চন্দ্রনাথ সিংহ প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় রায় স্থগিত

চন্দ্রনাথ সিংহ প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় রায় স্থগিত

চন্দ্রনাথ সিংহ প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় রায় স্থগিত

প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় রাজ্যের কারা এবং ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহকে বিচারক জামিন দেবেন, না কি ইডির আবেদন মেনে হেফাজত মঞ্জুর করবেন, তা নিয়ে গোটা রাজ্যজুড়ে কৌতূহল ছিল। মঙ্গলবারই বিচার ভবনে এই মামলার রায় দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিভিন্ন কারণে বিচারক কোর্টে উপস্থিত হতে পারেননি। ফলে মঙ্গলবার রায়দান সম্পূর্ণভাবে স্থগিত হয়েছে। আদালতের সূত্রে জানা গেছে, বুধবারই চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করবেন বিচারক।

আরও খবর পড়ুন, আজ মুখোমুখি ভারত-বাংলাদেশ: এশিয়া কাপের উত্তেজনা চরমে

মামলার মধ্যে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক উভয় স্তরের চাপ ছিল যথেষ্ট। আদালতের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত রাজ্য রাজনীতিতে প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার রায় চন্দ্রনাথ সিংহের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এ কারণে মামলার প্রতি নজর রাখছিলেন রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় পর্যায়ের রাজনীতিবিদরা।

সোমবার রাতভর কলকাতা এবং শহরতলিতে ভারী বৃষ্টি হয়। টানা কয়েক ঘণ্টার বর্ষণে শহরের বিভিন্ন এলাকা জলমগ্ন হয়ে যায়। সকাল থেকে বৃষ্টি কিছুটা কমলেও দুপুর পর্যন্ত জলাবদ্ধতা ছিল চোখে পড়ার মতো। যানজটের কারণে সাধারণ মানুষ তাদের গন্তব্যে পৌঁছাতে হিমশিম খেতে বাধ্য হন। কেউ কেউ মাঝপথে ফিরে আসেন। কলকাতার বিভিন্ন আদালতও এই জলাবদ্ধতার কারণে ব্যাহত হয়। অনেক আইনজীবী ও বিচারক কোর্টে উপস্থিত হতে পারেননি। ফলে বিভিন্ন মামলার শুনানি পিছিয়ে যায়।

আরও খবর পড়ুন, কলকাতার আরও জল যন্ত্রণা

গত ৬ সেপ্টেম্বর চন্দ্রনাথ সিংহ নিজে আদালতে গিয়ে আত্মসমর্পণ করেছিলেন। সেই সময় ইডি তাঁকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করেছিল। তবে আদালত চন্দ্রনাথের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন। আদালত কিছু শর্তও চাপিয়ে দেন। যেমন, জামিন পেলেও চন্দ্রনাথ আপাতত নিজের বিধানসভা কেন্দ্র এবং কলকাতার বাইরে কোথাও যেতে পারবেন না। এছাড়া তদন্তে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করতে হবে। যতদিন এই মামলার শুনানি শেষ হবে না, ততদিন এই শর্ত মানতে হবে।

গত শনিবার মামলার শুনানি ছিল। দু’পক্ষই আদালতে নিজেদের যুক্তি উপস্থাপন করে। ইডি অভিযোগ তুলেছিল যে চন্দ্রনাথের পক্ষ তদন্তে সহযোগিতা করেনি এবং প্রয়োজনীয় নথি সরবরাহ করেনি। একই সঙ্গে আদালত জানতে চেয়েছিল তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়ে। চন্দ্রনাথের আইনজীবীরা আদালতে জানান, মামলার তদন্তের সময়ে তাঁকে হেফাজতে নেওয়া হয়নি, কিন্তু চার্জশিট জমা পড়েছে। রাজ্যের কারামন্ত্রীর পক্ষ থেকে বলা হয়, জুলাই মাসে ইডি চন্দ্রনাথকে তলব করেছিল। সেই সময় আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন। ৪ অগস্ট পুনরায় তলব করা হলে আইনজীবীরা নিশ্চিত করতে চেয়েছিলেন ৭ অগস্ট সব নথি জমা হবে। তবে তখন তদন্তকারী আধিকারিক উপস্থিত ছিলেন না।

ইডির আইনজীবীরা পাল্টা দাবি করেন, “তল্লাশি এবং বয়ান নথিবদ্ধ করার মাঝে পঞ্চম চার্জশিট জমা পড়েছে। এছাড়া সুপ্রিম কোর্ট পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরু করার নির্দেশ দিয়েছে। তদন্তকারী আধিকারিকেরা সেই কাজে ব্যস্ত ছিলেন। তবে এর মধ্যেই তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।” আদালতে উভয় পক্ষের সওয়াল-জবাবের পর বিচারক রায়দান স্থগিত রাখেন। মঙ্গলবার রায়দানের কথা থাকলেও বিচারকের অনুপস্থিতির কারণে তা সম্ভব হয়নি।

মামলার বিষয়বস্তু ও প্রভাব বিবেচনায় রাজ্য রাজনীতিতে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় চূড়ান্ত রায় চন্দ্রনাথ সিংহের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ এবং রাজ্যের প্রশাসনিক ব্যবস্থার ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে। আদালতের শর্তসাপেক্ষ জামিনের কারণে মন্ত্রীকে তার বিধানসভা কেন্দ্রের বাইরে যাত্রা সীমিত রাখা হয়েছে, যা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সীমাবদ্ধতা তৈরি করবে।

এদিকে, কলকাতার জলাবদ্ধতা ও বৃষ্টির কারণে সাধারণ মানুষও অতিরিক্ত সমস্যায় পড়েছে। শহরের বিভিন্ন আদালতে জল জমার কারণে আদালত কাজ ব্যাহত হয়েছে। অনেক আইনজীবী, মামলা পক্ষ এবং বিচারকরা কোর্টে উপস্থিত হতে পারেননি। ফলে আরও অনেক মামলার শুনানি পিছিয়ে গেছে। শহরের বৃষ্টি এবং জলাবদ্ধতা রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডকেও প্রভাবিত করেছে।

মামলার শুনানি ও তদন্তের বিস্তারিত বিবরণ অনুযায়ী, চন্দ্রনাথ সিংহের বিরুদ্ধে চার্জশিট ইতিমধ্যে দায়ের করা হয়েছে। মামলার তদন্তে ইডি উল্লেখ করেছে যে, প্রয়োজনীয় নথি চন্দ্রনাথ সরবরাহ করেননি। আবার চন্দ্রনাথের আইনজীবীরা দাবি করেন যে, সমস্ত নথি সময়মতো জমা দেওয়া হয়েছে এবং কোনো ধরনের অসহযোগিতা ঘটেনি। আদালত উভয় পক্ষের যুক্তি শুনে রায়দান স্থগিত রাখে।

রাজ্য রাজনীতিতে এই মামলার প্রভাব বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার রায় যে কোনও সময় ঘোষণা করা যেতে পারে এবং তা চন্দ্রনাথ সিংহের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ও মন্ত্রিত্বে সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে। আদালতের শর্তসাপেক্ষ জামিনে থাকা মন্ত্রীকে বিধানসভা কেন্দ্র এবং কলকাতার বাইরে যাওয়া নিষিদ্ধ, যা তার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড সীমিত করবে। এছাড়া মামলার তদন্ত ও শুনানি চলাকালীন আদালতের শর্ত অনুযায়ী তাকে সহযোগিতা করতে হবে।

মোটকথা, প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় চন্দ্রনাথ সিংহের রায় বুধবার ঘোষণা হবে। আদালতের শর্তসাপেক্ষ জামিন এবং মামলার তদন্তের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে রাজনৈতিক, প্রশাসনিক ও সাধারণ মানুষের মধ্যে কৌতূহল তীব্র রয়েছে। শহরের বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতার কারণে আদালতের কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ায় রায়দানের ক্ষেত্রে আরও কিছু সময় লাগতে পারে। তবে, আদালত এবং তদন্তকারী সংস্থা উভয়ই মামলার সঠিক ও ন্যায্য সমাধান নিশ্চিত করতে কাজ করছে।

📢 সবার আগে নিউজ আপডেট পেতে আমাদের ফলো করুন

📰 রাজনীতি | ⚽ খেলা | 🎬 বিনোদন | 🌍 আন্তর্জাতিক খবর 👉 সবকিছু এক ক্লিকেই পান আপনার হাতে।

👍 ফলো করুন Facebook 💬 Join করুন WhatsApp গ্রুপে

No comments:

আপনার মতামত এর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ 👇
👉 যদি মনে হয় বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ, পোস্টটি শেয়ার করুন 🔄নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন

Featured post

দুর্গাপুর গণধর্ষণ: সিবিআই তদন্ত দাবি পরিবারের, পুনর্নির্মাণে পুলিশের নজর দুর্গাপুর গণধর...

Search This Blog

Powered by Blogger.