Primary TET Scam Case: প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় নয়া মোড়, হাইকোর্টে 'অযোগ্য'দের তালিকা
প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় নয়া মোড়: 'অযোগ্য'দের তালিকা পেশ, চাকরিহারাদের তীব্র আপত্তি
পশ্চিমবঙ্গের বহুল আলোচিত প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সোমবার হাইকোর্টে এক নতুন অধ্যায় সূচিত হলো। মামলাকারীদের তরফ থেকে আদালতে পেশ করা হয়েছে তথাকথিত ‘অযোগ্য’ প্রার্থীদের একটি তালিকা। এর পাশাপাশি, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইও চার্জশিট জমা দিয়েছে। আদালতের ডিভিশন বেঞ্চে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর সামনে এই তালিকা জমা পড়তেই প্রবল আলোড়ন তৈরি হয়েছে। আরো খবর পড়ুন , DA মামলায় সুপ্রিম কোর্টে লিখিত পেশ
চাকরিহারাদের আপত্তি
অযোগ্যদের তালিকা আদালতে জমা পড়ার পর চাকরিহারা শিক্ষকদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তাঁদের আইনজীবীদের দাবি, এই প্রক্রিয়ার ফলে তাঁদের আবারও বঞ্চিত হতে হচ্ছে। আদালত জানিয়েছে, চাকরিহারাদের আপত্তির বিষয়টি শোনা হবে। বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী জানিয়েছেন, আগামী ২৯ অক্টোবর দুপুর দুটোয় এই মামলার পরবর্তী শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
যোগ্য-অযোগ্য বিতর্ক
এর আগে এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলাতেও একই ধরনের যোগ্য-অযোগ্য প্রসঙ্গ উঠে এসেছিল। আদালত প্রশ্ন তুলেছিল, কারা বিশেষ সুবিধা পেয়েছেন আর কারা পাননি। গত অগাস্ট মাসে হাইকোর্টে শুনানির সময় ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের একাংশের আইনজীবীরা দাবি করেছিলেন, তাঁদের ক্লায়েন্টরা কোনও বিশেষ সুবিধা পাননি। কিন্তু নতুন চার্জশিটে উঠে এসেছে একাধিক ‘র্যাঙ্ক জাম্প’ এবং মেধা তালিকা উপেক্ষা করে নিয়োগের প্রমাণ। আরো খবর পড়ুন , ভোটার আগে বাম শিবিরে বড়ো ধাক্কা
ডিপিএসসি নাকি সিলেকশন কমিটি?
আদালতের পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে আরেকটি গুরুতর প্রশ্ন—প্রাথমিকের নিয়োগপত্র দিয়েছে ডিপিএসসি (DPSC) না সিলেকশন কমিটি? কারণ, আইন অনুযায়ী জেলাভিত্তিক ডিপিএসসি নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে। তবে, নিয়োগের সময় কার্যকরী ডিপিএসসির অস্তিত্ব ছিল কিনা, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে আদালত। একক বেঞ্চ পূর্ব মেদিনীপুর সংক্রান্ত একটি মামলায় সম্প্রতি জানিয়েছিল, ডিপিএসসির মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল।
- মামলার নাম: পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক টেট নিয়োগ দুর্নীতি মামলা
- প্রধান বিচারপতি: তপোব্রত চক্রবর্তী
- তদন্ত সংস্থা: সিবিআই
- পরবর্তী শুনানি: ২৯ অক্টোবর ২০২৫, দুপুর ২টা
- মামলাকারীদের আইনজীবী: বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য
বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যের সওয়াল
মামলার প্রধান আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য আদালতে স্পষ্টভাবে জানান, শুধুমাত্র টাকার লেনদেন নয়, মেধা তালিকা ভাঙচুর করাও দুর্নীতি। তাঁর বক্তব্যে উঠে এসেছে, বোর্ড সিলেকশন কমিটি গঠন করলেও সেটি কার্যত অদৃশ্য হয়ে গিয়েছে। বোর্ড নিজস্ব নিয়মই অনুসরণ করেনি। যদি একজনও ‘মেরিট জাম্পিং’-এর ঘটনা ঘটে, তবে সেটি আদালতের সামনে আনা জরুরি।
আদালতের পর্যবেক্ষণ
বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চ পর্যবেক্ষণ করে জানিয়েছে, কেন্দ্রীয়ভাবে যদি ডিপিএসসিগুলির ক্ষমতা প্রাথমিক বোর্ড নিজের হাতে নিয়ে নেয়, তবে নিয়োগপত্র জারি করেছে সিলেকশন কমিটি, ডিপিএসসি নয়। এর ফলে নিয়োগ প্রক্রিয়ার বৈধতা নিয়েই নতুন প্রশ্ন উঠেছে। আদালত মনে করছে, পাবলিক এমপ্লয়মেন্ট সংক্রান্ত যেকোনও প্রক্রিয়ায় আরও বেশি দায়বদ্ধতা থাকা প্রয়োজন।
আগামী দিনের গুরুত্ব
প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলার এই নতুন মোড় নিঃসন্দেহে রাজ্য রাজনীতিতেও বড় প্রভাব ফেলতে চলেছে। ইতিমধ্যেই চাকরিহারা শিক্ষকদের একাংশ নতুন করে আন্দোলনের পথে নামতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তাঁদের দাবি, দুর্নীতির শিকার হয়ে তাঁরা চাকরি হারিয়েছেন। এখন যদি আদালত আবারও নিয়োগ তালিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলে, তবে ভবিষ্যৎ আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।
অন্যদিকে, সিবিআই চার্জশিটে উল্লেখিত তথ্যে পরিষ্কারভাবে দেখা যাচ্ছে, একাধিক অযোগ্য প্রার্থী মেধার বাইরে গিয়ে চাকরি পেয়েছেন। এই তালিকা আদালতে পেশ হওয়ার ফলে অনেক নতুন তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে।
উপসংহার
সবমিলিয়ে, পশ্চিমবঙ্গের বহুল আলোচিত প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলা আবারও নয়া মোড় নিল। অযোগ্য প্রার্থীদের তালিকা জমা পড়ায় মামলার জটিলতা আরও বেড়েছে। আদালতের পর্যবেক্ষণ, আইনজীবীদের সওয়াল এবং সিবিআই-এর চার্জশিট মিলিয়ে আগামী শুনানি (২৯ অক্টোবর) মামলার ভবিষ্যৎ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে। রাজ্যের হাজার হাজার চাকরিহারা প্রার্থীর চোখ এখন আদালতের রায়ের দিকেই।
📢 সবার আগে নিউজ আপডেট পেতে আমাদের ফলো করুন
📰 রাজনীতি | ⚽ খেলা | 🎬 বিনোদন | 🌍 আন্তর্জাতিক খবর 👉 সবকিছু এক ক্লিকেই পান আপনার হাতে।
👍 ফলো করুন Facebook 💬 Join করুন WhatsApp গ্রুপে
No comments:
আপনার মতামত এর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ 👇
👉 যদি মনে হয় বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ, পোস্টটি শেয়ার করুন 🔄নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন