২০২৬ নির্বাচনের আগে বিষ্ণুপুরে বিজেপির ভাঙন, তৃণমূলে যোগদানেই পাল্টাচ্ছে সমীকরণ
২০২৬ নির্বাচনের আগে বিষ্ণুপুরে বিজেপির ভাঙন, তৃণমূলে যোগদানেই পাল্টাচ্ছে সমীকরণ
২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচন ঘনিয়ে আসার আগেই বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলায় বিজেপির শক্ত ঘাঁটিতে ভাঙনের সুর শোনা যাচ্ছে। একাধিক গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপি সদস্য তৃণমূল কংগ্রেসের পতাকা হাতে তুলে নিয়েছেন। এই যোগদান মেলা ঘিরে রাজনৈতিক মহলে তীব্র আলোড়ন তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে সোনামুখী বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপির ভাঙন দলীয় সংগঠনের জন্য বড় ধাক্কা বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
মানিক বাজার গ্রাম পঞ্চায়েতের সমীকরণ বদল
সোনামুখী ব্লকের মানিক বাজার গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট আসন সংখ্যা ৯। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপি ৫টি এবং তৃণমূল ৪টি আসন পায়। ফলে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে বোর্ড গঠন করে বিজেপি। কিন্তু সাম্প্রতিক যোগদান মেলায় ১৭০ নম্বর বুথের বিজেপি সদস্য শ্যামলী লোহার তৃণমূলে যোগ দেন। এর ফলে বিজেপির সদস্য সংখ্যা নেমে এসেছে ৪-এ এবং তৃণমূল বেড়ে হয়েছে ৫। স্বাভাবিকভাবেই আগামী দিনে অনাস্থা এনে এই গ্রাম পঞ্চায়েতের বোর্ড দখল করতে চলেছে তৃণমূল।
পূর্ব নবাসন গ্রাম পঞ্চায়েতে ভাঙন
সোনামুখী বিধানসভার বিজেপি বিধায়ক দিবাকর ঘরামির এলাকা পূর্ব নবাসন গ্রাম পঞ্চায়েতেও ভাঙন দেখা দিয়েছে। এখানে মোট আসন ২৩টির মধ্যে ১৬টিতে বিজেপি এবং ৭টিতে তৃণমূল জয়ী হয়েছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক যোগদান মেলায় ১২১ নম্বর বুথের বিজেপি সদস্য জ্যোৎস্না চৌধুরী ও ১১১ নম্বর বুথের স্বপ্না ঘোষ তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন। ফলে বর্তমান পরিসংখ্যান অনুযায়ী বিজেপির আসন সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ১৪-এ এবং তৃণমূল বেড়ে হয়েছে ৯।
রাজনৈতিক তরজা
এই যোগদান মেলাকে ঘিরে বিজেপি ও তৃণমূলের মধ্যে অভিযোগ-প্রত্যঅভিযোগের ঝড় উঠেছে। জেলা তৃণমূল সভাপতি সুব্রত দত্ত হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, আগামী ১০ দিনের মধ্যেই গ্রাম পঞ্চায়েতের ক্ষমতা দখল করবে তৃণমূল। অন্যদিকে, বিজেপি বিধায়ক দিবাকর ঘরামি অভিযোগ করেছেন, “প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে ভয় দেখিয়ে বিজেপি সদস্যদের যোগদান করানো হচ্ছে।” তিনি দাবি করেছেন, সাধারণ মানুষের কাছে তৃণমূল এখন ডুবন্ত জাহাজ।
সভামঞ্চ থেকে জেলা তৃণমূল সভাপতি বিজেপি বিধায়ককে আক্রমণ করে বলেন, “সাড়ে চার বছরে এলাকায় কোনও কাজ করেননি বিধায়ক। এবার ডুগডুগি বাজাব, বাঁদরের নাচ নাচাব।” পাল্টা বিজেপি বিধায়ক খোঁচা দিয়ে মন্তব্য করেন, “তৃণমূলের যেমন ঝাড়, তেমন বাঁশ।”
যোগদানের কারণ
বিজেপি থেকে তৃণমূলে যোগ দেওয়া অঞ্চল সদস্যদের বক্তব্য, বিজেপিতে থেকে এলাকার উন্নয়ন সম্ভব হচ্ছিল না। তাই উন্নয়ন যজ্ঞে অংশগ্রহণ করতেই তারা তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, ভোটের আগে এই ভাঙন বিজেপির জন্য বড় ধাক্কা। তবে আগামী দিনে সাধারণ মানুষ কাকে সমর্থন করবেন, তার ইঙ্গিত দেবে ২০২৬ সালের ভোট।
স্পষ্টতই বলা যায়, যোগদান মেলা শুধু রাজনৈতিক সমীকরণই বদলায়নি, বরং গ্রামাঞ্চলে তৃণমূলের সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করেছে। অন্যদিকে বিজেপির অভ্যন্তরীণ ভাঙন দলের কৌশলগত দুর্বলতাকে প্রকাশ করছে। এখন দেখার বিষয়, ২০২৬ নির্বাচনের আগে এই ভাঙন কোন দিকে মোড় নেয়।
📢 সবার আগে নিউজ আপডেট পেতে আমাদের ফলো করুন
📰 রাজনীতি | ⚽ খেলা | 🎬 বিনোদন | 🌍 আন্তর্জাতিক খবর 👉 সবকিছু এক ক্লিকেই পান আপনার হাতে।
👍 ফলো করুন Facebook 💬 Join করুন WhatsApp গ্রুপে


No comments:
আপনার মতামত এর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ 👇
👉 যদি মনে হয় বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ, পোস্টটি শেয়ার করুন 🔄নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন