সাওয়ালকোট (চন্দ্রভাগা) বাঁধ: কেন্দ্র ফের তৎপর — ১,৮৬৫ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে পরিবেশ কমিটির বৈঠক
সাওয়ালকোট (চন্দ্রভাগা) বাঁধ: কেন্দ্র ফের তৎপর — ১,৮৬৫ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে পরিবেশ কমিটির বৈঠক

নয়াদিল্লি ফের সাওয়ালকোট (Sawalkote/Sawalkot) শহরের নিকটবর্তী চন্দ্রভাগা নদীর তীরে পরিকল্পিত বড় বাঁধ ও ১,৮৬৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার জলবিদ্যুৎ প্রকল্পকে (hydropower project) এগিয়ে নিতে তৎপর হয়েছেন—বিশেষত তখন থেকে, যখন ইন্ডাস/সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি (Indus Waters Treaty) ভারত কর্তৃক স্থগিত রাখা হয়েছে। কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রকের অধীনে থাকা বিশেষজ্ঞ কমিটি এই সপ্তাহেই ঐ প্রকল্প সম্পর্কিত পরিবেশ ছাড়পত্র ও আনুষঙ্গিক বিষয়াদি নিয়ে বৈঠকে বসার কথা বলে সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছে।
- প্রস্তাবিত প্রকল্প ক্ষমতা: প্রায় ১,৮৬৫ মেগাওয়াট (রিপোর্টভিত্তিক)।
- নদী: চন্দ্রভাগা — যা সিন্ধু সিস্টেমের পশ্চিম তীরের উপনদী হিসেবে গণ্য।
- পটভূমি: ইন্ডাস জলচুক্তি (১৯৬০) অনুসারে চুক্তিভিত্তিক নিয়ম রয়েছে—তবে চুক্তি স্থগিত রাখায় নয়াদিল্লি এখন প্রকল্প ত্বরান্বিত করার পথে।
সাওয়ালকোটে এই ধরনের একটি বড় জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রস্তাব আসছে দীর্ঘদিন ধরেই—প্রথম পরিকল্পনা রাখা হয়েছিল ১৯৬০-এর দশকে; পরে ১৯৮৪ সালে কেন্দ্রীয় পর্যায়ে বিষয়টি উঠে আসে, কিন্তু রাজ্য-কেন্দ্র দ্বন্দ্ব, পরিবেশ ও কূটনৈতিক বাধা–আপত্তি ইত্যাদির কারণে তা বাস্তবায়িত হয়নি।
রिपোর্টগুলো বলছে, পরিবেশ মন্ত্রকের বন উপদেষ্টা কমিটির (forest advisory committee) ছাড়পত্রও প্রয়োজনীয়—এবং বিদ্যুৎ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অনুরোধে ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট নথি বা চিঠিপত্র পরিবেশ দফতরে পাঠানো হয়েছে। কেন্দ্রীয় সূত্রে জানা গেছে যে, প্রকল্পের পরিবেশগত প্রভাব, জলবায়ু ও স্থানীয় বাস্তুতন্ত্রের প্রভাব এবং সীমান্ত-ভিত্তিক কূটনৈতিক বিবেচ্য বিষয়গুলি বিশেষজ্ঞ কমিটিতে ত্বরান্বিতভাবে আলোচিত হবে।
ইন্ডাস/সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি (Indus Waters Treaty) অনুযায়ী সিন্ধু নদ ও তার পশ্চিম তীরের উপনদীগুলোর বড় অংশ জড়িত থাকার কারণে পাকবিভাগীয় পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ ও কাগজপত্র আদান–প্রদান করার নিয়ম আছে—নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ার ৬ মাস পূর্বে অন্য পক্ষকে জানাতে হয়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে চুক্তি স্থগিত থাকায় নয়াদিল্লির পোস্টার–স্ট্র্যাটেজি ভিন্ন রকমের হয়েছে।
পশ্চিমের প্রতিবেশী পাকিস্তান ইতিমধ্যেই কঠোর কণ্ঠে সতর্ক করে দিয়েছে—প্রস্তাবিত বাঁধ যদি তাদের ভাগের জল সংরক্ষণে বা ফিরিয়ে দেওয়ায় প্রভাব ফেলে, তা চুক্তি লঙ্ঘন হিসেবে গণ্য হবে এবং "প্রয়োজনে" তাঁদের প্রতিক্রিয়া থাকতে পারে বলে তারা জানিয়েছে। পাকিস্তানি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও সামরিক নেতৃত্ব এই বিষয়ে হুমকিও উচ্চারণ করেছেন—এমনকি পাওয়া খবর অনুযায়ী কিছু সময় এ ধরনের মন্তব্যে ক্ষেপণাস্ত্র-হুমকিরও উল্লেখ পাওয়া গেছে।
- ভারত সাম্প্রতিক সীমানা ও নিরাপত্তা ঘটনাবলীর (উদাহরণ: পাহালগাঁও মোকাবিলা/হত্যাকাণ্ডের পর) প্রেক্ষিতে ইন্ডাস চুক্তি স্থগিত করেছে।
- পাকিস্তান বলেছে—যদি ভারত তাদের অংশের জল আটকানোর চেষ্টা করে, তা 'চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন' হিসেবে দেখা হবে এবং প্রতিক্রিয়া হতে পারে।
- এমন হুমকি–প্রতিবাদ সত্ত্বেও নয়াদিল্লি প্রশস্তভাবে জম্মু ও কাশ্মীরের জলসম্পদকে কাজে লাগানোর পরিকল্পনায় এগোচ্ছে বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে এটি ভারতের দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি উত্তর-ভারতের যথেষ্ট বিদ্যুৎ সরবরাহে সহায়ক হবে—কিন্তু এর সঙ্গে জড়িত পরিবেশগত, সামাজিক (স্থানীয় বাসিন্দাদের স্থানান্তর/পুনর্বাসন), এবং আন্তঃরাষ্ট্রীয় কূটনৈতিক ঝুঁকিও বড়। কেন্দ্রীয় পর্যায়ে দ্রুত অগ্রগতি হলে আন্তর্জাতিক-আইনি চ্যালেঞ্জ বা বিপরীত প্রতিক্রিয়ার সম্ভাবনা উভয়ই বেড়ে যাবে।
এই মুহূর্তে প্রকল্প সংক্রান্ত পরিবেশ ছাড়পত্র, বন পরামর্শ, এবং আন্তর্জাতিক জানানো/অবহিতকরণ প্রক্রিয়া—এসব বিষয় নিরপেক্ষভাবে সারে–নিচে আসলে প্রকল্পের বাস্তব রূপ কবে নিতে পারে তাতে স্পষ্ট ধারণা মিলবে।
নোট: এই প্রতিবেদনটি বিভিন্ন গণমাধ্যম রিপোর্ট এবং সরকারি সূত্রের প্রকাশিত বিবরণ থেকে সংকলিত—প্রকল্প সংক্রান্ত আনুষ্ঠানিক নথি বা মন্ত্রিসভা সায় না আসা পর্যন্ত পরিস্থিতি পরিবর্তনশীল থাকতে পারে।
No comments:
আপনার মতামত এর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ 👇
👉 যদি মনে হয় বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ, পোস্টটি শেয়ার করুন 🔄নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন