মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুজোমণ্ডপ উদ্বোধন, মাতৃপ্রতিমা উদ্বোধনে রাখলেন সময়
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুজোমণ্ডপ উদ্বোধন করলেন, মাতৃপ্রতিমা উদ্বোধনে রাখলেন সময়
আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ছবি: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতার পুজোমণ্ডপ উদ্বোধন করছেন
কলকাতার হাতিবাগান সর্বজনীন, টালা প্রত্যয় ও শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাব—এই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ দুর্গাপুজোর মণ্ডপ শনিবার উদ্বোধন করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে উদ্বোধনের সময় তিনি মণ্ডপের ভেতরে প্রবেশ করেননি। তাঁর বক্তব্য ছিল, “আমি পুজোমণ্ডপ উদ্বোধন করতে এসেছি, মাতৃপ্রতিমার নয়। মহালয়ার দিন থেকে মাতৃপ্রতিমার উদ্বোধন করব।”
সকাল বৃষ্টিভেজা আকাশের মধ্যে হাতিবাগান সর্বজনীন মণ্ডপে পৌঁছে ফিতে কেটে উদ্বোধন করেন মমতা। বারবার তিনি মঞ্চ থেকে স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, মণ্ডপে যাওয়া নয়, শুধু উদ্বোধন করাই আজকের উদ্দেশ্য। “আমি কিন্তু কেবল মণ্ডপের উদ্বোধন করছি,” বলেন তিনি। এছাড়াও তিনি জানান, মহালয়ার দিন তর্পণ ও চণ্ডীপাঠের পরই মাতৃপ্রতিমার উদ্বোধন করবেন।
হাতিবাগান সর্বজনীন মণ্ডপের পর তিনি টালা প্রত্যয় এবং শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবেও একই কার্যক্রম সম্পন্ন করেন। প্রত্যেক স্থানে মুখ্যমন্ত্রী বারবার জানিয়ে দেন, মাতৃপ্রতিমার উদ্বোধন করার দিন আলাদা। এই ঘোষণার মাধ্যমে অনেকের মনে হয়েছে, তিনি নাম না করে তৃণমূলের শীর্ষ নেতা শুভেন্দু অধিকারীর ‘হিন্দুবিরোধী’ মন্তব্যের জবাব দিচ্ছেন।
মমতার এই কার্যক্রমে মূলত লক্ষ্য ছিল মাতৃপ্রতিমা উদ্বোধনকে মহালয়ার সঙ্গে সংযুক্ত করা। তিনি বলেন, “দেবীপক্ষে মাতৃদেবীর উদ্বোধন করব। পুজোর মূল উৎসবের প্রস্তুতি এবং দেবীকে সন্মান প্রদানের জন্যই আমরা মহালয়ার দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করব।”
বাংলা ও বাঙালিদের অধিকার নিয়েও সরব মুখ্যমন্ত্রী
উদ্বোধনের সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলা ভাষা ও বাঙালিদের উপর যে ধরনের হেনস্থার অভিযোগ উঠছে, সেটিকেও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যই হল মূল কথা। সকলেই নিজের মাতৃভাষাকে সম্মান করুক। কিন্তু বাংলা ভাষায় কথা বললে অত্যাচার করা হচ্ছে—এটি কখনোই মেনে নেওয়া যায় না। আমাদের লক্ষ্য সকলকে সমবেত করা এবং একে অপরের সংস্কৃতি ও ভাষার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা।”
উল্লেখ্য, এই তিনটি মণ্ডপ কলকাতার সবচেয়ে জনপ্রিয় ও ঐতিহ্যবাহী পুজোমণ্ডপগুলোর মধ্যে পড়ে। হাতিবাগান সর্বজনীন মণ্ডপটি বরাবরের মতো এবারও মানুষের ভিড়ে মুখরিত থাকে। টালা প্রত্যয় এবং শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাব মণ্ডপও বহু বছর ধরে কলকাতার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও পুজোর আনন্দকে বহন করে আসছে।
মণ্ডপ উদ্বোধনের ধারাবাহিকতা
মুখ্যমন্ত্রী শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তিনটি মণ্ডপে পা রাখেন। প্রতিটি মণ্ডপে তিনি ফিতে কেটে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। তবে ভেতরে প্রবেশ না করায় তা শুধুই আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, মমতার এই সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক কারণে হলেও তা পুজোর মৌলিক উৎসবকে শ্রদ্ধা জানানোর এক পদক্ষেপ।
উদ্বোধনকালে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় প্রশাসন এবং মণ্ডপ কমিটির সদস্যরা। এছাড়াও সেখানে উপস্থিত ছিলেন সাধারণ দর্শক ও ভক্তরা, যারা মুখ্যমন্ত্রীর হাতে ফিতে কাটা এবং উদ্বোধনের মুহূর্ত সরাসরি দেখার সুযোগ পেয়েছেন।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
মুখ্যমন্ত্রীর এই পুজোমণ্ডপ উদ্বোধনকে অনেকেই রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের সঙ্গে যুক্ত করেছেন। বিশেষ করে শুভেন্দু অধিকারীর সাম্প্রতিক মন্তব্যের প্রেক্ষিতে মমতার বার্তাকে প্রকাশ্য প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখা হচ্ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, “মমতা শুধুমাত্র ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক দিক দিয়ে নয়, রাজনৈতিক দিক থেকেও এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নিজের অবস্থান দৃঢ় করেছেন।”
শহরের বিভিন্ন মিডিয়া হাউস এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোও মুখ্যমন্ত্রীর পুজোমণ্ডপ উদ্বোধনের খবর লাইভ কভারেজ দিয়েছে। বিশেষ করে মাতৃপ্রতিমা উদ্বোধনের তারিখ এবং মাতৃপ্রতিমাকে শ্রদ্ধার সঙ্গে উদযাপন করার বার্তাটি নিউজ হেডলাইনে বিশেষভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
📢 সবার আগে নিউজ আপডেট পেতে আমাদের ফলো করুন
📰 রাজনীতি | ⚽ খেলা | 🎬 বিনোদন | 🌍 আন্তর্জাতিক খবর 👉 সবকিছু এক ক্লিকেই পান আপনার হাতে।
👍 ফলো করুন Facebook 💬 Join করুন WhatsApp গ্রুপে
No comments:
আপনার মতামত এর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ 👇
👉 যদি মনে হয় বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ, পোস্টটি শেয়ার করুন 🔄নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন