শ্রমশ্রী’ প্রকল্পে বিভ্রান্তি: পরিযায়ী শ্রমিকদের নথিভুক্তকরণে অনিশ্চয়তা
‘শ্রমশ্রী’ প্রকল্পে বিভ্রান্তি: পরিযায়ী শ্রমিকদের নথিভুক্তকরণে অনিশ্চয়তা
🗓 আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ভিনরাজ্যে কাজ করতে যাওয়া বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা করা ‘শ্রমশ্রী’ প্রকল্প।
বাংলার বহু শ্রমিক জীবিকার সন্ধানে ভিনরাজ্যে পাড়ি দেন। অনেক সময় তাঁরা ভাষাগত কারণে, বিশেষ করে বাংলায় কথা বলার জন্য, নানাভাবে বৈষম্যের শিকার হন। শুধু হেনস্থা নয়, অনেক ক্ষেত্রে শারীরিক ও মানসিক নিপীড়নও তাঁদের সহ্য করতে হয়। এই বাস্তবতা মাথায় রেখে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চালু করেছেন এক নতুন উদ্যোগ—‘শ্রমশ্রী প্রকল্প’।
মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, এই প্রকল্পের মাধ্যমে পরিযায়ী শ্রমিকদের আর্থিক সুরক্ষা দেওয়া হবে এবং তাঁদের বিকল্প রোজগারের সুযোগ তৈরি করা হবে। সরকারি নির্দেশ অনুসারে, প্রতিটি শ্রমিক মাসে ৫ হাজার টাকা অনুদান পাবেন। পাশাপাশি কারিগরি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে, যাতে দীর্ঘমেয়াদে তাঁরা নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে পারেন।
✔️ মাসিক ৫০০০ টাকা সরকারি অনুদান
✔️ কারিগরি প্রশিক্ষণ
✔️ বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ
✔️ অনুদান পাওয়া যাবে বিকল্প রোজগার না হওয়া পর্যন্ত
কীভাবে নাম নথিভুক্ত করবেন?
সরকার জানিয়েছে, শ্রমশ্রী প্রকল্পে আবেদন করতে হলে শ্রমশ্রী মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করতে হবে। আবেদনকারীদের একটি নির্দিষ্ট ফর্ম পূরণ করতে হবে যেখানে নাম, ঠিকানা, আধার নম্বর, ভোটার কার্ড নম্বর, রেশন কার্ড নম্বর, কর্মক্ষেত্রের তথ্য, পারিশ্রমিকের পরিমাণ এবং প্রয়োজনে পাসপোর্ট নম্বর জমা দিতে হবে।
যারা আগে থেকেই কর্মসাথী পোর্টালে নথিভুক্ত আছেন, তারা ইউজার আইডি বা ফোন নম্বর দিয়ে ‘Generate OTP’ অপশনে ক্লিক করে ভ্যালিডেট করতে পারবেন। আর যারা নতুন আবেদনকারী, তাঁদের ‘Register’ অপশনে গিয়ে ফোন নম্বর এবং ওটিপি ব্যবহার করে আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে।
তবুও বিভ্রান্তি
হাওড়ার শ্যামপুর ২ নম্বর ব্লকের বাছরি গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান শ্যামসুন্দর মেটিয়া জানান, “মানুষ আমাদের কাছে আসছেন আবেদন করার জন্য, কিন্তু কীভাবে শ্রমশ্রী প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত করতে হবে, আমরা নিজেরাও জানি না। ব্লক অফিসে এখনও কোনও স্পষ্ট নির্দেশিকা আসেনি।”
এতে বোঝা যাচ্ছে যে সরকারি ঘোষণা হলেও প্রশাসনিক স্তরে সঠিক গাইডলাইন এখনও নিচুতলায় পৌঁছয়নি। এর ফলে আবেদনকারীরা বিভ্রান্ত হয়ে পড়ছেন।
সরকারি অবস্থান
হাওড়া জেলা প্রশাসনের এক কর্তা অবশ্য দাবি করেছেন, এখন প্রায় প্রত্যেকের হাতে অ্যান্ড্রয়েড ফোন এবং ইন্টারনেট রয়েছে। ফলে মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করে আবেদন করায় অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। তাঁর দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, হাওড়া জেলায় ইতিমধ্যেই এক হাজারেরও বেশি এবং হুগলিতে প্রায় ৯৬৫টি আবেদন জমা পড়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত কেউ অনুদানের টাকা পাননি।
প্রশ্ন উঠছে সাধারণ মানুষের মধ্যে
একজন সাধারণ পরিযায়ী শ্রমিক, যিনি দিন আনা দিন খাওয়া মানুষ, তাঁর কাছে অ্যাপ ডাউনলোড, ওটিপি জেনারেট, নথি আপলোড করা—এসব বিষয় সহজ নয়। তাই তাঁদের দাবি, অফলাইন প্রক্রিয়া রাখা হোক যাতে ব্লক অফিস বা পঞ্চায়েতের মাধ্যমে সরাসরি আবেদন করা যায়।
❓ শ্রমিকরা কীভাবে অ্যাপ ব্যবহার করবেন?
❓ অফলাইন আবেদন প্রক্রিয়া কি চালু হবে?
❓ অনুদান কবে থেকে হাতে পৌঁছাবে?
❓ কারিগরি প্রশিক্ষণ কার্যকরী হবে কবে থেকে?
ভবিষ্যতের দিশা
শ্রমশ্রী প্রকল্প নিঃসন্দেহে একটি মানবিক উদ্যোগ। তবে এর কার্যকরী বাস্তবায়ন নির্ভর করবে সরকারি স্বচ্ছতা, সময়মতো অনুদান প্রদান এবং প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলির মানের উপর। পরিযায়ী শ্রমিকরা দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে বঞ্চিত হয়েছেন। তাঁদের জন্য এই প্রকল্প যদি সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হয়, তবে এটি রাজ্যের একটি গেমচেঞ্জার উদ্যোগ হয়ে উঠতে পারে।
📢 সবার আগে নিউজ আপডেট পেতে আমাদের ফলো করুন
📰 রাজনীতি | ⚽ খেলা | 🎬 বিনোদন | 🌍 আন্তর্জাতিক খবর 👉 সবকিছু এক ক্লিকেই পান আপনার হাতে।
👍 ফলো করুন Facebook 💬 Join করুন WhatsApp গ্রুপে
No comments:
আপনার মতামত এর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ 👇
👉 যদি মনে হয় বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ, পোস্টটি শেয়ার করুন 🔄নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন