নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে নিষ্ক্রিয় দলগুলির স্বীকৃতি বাতিল — '৮০৮' দল ডিলিস্ট; মানে কি, প্রভাব কোথায়
নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে নিষ্ক্রিয় দলগুলির স্বীকৃতি বাতিল — কেন, কীভাবে ও প্রভাব?
তाजा সিদ্ধান্তে নির্বাচন কমিশন (EC) দু' ধাপে মোট ৮০৮টি Registered Unrecognised Political Parties (RUPPs) নিবন্ধন তালিকা থেকে বাতিল করেছে — প্রথম ধাপে ৯ আগস্টে ৩৩৪টি দল এবং দ্বিতীয় ধাপে ১৮ সেপ্টেম্বরে আরও ৪৭৪টি দল ডিলিস্ট করা হয়েছে। ফলে বহু কর-ছাড়, প্রতীক ও প্রশাসনিক সুবিধা হারানো নিয়ে নতুন বাস্তবতা তৈরি হচ্ছে। 1

আইনি ভিত্তি — কোন ধারা বলেছে কী?
Registered Political Parties ভারতীয় Representation of the People Act, 1951-এর অধীনে নিবন্ধিত হয়; বিশেষত Section 29A (এবং প্রাসঙ্গিক নিয়মাবলি) এর আওতায় নিবন্ধন দেওয়া হয়। আইনটি পরিষ্কারভাবে বলে যে, নিবন্ধিত পার্টি যদি ধারাবাহিকভাবে ছয় বছর ধরে নির্বাচনে অংশ না নেয় বা নির্ধারিত শর্ত পূরণে ব্যর্থ হয়, তাহলে কমিশন তাদের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করতে পারে — এবং এর ফলে উল্লেখযোগ্য সুবিধা (যেমন কর-ছাড়, নির্বাচনী প্রতীক ইত্যাদি) বন্ধ হয়ে যায়। সরকারি বিবৃতিতেও এই আইনি ভিত্তি উল্লিখিত হয়েছে। 2
কেন এই 'ক্লিনআপ' চললো — কমিশনের যুক্তি
- রাজনৈতিক রেজিষ্ট্রিতে দীর্ঘসময় ধরে থাকা বহু 'ডরম্যান্ট' দলের অস্তিত্ব সিস্টেমকে জটিল করে — কমিশন এটিকে পরিষ্কার ও স্বচ্ছ করতে চায়। 3
- নিয়ম না মানা, ঠিকানা যাচাই না হওয়া, আর ছয় বছর ধরে কোনও নির্বাচনে অংশ না নেওয়া— এসব কারণ তদন্তের পর ডিলিস্টের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। 4
- এই উদ্যোগে রেজিস্ট্রেশন ব্যবস্থার সঠিক নিয়ন্ত্রণ, কর-ছাড়ের অপব্যবহার রোধ এবং রাজনৈতিক পদ্ধতির স্বচ্ছতা বাড়ানো হচ্ছে বলে দাবি করা হয়েছে। 5
কোন সুবিধাগুলো হারাবে ডিলিস্ট হওয়া দলগুলো?
- নিবন্ধন বাতিল হলে আয়কর সংক্রান্ত বিশেষ সুবিধা (যোগ্য হলে) বন্ধ হতে পারে। 6
- নির্দিষ্ট সরকারি রেকগনিশনের অধিকার—যেমন ইলেকশন কমিশনের নির্দিষ্ট সুবিধা—আর থাকবে না।
- প্রত্যেক দলকে আপিল/প্রতিউত্তর দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়; ৩০ দিন ভেতর আপিলের সুযোগ আছে — এতে যদি তারা বৈধতা প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে চূড়ান্ত ডিলিস্টিং কার্যকর হবে। 7
রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক প্রভাব — বিশ্লেষণ
প্রথমত, ডিলিস্টিং-এ সরাসরি বড় কোনও রাজনৈতিক দল লক্ষ্য হচ্ছে না; প্রধান প্রভাব পড়বে ছোট, অনিয়মিত এবং কার্যত বন্ধ দলগুলোর উপর। তবে কার্যত এটি নির্বাচন ব্যবস্থাকে পরিষ্কার করে—যাতে কাগজে থাকা 'ডামি' দলগুলোর মাধ্যমে কোনও অপব্যবহার বা বিভ্রান্তিকর কৌশল অবলম্বন কঠিন হয়। একই সঙ্গে নিবন্ধনের সংখ্যা কমলে কমিশন ও প্রশাসন যে দলগুলোকে সক্রিয়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবে তাতে শক্তি সঞ্চয় হতে পারে। 8
সম্ভাব্য আর্থিক ও সামাজিক সুবিধা-ক্ষতি
ডিলিস্টকৃত দলগুলো যদি কর-ছাড়ের সুবিধা পেতো, তা বন্ধ হওয়ায় অর্থনৈতিক সুবিধা লোকে হারাবে; তবে ভোট-প্রক্রিয়া ও প্রতীক ব্যবস্থার অপব্যবহার কমায় সামগ্রিক রাজনীতি আরও স্বচ্ছ হতে পারে। নাগরিক কর্মী-ভিত্তিক দলগুলোকে সক্রিয় থাকতে উৎসাহিত করার চাপে বড় দলগুলোর নিয়ন্ত্রণ স্থিতিশীল রাখা সম্ভব।
সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া ও আইনি পথে কী হতে পারে?
- অনেক দল আপিল করবে এবং ৩০ দিনের মধ্যে কমিশনের নোটিফিকেশন চ্যালেঞ্জ করতে পারে — ফলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আইনি লড়াই শুরু হবে। 9
- কয়েকটি দল যথাযথ রাজনৈতিক কার্যক্রম চালিয়ে পুনরায় নিবন্ধিত হওয়ার চেষ্টা করবে—কিন্তু কমিশনের কঠোর যাচাইর উল্লেখ থাকায় সহজ হবে না।
- দীর্ঘ মেয়াদে এটি রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতিকে শক্ত ও জবাবদিহিমূলক করে তুললে নির্বাচন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা বাড়বে—তবে সাময়িক উত্তেজনা বা স্থানীয় রাজনৈতিক ক্ষোভ ও আপত্তি তৈরি হতে পারে।
উপসংহার — সংক্ষিপ্ত বিশ্লেষণ
ইসির এই ধারা-ভিত্তিক ডিলিস্টিং কার্যকরভাবে 'ক্লিনআপ' উদ্যোগ বলে ধরা হচ্ছে — ৯ আগস্টের প্রথম রাউন্ড (৩৩৪ দল) এবং ১৮ সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় রাউন্ড (৪৭৪ দল) মিলে মোট ৮০৮ দল ডিলিস্ট হওয়া দেশের রাজনৈতিক রেজিস্ট্রিক্যাল্যান্ডস্কেপে একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হিসেবে বিবেচিত হবে। দীর্ঘমেয়াদে এটি নির্বাচন ব্যবস্থাকে বেশি জবাবদিহি ও স্বচ্ছ করে তুলতে সহায়ক, কিন্তু আপাতত ডিলিস্টকৃত পক্ষগুলো আইনি চ্যালেঞ্জ ও স্থানীয় প্রভাব–প্রতিক্রিয়ার মুখোমুখি হতে পারে। 10
📢 সবার আগে নিউজ আপডেট পেতে আমাদের ফলো করুন
রাজনীতি • নির্বাচন • স্থানীয় খবর — Y বাংলা ডিজিটাল ব্যুরো
👍 ফলো করুন Facebook 💬 Join WhatsApp
No comments:
আপনার মতামত এর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ 👇
👉 যদি মনে হয় বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ, পোস্টটি শেয়ার করুন 🔄নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন