চেতলা অগ্রণীর পুজো মণ্ডপে অগ্নিকাণ্ড, আতঙ্কে দর্শনার্থীরা
চেতলা অগ্রণীর পুজো মণ্ডপে অগ্নিকাণ্ড, আতঙ্কে দর্শনার্থীরা
কলকাতার অন্যতম আকর্ষণ চেতলা অগ্রণী ক্লাবের দুর্গাপুজো এবারে যেন এক ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে পড়ল। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হঠাৎ করেই পুজো মণ্ডপে আগুন লেগে যায়। ঘটনাস্থলে মুহূর্তের মধ্যে ছুটে আসে দমকলের দুটি ইঞ্জিন। তড়িঘড়ি আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হলেও আতঙ্ক ছড়ায় উপস্থিত দর্শনার্থী ও পুজো উদ্যোক্তাদের মধ্যে।
“এক অভূতপূর্ব দুর্ঘটনার কারণে আমাদের চেতলা অগ্রণী ক্লাব প্যান্ডেল আজ ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখ বন্ধ থাকবে। ভক্ত ও দর্শনার্থীদের জন্য এটি কখন খোলা হবে, তা আমরা শীঘ্রই জানিয়ে দেব। এই অসুবিধার জন্য আমরা দুঃখিত।” — পুজো উদ্যোক্তাদের অফিসিয়াল বিবৃতি।
চেতলা অগ্রণীর এই পুজোকে প্রতি বছরই আলাদা গুরুত্ব দেওয়া হয়। কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের (ববি হাকিম) ব্যক্তিগত পুজো হিসেবেই এটি পরিচিত। প্রতিদিন সকাল-বিকেল হাজার হাজার দর্শনার্থী ভিড় জমান এই মণ্ডপে। এ বছরও পুজোর থিম হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছিল “অমৃতকুম্ভের সন্ধানে”। প্রয়াত সাহিত্যিক সমরেশ বসুর জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে এই বিশেষ শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করা হয়েছিল। রুদ্রাক্ষ দিয়ে সাজানো এই মণ্ডপ ইতিমধ্যেই মানুষের নজর কেড়েছিল।
মহালয়ার দিনেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে প্রতিমায় চক্ষুদান করেন। বুধবার থেকেই দর্শনার্থীদের জন্য মণ্ডপ খোলা হয়েছিল। কিন্তু তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ঘটে গেল এই অগ্নিকাণ্ড। যদিও দমকল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে, তবে কীভাবে আগুন লাগল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তদন্ত শুরু করেছে দমকল ও পুলিশ।
বৃষ্টি ও দুর্ঘটনায় চিন্তায় পুজো উদ্যোক্তারা
প্রসঙ্গত, এ বছরের দুর্গাপুজোয় আবহাওয়া একাধিক চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে। গত সোমবারের প্রবল বৃষ্টিতে বহু পুজো প্যান্ডেলে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কোথাও মণ্ডপ ডুবে গিয়েছে জলে, কোথাও আবার সাজসজ্জা ভিজে নষ্ট হয়েছে। চেতলা অগ্রণীর ক্ষেত্রেও এই বিপর্যয় নতুন উদ্বেগ যোগ করল। উদ্যোক্তাদের আশঙ্কা, পুজোর বাকি দিনগুলোতেও আবহাওয়ার অস্থিরতা দর্শনার্থীর সংখ্যা কমিয়ে দিতে পারে।
তৃতীয়া থেকেই মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন রাস্তায়, প্যান্ডেল হপিং-এ। তবে আবহাওয়ার চোখরাঙানি এখনও শঙ্কা তৈরি করছে। সকালের রোদ ঝলমলে আকাশ সন্ধ্যা নামতেই মেঘলা হয়ে উঠছে। ঝিরঝিরে বৃষ্টির মধ্যেও মানুষকে ভিজে ভিজে বের হতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে পুজো উদ্যোক্তাদের রাতের ঘুম উধাও।
দক্ষিণ কলকাতার হোটেলেও অগ্নিকাণ্ড
এদিকে একই দিনে আরেকটি অগ্নিকাণ্ড ঘটে দক্ষিণ কলকাতার প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডে। দুপুরে একটি হোটেলে হঠাৎ আগুন লেগে যায়। মুহূর্তে দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে হোটেলের উপরের অংশ। আতঙ্ক ছড়ালেও ভেতরে থাকা অতিথি ও কর্মীদের দ্রুত নিরাপদে সরিয়ে আনা হয়। খবর দেওয়া হয় দমকলকে।
দমকলের চারটি ইঞ্জিন দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। কীভাবে আগুন লেগেছিল, তা এখনও জানা যায়নি। দমকলের প্রাথমিক অনুমান, শর্টসার্কিট থেকেই আগুন লেগে থাকতে পারে। তবে নিশ্চিত হতে তদন্ত শুরু হয়েছে।
সূত্রের খবর, ওই হোটেলে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ঠিকঠাক ছিল কি না, ফায়ার লাইসেন্স বৈধ ছিল কি না—সব দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গাফিলতি প্রমাণিত হলে হোটেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যদিও এ নিয়ে প্রশাসন, পুলিশ বা দমকলের পক্ষ থেকে এখনও কোনও আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করা হয়নি।
দর্শনার্থীদের নিরাপত্তাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ
চেতলা অগ্রণী হোক বা দক্ষিণ কলকাতার হোটেল—পরপর দু’টি অগ্নিকাণ্ডই শহরবাসীকে শঙ্কিত করে তুলেছে। দুর্গাপুজোর মতো বিশাল আয়োজনের সময়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করার দাবি উঠছে। পুজো উদ্যোক্তা, প্রশাসন ও সাধারণ মানুষ এখন একটাই প্রশ্ন করছেন—“আগুন থেকে কতটা সুরক্ষিত আমরা?”
📢 সবার আগে নিউজ আপডেট পেতে আমাদের ফলো করুন
📰 রাজনীতি | ⚽ খেলা | 🎬 বিনোদন | 🌍 আন্তর্জাতিক খবর 👉 সবকিছু এক ক্লিকেই পান আপনার হাতে।
👍 ফলো করুন Facebook 💬 Join করুন WhatsApp গ্রুপে
No comments:
আপনার মতামত এর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ 👇
👉 যদি মনে হয় বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ, পোস্টটি শেয়ার করুন 🔄নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন