বাংলাদেশি বউমাকে সীমান্তে ফেলে পালানোর অভিযোগ, গ্রেফতার অন্তঃসত্ত্বা নারী
বাংলাদেশি বউমাকে সীমান্তে ফেলে পালানোর অভিযোগ, গ্রেফতার অন্তঃসত্ত্বা নারী
আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ছবি: পেট্রাপোল সীমান্তে স্থানীয়দের সন্দেহে আটক হন অন্তঃসত্ত্বা ফাহিমা আক্তার।
📢 সবার আগে নিউজ আপডেট পেতে আমাদের ফলো করুন
📰 রাজনীতি | ⚽ খেলা | 🎬 বিনোদন | 🌍 আন্তর্জাতিক খবর
👉 সবকিছু এক ক্লিকেই পান আপনার হাতে।
ঘটনার সারমর্ম
সংবাদদাতা, বনগাঁ: দুই পুত্র সন্তানসহ অন্তঃসত্ত্বা বাংলাদেশি বউমাকে সীমান্তে ফেলে পালানোর অভিযোগ উঠেছে তাঁর খুড়তুতো শ্বশুরের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে পেট্রাপোল সীমান্তে। স্থানীয়দের সন্দেহে পুলিশ ওই নারীকে আটক করে। ধৃতের নাম ফাহিমা আক্তার। তিনি বাংলাদেশের চট্টগ্রামের বাসিন্দা এবং বর্তমানে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিংয়ে শ্বশুরবাড়িতে বসবাস করছিলেন।
ঘটনা কীভাবে ঘটল?
রবিবার ফাহিমাকে তাঁর খুড়শ্বশুর বাংলাদেশে বাপের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার নাম করে পেট্রাপোল সীমান্তে নিয়ে আসেন। সেখানে একটি হোটেলে তাঁকে এবং তাঁর দুই সন্তানকে বসিয়ে রাখেন। পরে ফল কিনে আনতে যাওয়ার নাম করে পালিয়ে যান তিনি। দিনভর সীমান্তেই অপেক্ষা করতে থাকেন ফাহিমা। স্থানীয়রা সন্দেহ করলে থানায় খবর দেন। পুলিশ এসে তাঁকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তিনি বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই ভারতে প্রবেশ করেছেন।
ফাহিমার পরিচয়
ফাহিমা আক্তারের সঙ্গে ছয় বছর আগে ক্যানিংয়ের বাসিন্দা মিলন শেখের বিয়ে হয়। মিলন ছোটবেলা থেকেই মায়ের সঙ্গে বাংলাদেশে বসবাস করতেন। বিয়ের পরও তাঁরা বাংলাদেশেই থাকেন। তাঁদের দুই পুত্রসন্তান রয়েছে—একজন চার বছরের এবং আরেকজন দুই বছরের। নয় মাস আগে ফাহিমা চোরাপথে স্বামীর সঙ্গে ভারতে আসেন। এরপর থেকেই তাঁর ওপর শুরু হয় নির্যাতন। শ্বশুরবাড়ির পক্ষ থেকে তাঁকে বাপের বাড়ি ফিরে যাওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছিল।
নির্যাতনের অভিযোগ
ফাহিমার অভিযোগ, ভারতে আসার পর থেকেই তাঁকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হচ্ছিল। তাঁর খাবার, চিকিৎসা, নিরাপত্তার সুযোগ কমানো হয়। পরিবারের সদস্যরা তাঁকে বাপের বাড়ি ফিরে যেতে চাপ দেন। রবিবার তাঁকে বাপের বাড়িতে পাঠানোর নাম করে সীমান্তে নিয়ে এসে ফেলে রেখে পালিয়ে যান খুড়শ্বশুর। দিনভর সন্তানদের নিয়ে সীমান্তে বসে থাকতে হয় তাঁকে।
স্থানীয়দের সন্দেহ ও পুলিশের হস্তক্ষেপ
স্থানীয়রা যখন লক্ষ্য করেন, এক অন্তঃসত্ত্বা নারী দুই সন্তানসহ হোটেলে বসে রয়েছেন এবং তাঁর পাশে কেউ নেই, তখন তাঁদের সন্দেহ হয়। তাঁরা কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলে ফাহিমা তাঁর দুরবস্থার কথা জানান। এরপর পুলিশ এসে তাঁকে আটক করে। তাঁর কাছে বৈধ কাগজপত্র না থাকায় তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশি তদন্ত
পেট্রাপোল থানার পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। তাঁরা জানতে পেরেছেন, ফাহিমার বৈধ পাসপোর্ট বা অন্যান্য ভ্রমণ নথি নেই। তাঁর সঙ্গে থাকা শিশুদের অবস্থাও পরীক্ষা করা হচ্ছে। তাঁর কাছ থেকে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। এই ঘটনার পেছনে মানবপাচারের আশঙ্কা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
আদালতে তোলা ও জেল হেফাজত
সোমবার ধৃত ফাহিমাকে বনগাঁ মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁকে জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তাঁর শিশুদের জন্য পৃথকভাবে সামাজিক সেবা দপ্তরের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তাঁর পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের খোঁজ শুরু হয়েছে।
সীমান্তে মানবিক সংকট
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সীমান্তে এ ধরনের ঘটনা বাড়ছে। অর্থনৈতিক দুরবস্থা, পারিবারিক নির্যাতন, অবৈধভাবে দেশে প্রবেশ এবং কাগজপত্রের অভাব—এসব কারণে নারীরা ও শিশুদের ঝুঁকির মুখে পড়ছে। আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ছাড়া এই সমস্যা সমাধান কঠিন।
স্থানীয়দের বক্তব্য
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, তাঁরা প্রথমে বুঝতে পারেননি যে নারীটি সাহায্যের অভাবে সীমান্তে বসে আছেন। পরে তাঁর দুরবস্থা দেখে মানবিক কারণে পুলিশকে খবর দেন। অনেকে বলেন, সীমান্ত এলাকায় নজরদারি আরও বাড়ানো উচিত যাতে এমন ঘটনা আর না ঘটে।
প্রশাসনের ভূমিকা
পুলিশ ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে। সামাজিক সংগঠনগুলিও শিশুদের জন্য চিকিৎসা, খাবার এবং মানসিক সহায়তার ব্যবস্থা করছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আন্তর্জাতিক সীমান্তে মানবিক সহায়তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিশেষজ্ঞদের মতামত
আইন বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বৈধ নথি ছাড়া সীমান্ত পেরোনো শুধু আইনি অপরাধ নয়, এটি মানবাধিকার লঙ্ঘনেরও বিষয়। তারা বলেছেন, আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় সীমান্ত নজরদারি ও মানবিক সহায়তা বাড়ানো জরুরি।
এই প্রতিবেদন Y বাংলা নিউজ-এর জন্য তৈরি। এটি কপি রাইট মুক্ত এবং সংবাদ উপস্থাপনার জন্য প্রস্তুত।
No comments:
আপনার মতামত এর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ 👇
👉 যদি মনে হয় বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ, পোস্টটি শেয়ার করুন 🔄নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন