মাটিয়ালিতে ১১টি পরিবার তৃণমূলে যোগ — ডুয়ার্সে তৃণমূলের শক্তি বৃদ্ধিতে নতুন ধাক্কা
দুই দল ছেড়ে তৃণমূলে যোগ — মাটিয়ালিতে ১১টি পরিবার, ডুয়ার্সে তৃণমূলের শক্তি বাড়ল

মাটিয়ালি ব্লকের বিধাননগর গ্রাম পঞ্চায়েতের মুন্সীধূরা এলাকায় রবিবার রাতের এক সরল কিন্তু রাজনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ অনুষ্ঠানে ১১টি পরিবার তৃণমূলে যোগদান করেছেন। ওই পরিবারগুলো ছিল বিভিন্ন সময়ে সিপিআইএম এবং বিজেপির তালিকাভুক্ত—কিন্তু স্থানীয় মনোমালিন্য ও রাজনৈতিক অস্থিরতার পর তারা আবার তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরে আসলেন। স্থানীয় তৃণমূল নেতারা এটিকে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে ডুয়ার্সে দলের শক্তি বাড়ানোর সূচনা বলে উল্লেখ করেছেন। আরও খবর পড়ুন, নেপালের প্রাক্তন প্রধান মন্ত্রী কে গ্রেপ্তার এর দাবি জোরালো হচ্ছে
- স্থান: মুন্সীধূরা, বিধাননগর গ্রাম পঞ্চায়েত, মাটিয়ালি ব্লক
- যোগদানকারী: ১১টি পরিবার (প্রায় ৪০ জন)
- কোন দল ছেড়েছেন: সিপিআইএম ও বিজেপি
- তথ্যসূত্র: স্থানীয় তৃণমূল নেতৃবৃন্দ, যোগদানকারীদের বক্তব্য
যোগদান অনুষ্ঠানে জেলা পরিষদের সদস্য রেজাউল বাকী, মাটিয়ালি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হাসান হাবিবুল হোসেন এবং ব্লক তৃণমূলের স্মোমিতা কালান্দি উপস্থিত ছিলেন। স্মোমিতা কালান্দি যোগদানকারীদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দিলে উপস্থিত মনোরম চিত্রের সৃষ্টি হয়। যোগদানকারীরা জানান যে তারা পূর্বে তৃণমূলে ছিলেন, পরে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক মতানৈক্যের কারণে অন্য দলে চলে যান; এখন নিজেদের ভুল বুঝে তারা ফিরে এসেছেন।
"আমরা নিজেদের ভুল বুঝেছি। স্থানীয় সমস্যার সঠিক সমাধান ও জনসেবার প্রতিশ্রুতির কারণে আমরা আবার তৃণমূলে যোগ দিলাম,"— একটি যোগদানকারী পরিবারে প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তি জানান।
স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, যদিও ১১টি পরিবার সংখ্যায় বড় না, তবুও প্রতীকী দিক থেকে এ ধরনের যোগদান দলের আঞ্চলিক প্রভাব বৃদ্ধির দিক নির্দেশ করে। মাটিয়ালি ও তার আশেপাশের এলাকায় দলগুলি—বিশেষত সিপিআইএম এবং বিজেপি—সংকটকালীন সময়ে ভোট ব্যাংক হারাতে পারে। এই প্রেক্ষাপটে তৃণমূলের সংগঠিত ভ্রামণ এবং পুনরায় ভিত্তি জোরদার করার প্রচেষ্টা স্পষ্টভাবে চোখে পড়ে। আরও খবর পড়ুন , আগামী লোকসভা নির্বাচনে কোন ভ্যাকান্সি নাই
স্মোমিতা কালান্দি সংবাদদাতাদের বলেন, "২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে প্রত্যেকটি বুথ শক্তিশালী করা হবে। সোমবার ১১টি পরিবার যোগ দিল—এটি একটি অসম্পূর্ণ শুরু; আগামী দিনে আরও যোগদান হবে। আমাদের লক্ষ্য হলো জনগণের মাঝেই দাঁড়িয়ে তাদের সমস্যার সমাধান নিশ্চিত করা।" তাঁর বক্তব্যে স্থানীয় কাদেরা¬দের প্রতি দলীয় কাজ বাড়ানোর ইঙ্গিত রয়েছে।
অন্যদিকে, সিপিআইএম ও বিজেপি’র স্থানীয় নেতৃত্ব এই ঘটনার গুরুত্ব কমিয়ে দিয়েছেন। সিপিআইএমের এক স্থানীয় নেতা বলেন, "মানবিক ও পারিবারিক কারণে কখনো কখনো মানুষ দল পরিবর্তন করে। এটা স্থায়ী প্রভাব সৃষ্টি করবে—এমনটি মনে করি না।" বিজেপির স্থানীয় সুত্রও এক্ষেত্রে মৃদু প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছেন, "স্থানীয় ক্ষেত্রে পারফর্মেন্সের ভিত্তিতেই মানুষ সিদ্ধান্ত নেয়; আমরা আমাদের সংগঠনকে শক্তিশালী করব।"
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, ডুয়ার্স অঞ্চল—যেখানে জাতিগত-পশ্চিমবঙ্গীয় স্বাতন্ত্র্য, অভিবাসী কর্মীবাহিনী ও ঝুঁকিপূর্ণ অর্থনৈতিক কাঠামোর কারণে রাজনীতিতে জটিলতা বিদ্যমান—সেখানে প্রতিটি ছোট মিড-সাইজ রাজনীতিক পরিবর্তনও বড় ইস্যুতে পরিণত হতে পারে। ২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনে যে কাউন্টি বা ব্লকগুলোর ফলাফল ঘুরি বড়—তাই দলেরা ক্ষুদ্র অংকের জয়-হারে নিজেদের কৌশল গঠন করে থাকেন।
- স্থানীয় স্তরে তৃণমূলের সংগঠন শক্তিশালী হতে পারে।
- ভোটব্যাঙ্কে সামান্য কিন্তু লক্ষণীয় পরিবর্তন ঘটতে পারে—বিশেষত মুন্সীধূরা ও আশেপাশের অঞ্চলে।
- প্রতিদ্বন্দ্বী দলেরা তাদের স্ট্র্যাটেজি পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য হবে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, যোগদানের পিছনে মূল অনুযোগ ছিল—পূর্বের দলের মধ্যে স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সম্পর্ক, কাজের গতি ও সুবিধা বণ্টনে অনভিপ্রেত ব্যর্থতা। একজন প্রতিবেশী বলেন, "যেখানে আমাদের সমস্যার সমাধান দ্রুত হয় না, সেখানে মানুষ পরিবর্তিত সুবিধা খোঁজে। যদি নতুন যোগদানের পরে উন্নতি দেখা দেয় তবে সেটাই গণতান্ত্রিক সিদ্ধান্তের বাস্তব ফল।"
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সিনিয়র সাংবাদিকরা বলছেন, ১১টি পরিবারের এই সিদ্ধান্তকে অনাবশ্যকভাবে একটি বড় রাজনৈতিক ইতিহাসে ফেললে ভুল হবে; তবে প্রতীকীভাবে এটি তৃণমূল কংগ্রেসের আঞ্চলিক কূটনীতির সফলতা বলে ধরা যায়। ২০২৬ বিধানসভায় যেখানে প্রতিটি আসনই গুরুত্বপূর্ণ, সেখানে স্থানীয় মনস্তত্ত্ব নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য দলগুলো এখনই মাঠে সক্রিয় হচ্ছে।
জেলা পর্যায়ের নেতারা বলছেন যে তারা আগামী কয়েক সপ্তাহে আরো প্রথাগত রাজনৈতিক কর্মসূচি ও জনসেবামূলক উদ্যোগ চালাবে—যার মধ্যে রয়েছে স্বাস্থ্য শিবির, বিনামূল্যে আইনগত পরামর্শ ক্যাম্প ও শিক্ষা সহায়তা। এই ধরনের উদ্যোগ স্থানীয় স্তরে দলের গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে সাহায্য করে বলে তারা আশাবাদী।
সমাপ্তিতে, মাটিয়ালির মুন্সীধূরা এলাকায় ১১টি পরিবারের তৃণমূলে পুনরায় যোগদান একটি স্থানীয় রাজনৈতিক ঘটনা হলেও এর প্রতীকী গুরুত্ব আছে—বিশেষত ২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক-পরিবেশে। স্থানীয় প্রতিক্রিয়া, দলগুলোর কৌশল বদল এবং ভবিষ্যৎ যোগদানের সম্ভাব্যতাকে ধরে রেখে রাজনীতির ছোট ছোট ঢেউগুলো পরের কয়েক মাসে বড় আকার ধারণ করতে পারে।
📢 সবার আগে নিউজ আপডেট পেতে আমাদের ফলো করুন
📰 রাজনীতি | ⚽ খেলা | 🎬 বিনোদন | 🌍 আন্তর্জাতিক খবর 👉 সবকিছু এক ক্লিকেই পান আপনার হাতে।
👍 ফলো করুন Facebook 💬 Join করুন WhatsApp গ্রুপে
No comments:
আপনার মতামত এর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ 👇
👉 যদি মনে হয় বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ, পোস্টটি শেয়ার করুন 🔄নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন