ক্যালিফোর্নিয়ায় ভারতীয় ইঞ্জিনিয়ারের মৃত্যু: তদন্ত দাবি পরিবারের

ক্যালিফোর্নিয়ায় ভারতীয় ইঞ্জিনিয়ারের মৃত্যু: তদন্ত দাবি পরিবারের

ক্যালিফোর্নিয়ায় ভারতীয় ইঞ্জিনিয়ারের মৃত্যু: তদন্ত দাবি পরিবারের

ভারতীয় ইঞ্জিনিয়ারের মৃত্যু ক্যালিফোর্নিয়ায়

Y বাংলা ডিজিটাল ব্যুরো: বিদেশের মাটিতে ভারতীয় ইঞ্জিনিয়ারের মর্মান্তিক মৃত্যু। ক্যালিফোর্নিয়ার সান্তা ক্লারায় পুলিসের গুলিতে প্রাণ হারালেন ৩০ বছর বয়সী মহম্মদ নিজামউদ্দিন। পুলিস দাবি করছে, রুমমেটকে ছুরি দিয়ে আক্রমণের পরই গুলি চালানো হয়। তবে পরিবারের অভিযোগ, এই মৃত্যুর পেছনে বর্ণবৈষম্যের জটিলতা রয়েছে এবং বিস্তারিত তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।

ঘটনার মূল সূত্রপাত: পুলিস জানায়, এক বাড়ি থেকে ফোন আসে যেখানে বলা হয় এক ব্যক্তি অপরকে ছুরি দিয়ে আক্রমণ করেছে। ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিস দেখেন, নিজামউদ্দিন তাঁর রুমমেটকে চেপে ধরেছেন। রুমমেট গুরুতর আহত ছিলেন। পরিস্থিতি সামলাতে গুলি চালানো হয়।

কে ছিলেন মহম্মদ নিজামউদ্দিন?

হায়দরাবাদের তেলঙ্গানার মাহবুবনগরের বাসিন্দা নিজামউদ্দিন ফ্লোরিডার একটি কলেজ থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে মাস্টার্স করেন। সান্তা ক্লারার একটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন। পরিবার জানিয়েছে, তিনি একজন শান্ত, ধার্মিক ও সৎ মানুষ ছিলেন। তবে চাকরি হারানো, বর্ণবৈষম্য, মজুরি জালিয়াতি এবং হয়রানির কারণে মানসিকভাবে চাপে ছিলেন।

লিঙ্কডইনে নিজের বক্তব্য

নিজামউদ্দিন লিঙ্কডইন প্রোফাইলে লিখেছিলেন যে, তিনি বর্ণবিদ্বেষ, বর্ণবৈষম্য, হয়রানি, নির্যাতন, মজুরি জালিয়াতি, চাকরিচ্যুতি এবং ন্যায়বিচার বঞ্চনার শিকার হয়েছেন। তিনি লিখেছিলেন, “যথেষ্ট হয়েছে, শ্বেতাঙ্গ আধিপত্য এবং বর্ণবাদী মনোভাবের অবসান ঘটাতে হবে।” এমনকি তিনি অভিযোগ করেছিলেন যে, তাঁকে বিষ খাওয়ানো হয়েছিল, জোরপূর্বক বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল এবং নিয়মিত নজরদারির শিকার হতে হয়েছে।

পরিবারের দাবি: নিহত ইঞ্জিনিয়ারের পরিবার জানিয়েছে, মৃত্যুর আগে নিজামউদ্দিন নিজেই পুলিসকে ফোন করেছিলেন সাহায্যের জন্য। কিন্তু তাঁকেই গুলি করে হত্যা করা হলো। তাঁরা পূর্ণাঙ্গ তদন্ত এবং মরদেহ দ্রুত ভারতে ফেরানোর দাবি জানিয়েছেন।

সরকারি তদন্ত ও প্রতিক্রিয়া

সান্তা ক্লারা কাউন্টি জেলা অ্যাটর্নি অফিস ও পুলিস একসঙ্গে ঘটনার তদন্ত করছে। তবে পরিবারের দাবি, শুধু সাধারণ তদন্ত নয়, আন্তর্জাতিক স্তরে বিষয়টি খতিয়ে দেখা উচিত। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের (MEA) সাহায্যে মরদেহ ফেরানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক তৎপরতা

মজলিস বাঁচাও তেহরিক (MBT)-এর মুখপাত্র আমজেদ উল্লাহ খান নিহত ইঞ্জিনিয়ারের পরিবারকে সহায়তা করছেন। তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রী এস. জয়শঙ্করকে চিঠি লিখে দ্রুত পদক্ষেপের অনুরোধ জানিয়েছেন। পাশাপাশি ভারতীয় দূতাবাস ও সান ফ্রান্সিসকো কনস্যুলেটকে মরদেহ ফিরিয়ে আনার কাজে সহযোগিতা করতে বলেছেন।

বর্ণবৈষম্যের অভিযোগ ঘিরে বিতর্ক

ঘটনাটি ঘিরে নতুন করে প্রশ্ন উঠছে—মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দক্ষিণ এশীয় অভিবাসীরা কি ক্রমশ বর্ণবৈষম্যের শিকার হচ্ছেন? মানবাধিকার কর্মীদের দাবি, এই ঘটনায় স্বচ্ছ তদন্ত হওয়া জরুরি। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত ভারতীয় সম্প্রদায় শোক ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।

উপসংহার

মহম্মদ নিজামউদ্দিনের মৃত্যু শুধু একটি পরিবারের নয়, গোটা ভারতীয় অভিবাসী সমাজের কাছে বেদনাদায়ক ও তাৎপর্যপূর্ণ। ঘটনাটি আইনশৃঙ্খলা, মানবাধিকার ও কূটনৈতিক দায়িত্ব নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। পরিবার যেমন ন্যায়বিচারের দাবি তুলেছে, তেমনই আন্তর্জাতিক মহলেও ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি উঠছে। আগামী দিনে এই তদন্ত কতদূর অগ্রসর হয়, সেটিই এখন দেখার।

#ভারতীয়ইঞ্জিনিয়ার #ক্যালিফোর্নিয়ামৃত্যু #সান্তাক্লারা #পুলিশগুলিকাণ্ড #বর্ণবৈষম্য #হায়দরাবাদ #তেলঙ্গানা #IndianEngineer #SantaClaraShooting #RacismInUSA

No comments:

আপনার মতামত এর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ 👇
👉 যদি মনে হয় বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ, পোস্টটি শেয়ার করুন 🔄নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন

Featured post

দুর্গাপুর গণধর্ষণ: সিবিআই তদন্ত দাবি পরিবারের, পুনর্নির্মাণে পুলিশের নজর দুর্গাপুর গণধর...

Search This Blog

Powered by Blogger.