রাষ্ট্রসংঘে ‘রক্তপিপাসু’ নেতানিয়াহু: কূটনীতিকদের বয়কট, বিশ্বমঞ্চে কোণঠাসা ইজরায়েল”
গাজায় ইজরায়েলি হামলা: রাষ্ট্রসংঘে নেতানিয়াহুর বয়কট

ডিজিটাল ডেস্ক: গাজায় লাগাতার ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর কারণে আন্তর্জাতিক মহলে ইতিমধ্যেই সমালোচনার মুখে পড়েছেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। সেই চাপ এবার এসে পড়ল রাষ্ট্রসংঘের মঞ্চেও। শুক্রবার রাষ্ট্রসংঘে ভাষণ দিতে উঠতেই একে একে আসন ছাড়লেন বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা এটিকে ইজরায়েলের জন্য একটি সংকেত হিসেবে দেখছেন, যা প্রমাণ করছে বিশ্বমঞ্চে দেশটি ক্রমেই কোণঠাসা হয়ে পড়ছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, নেতানিয়াহুর ভাষণের সময় আরব ও মুসলিম দেশগুলির প্রায় সকল প্রতিনিধিরা ‘ওয়াক আউট’ করেন। অন্যদিকে, কয়েকটি আফ্রিকান দেশ ও ইউরোপীয় রাষ্ট্রের প্রতিনিধি ভাষণের সময় উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখযোগ্য, যুদ্ধপরাধের অভিযোগে ইতিমধ্যেই আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে।
সম্প্রতি নেতানিয়াহু হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, তেল আভিভ শীঘ্রই গাজায় তার অসম্পূর্ণ কাজ শেষ করে ফেলবে। তিনি ইজরায়েলি সেনাবাহিনীকে গাজার মানুষের কাছে এই হুমকির বার্তা লাউডস্পিকারের মাধ্যমে প্রচার করার নির্দেশ দিয়েছেন। এরপরই রাষ্ট্রসংঘে তাঁর মুখ পুড়ে গেছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজায় হামলার পর প্যালেস্টাইনের জঙ্গি সংগঠন হামাস-এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন নেতানিয়াহু। এরপর থেকে লড়াই অব্যাহত রয়েছে। ইজরায়েলের হামলার ফলে গাজা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। সংঘর্ষবিরতি নিয়ে আলোচনা চললেও ভবিষ্যৎ এখনও অনিশ্চিত। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও যুদ্ধ থামাতে চেষ্টা চালিয়েছেন, কিন্তু এখনও পর্যন্ত সফল হননি।
মানবিক ও মানবাধিকার পরিস্থিতি
যুদ্ধে মৃতের সংখ্যা বর্তমানে ৬০ হাজারেরও বেশি। আহতের সংখ্যা প্রায় ২ লক্ষ। অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন ৪ লক্ষ ৭০ হাজার মানুষ। হামাসের হাতে এখনও বহু মানুষ পণবন্দি রয়েছেন। সম্প্রতি ১৬ সেপ্টেম্বর গাজার গভীরে প্রবেশ করে ইজরায়েলি সেনা অভিযান শুরু করেছে। শতাধিক ট্যাঙ্ক ও সেনা গাড়ি গাজার বিভিন্ন স্থানে প্রবেশ করেছে।
রাষ্ট্রসংঘ বারবার গাজায় ইজরায়েলের হামলার বিরুদ্ধে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। অভিযোগ উঠেছে, সাধারণ প্যালেস্তিনীয়দের জীবন ও আন্তর্জাতিক আইন উপেক্ষা করা হচ্ছে। কিন্তু নেতানিয়াহু আক্রমণের তীব্রতা কমাননি, বরং ক্রমেই তা বৃদ্ধি পেয়েছে। সম্প্রতি রাষ্ট্রসংঘ জানিয়েছে, গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ জমি ইতিমধ্যেই ইজরায়েলের নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে।
গাজার পরিস্থিতি নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার কমিশন একটি অনুসন্ধান চালিয়েছে। প্রকাশিত রিপোর্টে গাজায় গণহত্যার জন্য সরাসরি ইজরায়েলকেই দায়ী করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ইহুদি দেশের ‘গ্রাউন্ড অফেনসিভ’ আরও জটিল পরিস্থিতি তৈরি করবে। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা সতর্ক করেছেন, এই পদক্ষেপের ফলে সামনের দিনগুলোতে মানবিক বিপর্যয় আরও প্রকট হবে।
রাষ্ট্রসংঘে নেতানিয়াহুর ভাষণ বয়কট করে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে অনেক দেশ, যা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ইজরায়েলের একপক্ষীয় হামলার প্রতি ক্ষোভকে প্রতিফলিত করছে। এছাড়া, বিভিন্ন কূটনীতিকের এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের নজরেও এসেছে।
বিশ্লেষক মন্তব্য
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, নেতানিয়াহুর এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক কূটনীতিকদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করতে পারে না। বরং এটি ইজরায়েলের কৌশলগত ও রাজনৈতিক অবস্থান আরও দুর্বল করবে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজর এখন গাজার উপর, যেখানে প্রতিনিয়ত সাধারণ মানুষই সবচেয়ে বড় ঝুঁকির মুখে রয়েছেন।
বর্তমান পরিস্থিতি দেখলে বোঝা যায়, গাজার যুদ্ধে নিঃসন্দেহে মানবিক ও রাজনৈতিক দু’টি বড় সংকট সৃষ্টি হয়েছে। আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকার সংক্রান্ত চাপের মধ্যেও ইজরায়েল আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে। গাজার মানুষের নিরাপত্তা ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কূটনৈতিক প্রতিক্রিয়ার মধ্যে ভারসাম্য থাকা এখন বড় চ্যালেঞ্জ।
📢 সবার আগে নিউজ আপডেট পেতে আমাদের ফলো করুন
📰 রাজনীতি | ⚽ খেলা | 🎬 বিনোদন | 🌍 আন্তর্জাতিক খবর 👉 সবকিছু এক ক্লিকেই পান আপনার হাতে।
👍 ফলো করুন Facebook 💬 Join করুন WhatsApp গ্রুপে
No comments:
আপনার মতামত এর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ 👇
👉 যদি মনে হয় বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ, পোস্টটি শেয়ার করুন 🔄নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন