বিহারে খেসারত নয়, খয়রাতি: নীতীশের যুব-ভাতা ও নির্বাচনকালীন নতুন অভিযোজন
ডিফল্টের বদলে খয়রাতি: ভোটকে সামনে রেখে নীতীশের তালিকাভুক্ত উপহার ঘোষণা

Y বাংলা ডিজিটাল ব্যুরো: বিধানসভা ভোটের চিত্র স্পষ্ট: প্রতিটি রাজনীতিক দলের কৌশলে ভিটার পাশে ‘জনমুখী’ ঘোষণা। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারও এই ছকে পিছিয়ে নেই — মাত্র কয়েক মাস বাকি নির্বাচনের আগে তিনি একের পর এক সাফল্য-বান্ধব ও ভাতা-ঘোষণা করছেন, যাতে যুব ও মহিলা ভোটারকে জেতা যায়।
মুখ্য ঘোষণা: বেকার গ্র্যাজুয়েটদের ১,০০০ টাকা মাসিক ভাতা
মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, ২০–২৫ বছর বয়সি বেকার গ্র্যাজুয়েট যুবক-যুবতীকে মাসিক ১,০০০ টাকা করে ভাতা দেওয়া হবে — যদি তারা দু’বছর পর্যন্ত চাকরি বা নিজস্ব ব্যবসা পায় না। এই প্রকল্পকে তিনি যুবকদের দক্ষতা উন্নয়নে সহায়তা করার উদ্দেশ্য হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। 0
ইন্টার্নশিপ ও শিক্ষাভিত্তিক ভাতা — ৪০০০ থেকে ৬০০০ টাকা
সরকার আগেই শিক্ষানবিশ্যদের জন্য ইন্টার্নশিপ-ভিত্তিক আর্থিক সহায়তার ঘোষণা করেছে — দ্বাদশ উত্তীর্ণদের জন্য প্রস্তাবিত ৪,০০০ টাকা এবং স্নাতকদের জন্য ৬,০০০ টাকা হিসেবে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। এই প্রকল্পকে মন্তব্য করা হচ্ছে যাতে তরুণরা দক্ষতা অর্জন করে চাকরির যোগ্য হয়ে উঠতে পারেন। 2
মহিলাদের জন্য ৩৫% সংরক্ষণ — রাজনৈতিক গুরুত্ব
নীতীশ সরকার রাজ্যের সমস্ত সরকারি চাকরিতে মহিলাদের জন্য ৩৫% সংরক্ষণ ঘোষণাও করেছেন — এটি ভোটারভিত্তি সম্প্রসারণ ও মহিলাদের ভোট আকৃষ্ট করার বিশেষ কৌশল হিসেবে দেখা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মহিলাদের আর্থ-সামাজিক শক্তি বৃদ্ধির এই ধরনের ঘোষণাও নির্বাচনী কৌশলের অংশ। 3
অন্য প্যাকেজ ও নগদ হস্তান্তর
এ ছাড়া নির্মাণ-শ্রমিকদের জন্য বড়সড় নগদ অনুদান ও শিক্ষা-সংক্রান্ত বিভিন্ন সুবিধার ঘোষণা করা হয়েছে। সম্প্রতি ১৬ লক্ষ নির্মাণ শ্রমিককে সরাসরি আর্থিক সহায়তার ঘোষণাও দিলেন মুখ্যমন্ত্রী— কয়েকশ কোটি টাকার প্যাকেজ জনগণের হাতে পৌঁছছে বলে জানানো হয়েছে। 4
নীতীশের যুক্তি vs বিরোধীর অভিযোগ
নীতীশ দাবি করছেন, সাত-আটটি প্রকল্প তরুণদের দক্ষ করে তুলবে, কর্মসংস্থানে সাহায্য করবে এবং অবসরে থাকা যুবসমাজকে গঠনমূলক কাজে লাগবে। তাঁর ভাষ্য— “এই সহায়তা পেয়ে যুবসমাজ প্রশিক্ষণ ও প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় নিজেকে প্রস্তুত করবে।” 5
কিন্তু বিরোধীরা বলছেন, সব কিছুই নির্বাচন-কালীন খয়রাতি। কংগ্রেস ও আরজেডি, জন সূর্য মতো দলের প্রতিনিধিরা অভিযোগ করছেন— গত পাঁচ বছরে নীতীশ সরকারের ত্রুটিপূর্ণ প্রশাসন ও উন্নয়নের ঘাটতি স্পষ্ট; এখন শেষ নাগাদ খরচ বাড়িয়ে ভোট কেন আনা হচ্ছে, তা স্পষ্ট নয়। তাছাড়া অনেক বিজ্ঞাপন ও প্রকল্প ঘোষণার বাস্তবায়ন কবে হবে, তা নির্দিষ্ট নয়।
রাজনীতিক ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ
বিশ্লেষকরা বলছেন— নির্বাচন-আগামী লড়াইতে সরাসরি নগদ-ভিত্তিক সোপ দেওয়া সাধারণ কৌশল। এর সুবিধা হল তা দ্রুত জনমতের দিক কাড়ে। তবে দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য প্রয়োজন বস্তুনিষ্ঠ কর্মসংস্থান এবং শিল্প-নির্ভর বিনিয়োগ। কেবল ভাতা দিয়ে অতিরিক্ত কর্মসংস্থান তৈরি হয় না; দক্ষতা-ভিত্তিক কর্মসূচি ও ব্যক্তিগত উদ্যোগকে অগ্রাধিকার দেওয়া দরকার।
জনমতের প্রতিক্রিয়া: আশাবাদী ও সন্দিহান
গ্রামাঞ্চলে এবং শহরের যুবকরা প্রথমদিকের কয়েকটি ঘোষণা স্বাগত জানিয়েছেন— কোনওরকম টাকা হাতে এসে যদি প্রশিক্ষণ নেওয়া যায় বা পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি করা যায়, তা তাদের উপকারে আসবে বলে মনে করেন অনেকে। কিন্তু ব্যবসায়ী ও প্রশাসনিক পর্যায়ে কেউ বলছেন— দীর্ঘমেয়াদে এটিকে ধারাবাহিকভাবে চালাতে রাজ্যের বাজেট কতটি সহনশীল, তা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন।
চ্যালেঞ্জ ও বাস্তবায়ন
বৃহত্তর চ্যালেঞ্জগুলো হল: প্রকল্পগুলোর সময়মতো বাস্তবায়ন, টার্গেটেড বেনিফিশিয়ারির নির্ধারণ, দুর্নীতি-প্রবণতা রোধ ও অর্থপ্রবাহের স্বচ্ছতা। বিশেষত যুব ভাতা বা ইন্টার্নশিপ ভাতা দেওয়া হলে তার মনিটরিং ও প্রতিশ্রুত কাজের ফলো-আপ জরুরি। নীতীশ সরকারকে এগুলোতে কড়া নজর দিতে হবে।
সরকারকে এখন দেখতে হবে — ঘোষণা বাস্তবায়ন ও স্বচ্ছতা; বিরোধী দলকে থাকতে হবে তৎপর ও গণতান্ত্রিকভাবে তত্ত্বাবধানী। ভোটারদের চাহিদা ও দীর্ঘমেয়াদি কর্মসংস্থান নিশ্চিত করাই শেষমেষ রাজ্যের উত্তরণ ঘটাবে।
📢 সবার আগে নিউজ আপডেট পেতে আমাদের ফলো করুন
📰 রাজনীতি | ⚽ খেলা | 🎬 বিনোদন | 🌍 আন্তর্জাতিক খবর 👉 সবকিছু এক ক্লিকেই পান আপনার হাতে।
👍 ফলো করুন Facebook 💬 Join করুন WhatsApp গ্রুপেডিফল্টের বদলে খয়রাতি: ভোটকে সামনে রেখে নীতীশের তালিকাভুক্ত উপহার ঘোষণা

Y বাংলা ডিজিটাল ব্যুরো: বিধানসভা ভোটের চিত্র স্পষ্ট: প্রতিটি রাজনীতিক দলের কৌশলে ভিটার পাশে ‘জনমুখী’ ঘোষণা। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারও এই ছকে পিছিয়ে নেই — মাত্র কয়েক মাস বাকি নির্বাচনের আগে তিনি একের পর এক সাফল্য-বান্ধব ও ভাতা-ঘোষণা করছেন, যাতে যুব ও মহিলা ভোটারকে জেতা যায়।
মুখ্য ঘোষণা: বেকার গ্র্যাজুয়েটদের ১,০০০ টাকা মাসিক ভাতা
মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, ২০–২৫ বছর বয়সি বেকার গ্র্যাজুয়েট যুবক-যুবতীকে মাসিক ১,০০০ টাকা করে ভাতা দেওয়া হবে — যদি তারা দু’বছর পর্যন্ত চাকরি বা নিজস্ব ব্যবসা পায় না। এই প্রকল্পকে তিনি যুবকদের দক্ষতা উন্নয়নে সহায়তা করার উদ্দেশ্য হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। 0
ইন্টার্নশিপ ও শিক্ষাভিত্তিক ভাতা — ৪০০০ থেকে ৬০০০ টাকা
সরকার আগেই শিক্ষানবিশ্যদের জন্য ইন্টার্নশিপ-ভিত্তিক আর্থিক সহায়তার ঘোষণা করেছে — দ্বাদশ উত্তীর্ণদের জন্য প্রস্তাবিত ৪,০০০ টাকা এবং স্নাতকদের জন্য ৬,০০০ টাকা হিসেবে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। এই প্রকল্পকে মন্তব্য করা হচ্ছে যাতে তরুণরা দক্ষতা অর্জন করে চাকরির যোগ্য হয়ে উঠতে পারেন। 2
মহিলাদের জন্য ৩৫% সংরক্ষণ — রাজনৈতিক গুরুত্ব
নীতীশ সরকার রাজ্যের সমস্ত সরকারি চাকরিতে মহিলাদের জন্য ৩৫% সংরক্ষণ ঘোষণাও করেছেন — এটি ভোটারভিত্তি সম্প্রসারণ ও মহিলাদের ভোট আকৃষ্ট করার বিশেষ কৌশল হিসেবে দেখা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মহিলাদের আর্থ-সামাজিক শক্তি বৃদ্ধির এই ধরনের ঘোষণাও নির্বাচনী কৌশলের অংশ। 3
অন্য প্যাকেজ ও নগদ হস্তান্তর
এ ছাড়া নির্মাণ-শ্রমিকদের জন্য বড়সড় নগদ অনুদান ও শিক্ষা-সংক্রান্ত বিভিন্ন সুবিধার ঘোষণা করা হয়েছে। সম্প্রতি ১৬ লক্ষ নির্মাণ শ্রমিককে সরাসরি আর্থিক সহায়তার ঘোষণাও দিলেন মুখ্যমন্ত্রী— কয়েকশ কোটি টাকার প্যাকেজ জনগণের হাতে পৌঁছছে বলে জানানো হয়েছে। 4
নীতীশের যুক্তি vs বিরোধীর অভিযোগ
নীতীশ দাবি করছেন, সাত-আটটি প্রকল্প তরুণদের দক্ষ করে তুলবে, কর্মসংস্থানে সাহায্য করবে এবং অবসরে থাকা যুবসমাজকে গঠনমূলক কাজে লাগবে। তাঁর ভাষ্য— “এই সহায়তা পেয়ে যুবসমাজ প্রশিক্ষণ ও প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় নিজেকে প্রস্তুত করবে।” 5
কিন্তু বিরোধীরা বলছেন, সব কিছুই নির্বাচন-কালীন খয়রাতি। কংগ্রেস ও আরজেডি, জন সূর্য মতো দলের প্রতিনিধিরা অভিযোগ করছেন— গত পাঁচ বছরে নীতীশ সরকারের ত্রুটিপূর্ণ প্রশাসন ও উন্নয়নের ঘাটতি স্পষ্ট; এখন শেষ নাগাদ খরচ বাড়িয়ে ভোট কেন আনা হচ্ছে, তা স্পষ্ট নয়। তাছাড়া অনেক বিজ্ঞাপন ও প্রকল্প ঘোষণার বাস্তবায়ন কবে হবে, তা নির্দিষ্ট নয়।
রাজনীতিক ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ
বিশ্লেষকরা বলছেন— নির্বাচন-আগামী লড়াইতে সরাসরি নগদ-ভিত্তিক সোপ দেওয়া সাধারণ কৌশল। এর সুবিধা হল তা দ্রুত জনমতের দিক কাড়ে। তবে দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য প্রয়োজন বস্তুনিষ্ঠ কর্মসংস্থান এবং শিল্প-নির্ভর বিনিয়োগ। কেবল ভাতা দিয়ে অতিরিক্ত কর্মসংস্থান তৈরি হয় না; দক্ষতা-ভিত্তিক কর্মসূচি ও ব্যক্তিগত উদ্যোগকে অগ্রাধিকার দেওয়া দরকার।
জনমতের প্রতিক্রিয়া: আশাবাদী ও সন্দিহান
গ্রামাঞ্চলে এবং শহরের যুবকরা প্রথমদিকের কয়েকটি ঘোষণা স্বাগত জানিয়েছেন— কোনওরকম টাকা হাতে এসে যদি প্রশিক্ষণ নেওয়া যায় বা পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি করা যায়, তা তাদের উপকারে আসবে বলে মনে করেন অনেকে। কিন্তু ব্যবসায়ী ও প্রশাসনিক পর্যায়ে কেউ বলছেন— দীর্ঘমেয়াদে এটিকে ধারাবাহিকভাবে চালাতে রাজ্যের বাজেট কতটি সহনশীল, তা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন।
চ্যালেঞ্জ ও বাস্তবায়ন
বৃহত্তর চ্যালেঞ্জগুলো হল: প্রকল্পগুলোর সময়মতো বাস্তবায়ন, টার্গেটেড বেনিফিশিয়ারির নির্ধারণ, দুর্নীতি-প্রবণতা রোধ ও অর্থপ্রবাহের স্বচ্ছতা। বিশেষত যুব ভাতা বা ইন্টার্নশিপ ভাতা দেওয়া হলে তার মনিটরিং ও প্রতিশ্রুত কাজের ফলো-আপ জরুরি। নীতীশ সরকারকে এগুলোতে কড়া নজর দিতে হবে।
সরকারকে এখন দেখতে হবে — ঘোষণা বাস্তবায়ন ও স্বচ্ছতা; বিরোধী দলকে থাকতে হবে তৎপর ও গণতান্ত্রিকভাবে তত্ত্বাবধানী। ভোটারদের চাহিদা ও দীর্ঘমেয়াদি কর্মসংস্থান নিশ্চিত করাই শেষমেষ রাজ্যের উত্তরণ ঘটাবে।
📢 সবার আগে নিউজ আপডেট পেতে আমাদের ফলো করুন
📰 রাজনীতি | ⚽ খেলা | 🎬 বিনোদন | 🌍 আন্তর্জাতিক খবর 👉 সবকিছু এক ক্লিকেই পান আপনার হাতে।
👍 ফলো করুন Facebook 💬 Join করুন WhatsApp গ্রুপে
No comments:
আপনার মতামত এর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ 👇
👉 যদি মনে হয় বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ, পোস্টটি শেয়ার করুন 🔄নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন