কলকাতা আবার অন্ধকারে — একবছরের মধ্যেই বাতিল হল রাত্রিকালীন
কলকাতা মেট্রো আবার রাতের অন্ধকারে: দমদম–শহিদ ক্ষুদিরামের নৈশসেবা বন্ধ
কলকাতা মেট্রো কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করেছে, ব্লু লাইনের দমদম থেকে শহিদ ক্ষুদিরামের মধ্যে যে রাত্রিকালীন বিশেষ সার্ভিস চালু করা হয়েছিল— তা আগামী ৩ সেপ্টেম্বর (বুধবার) থেকে বন্ধ থাকবে। এক বছরের মধ্যেই এই সিদ্ধান্ত নেয়ার কারণ হিসেবে মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে 'অপ্রত্যাশিত কম যাত্রী ও অতিরিক্ত খরচ'।
২০২৪ সালের জুনে মেট্রো সূত্রে জানা গিয়েছিল ব্লু লাইনে শেষ মেট্রো সময় বাড়িয়ে রাত ১১টা করা হবে এবং দমদম–কবি সুভাষের (বা শহিদ ক্ষুদিরাম পর্যন্ত) মধ্যে একটি অতিরিক্ত জোড়া সার্ভিস চালানো হবে। তখন শহরের রাতে চলাফেরা করে এমন যাত্রীদের মধ্যে খুশির স্রোত দেখা যায়।
কিন্তু মালিকপক্ষ অল্প দিনেই সময়সূচি বদল করে— প্রথমে শেষ মেট্রোকে রাত ১০টা ৪০ মিনিটে নামিয়ে আনা হয়। তার পরে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় অতিরিক্ত খরচ এবং তুলনায় 'খুবই কম আয়'— এই যুক্তিতেই রাত্রিকালীন পরিষেবার ব্যাপারে আশাব্যঞ্জক সংখ্যক যাত্রী না দেখা যায়। ফলে কলকাতা মেট্রো পর্যায়ে পুনর্বিবেচনা শুরু হয়।
অতিরিক্ত ভাড়া ধার্য করা হয়েছিল— চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে রাত্রিকালীন বিশেষ সার্ভিসে প্রতিটি টিকিটে ১০ টাকা সারচার্জ বসানো হয়। তবু অপেক্ষাকৃত কম যাত্রী ও অপ্রতুল রাজস্ব রুট বন্ধের সিদ্ধান্তকে ত্বরান্বরিত করে।
সাধারণ যাত্রীদের অভিমত শতভাগ ভিন্ন— এক তারা বলছেন, “শেষ সার্ভিস আর বিশেষ সার্ভিসের মধ্যে এত ফারাক থাকায় আমাদের কোনো উপকার হচ্ছে না; আমরা ৯টা ৪৫-এ মেট্রো না পেলে ৫৫ মিনিট বা বেশি দাঁড়িয়ে থাকতে হতো।” অনেকে মনে করেন সারচার্জ বাড়ানো হলেও সময়সূচি পরিবর্তন হলে সুবিধা ফিরছে না।
মেট্রো কর্তৃপক্ষের ভাষ্য— 'রাতের পরিষেবা চালানোতে অপারেটিং খরচ তুলনায় বেশি; যাত্রীসংখ্যা অপ্রতুল।' আর যাত্রী বলছেন, 'পরিষেবার সময়সূচি যদি বাস্তবে যাত্রী সুবিধা মাথায় রেখে ঠিক করা হতো, হয়তো ব্যবহার বাড়ত।' এই দ্বৈত দাবি শেষ সিদ্ধান্তে ফাঁক রেখে দিয়েছে উপযুক্ত সমাধানের প্রশ্ন।
অন্যানভাবে, রাতের মেট্রোর কেটে যাওয়ায় রাতের কাজে নিয়োজিত, হসপিটাল/ইমার্জেন্সি কর্মী, শিফট ভিত্তিক কর্মী ও রাতভ্রমণকারী যাত্রীদের চলাচলে অসুবিধা দেখা দেবে— বিশেষত যাঁরা রাতে বাড়ি ফিরতে পাতালরেল নির্ভর করতেন।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ব্যবহার বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন বিকল্প পরীক্ষা করা হবে — সময়সূচি পুনর্মূল্যায়ন, বিশেষ টিকিট প্যাকেজ, বা নির্দিষ্ট দিনগুলোতে পরীক্ষা সেবা চালু করা হতে পারে; তবে সবকিছুই ওপেন টু রিভিউ।
শহরের রাতের চলাচল ও জনস্বাভাবিকতায় এই সিদ্ধান্ত কী প্রভাব ফেলবে— তা পর্যালোচনা করতে হবে। মেট্রো কর্তৃপক্ষ আর যাত্রীরা উভয়েই বলছেন, ভবিষ্যতে সঠিক সমন্বয়ের মাধ্যমে পরিস্থিতি বদলানো যেতে পারে, তবে তা ছাড়া এই মুহূর্তে রাত্রিকালীন নির্ভরযোগ্য বিকল্পের অভাব স্পষ্ট।
নোট: এই প্রতিবেদন কেবল রিপোর্টিং রাজধানীসূত্রক — মেট্রো কর্তৃপক্ষ বা সংশ্লিষ্ট দফতরের অফিসিয়াল বিবৃতি পেতে চাইলে স্থানীয় অফিস/প্রেস রিলিজ চেক করুন।
No comments:
আপনার মতামত এর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ 👇
👉 যদি মনে হয় বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ, পোস্টটি শেয়ার করুন 🔄নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন