম ২০টি ব্যাঙ্কের মধ্যে ভারতীয় ব্যাঙ্কের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে উদ্যোগ নিয়েছে ভারত সরকার। বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান ব্যাঙ্কগুলির তালিকার ১০০টি ব্যাঙ্কের মধ্যে ইতিমধ্যেই দুটি ভারতীয় ব্যাঙ্ক রয়েছে। একটির নাম রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (SBI) এবং অপরটি বেসরকারি ব্যাঙ্ক এইচডিএফসি (HDFC)।

ভারতীয় ব্যাঙ্কের অবস্থান

বিশ্বের শীর্ষ ৫০টি ব্যাঙ্কের মধ্যে একমাত্র ভারতীয় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক হল এসবিআই। বৈশ্বিক র‌্যাঙ্ক অনুসারে সম্পদের দিক থেকে এটি ৪৭তম স্থানে রয়েছে। আর HDFC ব্যাঙ্কের সম্পদ তালিকার নীচের দিকে রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে দেশীয় ব্যাঙ্কগুলির পুঁজিবৃদ্ধি অপরিহার্য। আর্থিক স্বাস্থ্য ঠিক না থাকলে আমেরিকা, চিন বা ইউরোপের ব্যাঙ্কগুলির সঙ্গে পাল্লা দেওয়া কঠিন হবে।

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির সংযুক্তিকরণ

সম্প্রতি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির সংযুক্তিকরণের ফলে তাদের আর্থিক স্বাস্থ্য আগের তুলনায় অনেক বেশি স্থিতিশীল হয়েছে। আর্থিক পরিষেবা দফতের সচিব এম নাগরাজু মনে করছেন, দেশের আর্থিক বৃদ্ধিতে গতি আনা, উদ্ভাবনে জোর দেওয়া এবং সামগ্রিকভাবে আর্থিক পরিষেবায় নেতৃত্ব প্রদানের সময় এসেছে।

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক সংযুক্তিকরণ

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির সংযুক্তিকরণের ফলে তাদের আর্থিক স্বাস্থ্য অনেক স্থিতিশীল হয়েছে।

'পিএসবি মন্থন' অনুষ্ঠান

দফতর আয়োজিত দু’দিনের ‘পিএসবি মন্থন’ অনুষ্ঠানে ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রের আর্থিক বৃদ্ধিতে গতি আনা, উদ্ভাবনে জোর দেওয়া এবং সামগ্রিকভাবে আর্থিক পরিষেবায় জোর দেওয়ার মতো পদক্ষেপের কথা উঠে এসেছে। গ্রাহক পরিষেবা, ব্যাঙ্ক পরিচালনা, উদ্ভাবনী ধারণা, ঋণ বৃদ্ধি, ঝুঁকি সামলানো এবং উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার কেন্দ্রের গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবের অংশ।

২০৪৭ সালের লক্ষ্য

কেন্দ্র ২০৪৭ সালের মধ্যে বিশ্বের শীর্ষ ২০টি ব্যাঙ্কের মধ্যে অন্তত একটি ভারতীয় ব্যাঙ্কের স্থান নিশ্চিত করতে চায়। এজন্য দেশে কমপক্ষে দুটি বিশ্বমানের ব্যাঙ্ক থাকা আবশ্যক। প্রধান আর্থিক কর্মকর্তারা মনে করছেন, দেশীয় ব্যাঙ্কগুলিকে আন্তর্জাতিক মানে গড়ে তুলতে পদক্ষেপ নেয়া জরুরি।

সংযুক্তিকরণের ইতিহাস

২০১৯ সালে সরকার কমপক্ষে ১০টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ককে একত্রিত করে চারটি বৃহৎ ব্যাঙ্ক তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেয়। উদাহরণস্বরূপ, পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক (PNB) ও ওরিয়েন্টাল ব্যাঙ্ক অফ কমার্স (OBC) এবং ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (UBI) সংযুক্ত হয়ে ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম ব্যাঙ্ক তৈরি হয়।

কানাড়া ব্যাঙ্ক ও সিন্ডিকেট ব্যাঙ্ক মিলে দেশের চতুর্থ বৃহত্তম ঋণদাতা হিসেবে আবির্ভূত হয়। ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া, অন্ধ্র ব্যাঙ্ক এবং কর্পোরেশন ব্যাঙ্ক জোট বাঁধার পর ভারতের পঞ্চম বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক সৃষ্টি হয়। এছাড়া ইলাহাবাদ ব্যাঙ্ককে ইন্ডিয়ান ব্যাঙ্কের সঙ্গে সংযুক্ত করে তা সপ্তম বৃহত্তম ব্যাঙ্কে পরিণত হয়।

ব্যাঙ্ক সংযুক্তিকরণের দ্বিতীয় ধাপ

২০১৭ সালে ভারতে ২৭টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক ছিল। প্রথম ধাপের সংযুক্তিকরণের পরে দেশীয় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সংখ্যা সাতটি বড় ও পাঁচটি ছোট ব্যাঙ্কে সীমিত হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপের সংযুক্তিকরণের মাধ্যমে ভারতের ব্যাঙ্কগুলিকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে প্রতিযোগিতার যোগ্য করে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও লক্ষ্য

২০৩৯ সালের মধ্যে ব্যাঙ্কগুলিকে অভ্যন্তরীণ পরিষেবার বদলে আন্তর্জাতিক পরিষেবা প্রদানে গুরুত্ব দিতে হবে। ২০৪০ সালের মধ্যে দেশের পরিকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য প্রায় ৪.৫ লক্ষ কোটি ডলারের প্রয়োজন হবে। স্বাধীনতার ১০০ বছরে ‘বিকশিত ভারতের’ স্বপ্ন পূরণের জন্য দুটি বৃহৎ বিশ্বমানের ব্যাঙ্ক অপরিহার্য।

২০২৭ সালের মধ্যে লক্ষ্য অর্জনের জন্য ভারতকে প্রতি বছর SBI-কে ৩.১–৩.৬% হারে ব্যবসা বৃদ্ধি করতে হবে। আন্তর্জাতিক ব্যাঙ্কের ব্যবসা বৃদ্ধির তুলনায় ভারতীয় ব্যাঙ্কগুলির লক্ষ্য বাড়ানো হয়েছে। SBI-র মোট সম্পদ ৮৭ হাজার কোটি ডলার, যা বিশ্বের ৪৩তম স্থানে। HDFC ব্যাঙ্কের মোট সম্পদ SBI-র অর্ধেকের কিছু বেশি।

চ্যালেঞ্জ ও পরামর্শ

বিশ্বমানের ব্যাঙ্ক গড়ে তোলার জন্য পরিচালনামূলক স্বায়ত্তশাসনের প্রয়োজন রয়েছে। তবে অপব্যবহারের আশঙ্কা থাকায় পরিচালন বোর্ডের তদারকি জোরদার করতে হবে। স্বচ্ছতা, বিশ্বাসযোগ্যতা এবং আন্তর্জাতিক মান অনুসারে নির্দেশিকা তৈরি করা অপরিহার্য। ব্যাঙ্কগুলিকে নিজস্ব পরিকাঠামোগত উন্নয়ন ও পুঁজিবৃদ্ধিতে নজর দিতে হবে। ঋণের ক্ষেত্রে বৈচিত্র আনাও গুরুত্বপূর্ণ।

📢 সবার আগে নিউজ আপডেট পেতে আমাদের ফলো করুন

📰 রাজনীতি | ⚽ খেলা | 🎬 বিনোদন | 🌍 আন্তর্জাতিক খবর 👉 সবকিছু এক ক্লিকেই পান আপনার হাতে।

No comments:

আপনার মতামত এর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ 👇
👉 যদি মনে হয় বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ, পোস্টটি শেয়ার করুন 🔄নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন

Featured post

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারা অনুপ্রাণিত শোভন চট্টোপাধ্যায়, মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে স্বীকৃতি অভিষেক বন্দ্...

Search This Blog

Powered by Blogger.