কলকাতা হাইকোর্ট কড়া – রায়গঞ্জ পুরসারের ৮০ লক্ষ টাকার বকেয়া, অর্থসচিব ও নগরোন্নয়ন দফতের বিরুদ্ধে রুল
কলকাতা হাইকোর্ট কড়া পদক্ষেপ: রায়গঞ্জ পুরসভার ঠিকাদারদের ৮০ লক্ষ টাকার বকেয়া মেটাতে নির্দেশ মানা হয়নি — অর্থসচিব ও নগরোন্নয়ন দফতের বিরুদ্ধে রুল জারি
কলকাতা হাইকোর্টের দিলোপকারী ডিভিশন বেঞ্চ — বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা ও বিচারপতি অজয় কুমারের নেতৃত্বে — রায়গঞ্জ পুরসভার থেকে প্রায় দেড় দশক ধরে বকেয়া থাকা ৮০ লক্ষ টাকার পেমেন্ট না দেওয়ার ঘটনাকে যথেষ্ট নিন্দনীয় বলে বিবেচনা করে রাজ্যের অর্থসচিব ও নগরোন্নয়ন দফতের সচিবের বিরুদ্ধে রুল (Rule) জারি করেছেন। আদালত স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, পূর্বসূরী বিভিন্ন নির্দেশের পরও যদি বকেয়া মিটে না থাকে, তাহলে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঘটনাপ্রবাহ — এক নজরে
- ২০১০ সালে রায়গঞ্জ পুরসভার টেন্ডারে কয়েকজন ঠিকাদার কাজ করে, যার মূল্য মোট প্রায় ৮০ লক্ষ টাকা বলে অভিযোগ।
- ঠিকাদাররা দাবি করেছেন— দীর্ঘদিন ধরে পারিশ্রমিক মেলেনি।
- হাইকোর্ট পূর্বেও একাধিক নির্দেশ দিয়েছিল বকেয়া মেটাতে; সর্বশেষ নির্দেশ ছিল ১৪ জুলাই ২০২৫ তারিখে।
- সেই নির্দেশ অমান্য হওয়ায় শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫) ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যের অর্থসচিব ও নগরোন্নয়ন দফতের সচিবের বিরুদ্ধে রুল জারি করে।
- পরবর্তী শুনানি ধার্য করা হয়েছে ৩ নভেম্বর ২০২৫-এ।
আদালতের মন্তব্য ও নির্দেশনার গুরুত্ব
আদালত কেবল অভিযোগ শুনেই সঙ্কটের মাত্রা নির্দেশ করেননি — বরং প্রশাসনিক জবাবদিহিতার গুরুত্বও উথ্পন্ন করেছেন। হাইকোর্টের টোন স্পষ্ট: সাধারণ ঠিকাদার-ব্যবসায়ী মানুষের রোজগার ও বেসরকারি চুক্তির সম্মান বজায় রাখতে রাজ্য প্রশাসনের কাছে দায়িত্ব রয়েছে। আদালত মনে করিয়েছেন যে, আইনি নির্দেশনার যথাযথ কার্যকরী না হলে তা বিচারিক বিবেচ্য বিষয়গুলোর ওপর নেতিবাচক বার্তা দেয় এবং নাগরিকদের মধ্যে অধিকারহীনতার অনুভূতি সৃষ্টি করে।
ঠিকাদারদের দুর্দশা — জবাবদিহিতা ও মানবিক দৃষ্টিকোণ
কন্ট্রাক্ট-পেমেন্ট বাকি থাকলে ক্ষতিগ্রস্ত ঠিকাদারদের শুধুই আর্থিক ক্ষতি হয় না; শ্রমিকদের মজুরি, উপকরণ ক্রয়, পরিবার ও দৈনন্দিন জীবনের প্রভাব পড়ে। ব্যবসা ছোট হলেও অর্থপ্রবাহ বন্ধ হয়ে গেলে চেইনের মতো অন্যান্য ক্ষতিও তৈরি হয়। আইনগত পথে চললেও কার্যকরী প্রশাসনিক ব্যর্থতা জনজীবনে বাস্তব প্রতিকূলতা তৈরি করে। এই প্রসঙ্গে হাইকোর্টের কড়া নির্দেশ প্রশাসনের কাছে এক কঠোর সতর্কবাণী হিসেবেও দেখা হচ্ছে।
রাজ্য প্রশাসনের দায়িত্ব — কী কি পদক্ষেপ প্রত্যাশিত?
আদালত রুল জারির মাধ্যমে যে কর্তাদের তলব করেছে — অর্থসচিব এবং নগরোন্নয়ন দফতের সচিব — তাদের কাছে কিছু সুস্পষ্ট প্রশ্ন উঠে আসবে: কেন আদালতের আগের নির্দেশ কার্যকর করা হয়নি? টাকার উৎস যোগ করা না গেলে কী ধরনের আর্থিক কিংবা প্রশাসনিক ত্রুটি কাজ করেছে? এই প্রশ্নগুলোর উত্তরদানে রাজ্যের কাছেেতিগুলি ব্যাখ্যা-সহ দিতে হবে। উপযুক্ত মিলানো হলে দ্রুতই বকেয়া মিটানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করাই হবে সমাধানের পথ।
আইনি পরবর্তী ধাপ — কি ঘটতে পারে ৩ নভেম্বর?
৩ নভেম্বরের শুনানিতে আদালত যদি দেখেন যে নির্দেশ কার্যকর হয়নি, তবে আরো কঠোর বিন্যাস নেওয়া হতে পারে — শাস্তিমূলক ব্যাবস্থা, প্রশাসনিক নির্দেশ (e.g., অন্যান্য উচ্চতর কর্মকর্তা বা মন্ত্রকের হস্তক্ষেপ), অথবা ফাইন্যান্সিয়াল অডিট/রিভিউ আদেশ— এমন সিদ্ধান্ত আসতে পারে। বিচারপতি পরিষেবা মূলক বিষয় হওয়ায় রাজ্য প্রশাসনের ক্ষেত্রেও দায়িত্ব আরোপ করা সম্ভব। পাশাপাশি ঠিকাদার পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণ দাবি করলে তা বিচারিক প্রক্রিয়ায় যোগ হতে পারে।
স্থানীয় প্রতিক্রিয়া ও সামাজিক প্রভাব
রায়গঞ্জ ও আশেপাশের এলাকায় ঠিকাদার ও শ্রমিকদের মধ্যে উদ্বেগ রয়েছে। সামাজিক মাধ্যম ও স্থানীয় রাজনৈতিক মহলেও বিষয়টি তীব্র আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে— জনশুন্য প্রশাসন ও ন্যায্যতা প্রশ্নও ঘিরে সমালোচনা বেড়েছে। একই সঙ্গে নাগরিকদের মধ্যে সরকারি প্রকল্পে স্বচ্ছতা ও সময়মত পরিশোধের দাবিও জোরদার হচ্ছে।
সংক্ষিপ্ত টিপস: ঠিকাদার বা ক্ষতিগ্রস্ত হলে কী করবেন?
- প্রতিটি কনট্রাক্ট ও পেমেন্ট রেকর্ড সংরক্ষণ করুন (চুক্তি কপি, চালান, ই-মেইল)।
- প্রশাসনিক স্তরে লিখিত নোটিশ পাঠান এবং প্রাপ্তির প্রমাণ রাখুন।
- আইনি পরামর্শ নিয়ে আদালতে প্রয়োজনীয় পিটিশন করুন — বিশেষত যদি নির্দেশ অমান্য করা হয়।
- স্থানীয় প্রতিনিধিদের (পঞ্চায়েত/কেন্দ্রীয়/রাজ্যস্তর) কাছে সমস্যার কথা জানান— লেবার বা বিজনেস সংঘের সমর্থন নিন।
📢 সবার আগে নিউজ আপডেট পেতে আমাদের ফলো করুন
📰 রাজনীতি | ⚽ খেলা | 🎬 বিনোদন | 🌍 আন্তর্জাতিক খবর 👉 সবকিছু এক ক্লিকেই পান আপনার হাতে।
👍 ফলো করুন Facebook 💬 Join করুন WhatsApp গ্রুপে
No comments:
আপনার মতামত এর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ 👇
👉 যদি মনে হয় বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ, পোস্টটি শেয়ার করুন 🔄নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন