গৌতম আদানি গোষ্ঠীকে সেবি ক্লিনচিট, হিন্ডেনবার্গের অভিযোগ ভিত্তিহীন প্রমাণিত

গৌতম আদানি গোষ্ঠীকে সেবি ক্লিনচিট, হিন্ডেনবার্গের অভিযোগ ভিত্তিহীন প্রমাণিত

গৌতম আদানি গোষ্ঠীকে সেবি ক্লিনচিট, হিন্ডেনবার্গের অভিযোগ ভিত্তিহীন প্রমাণিত

আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

গৌতম আদানি

সেবি তদন্ত শেষে গৌতম আদানি ও তার গোষ্ঠীকে সব অভিযোগ থেকে মুক্তি দিয়েছে।

Y বাংলা ডিজিটাল ব্যুরো: ভারতের বাজারে দুই বছর ধরে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা ধনকুবের গৌতম আদানির সংস্থা, অবশেষে সব অভিযোগ থেকে মুক্তি পেয়েছে। মার্কিন শেয়ার বিশ্লেষক সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ যে অনিয়মের অভিযোগ তুলেছিল, তা ভিত্তিহীন প্রমাণিত হয়েছে। ভারতের বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সেবি (Securities and Exchange Board of India) বিস্তারিত তদন্তের পর ক্লিনচিট দিয়েছে আদানি গোষ্ঠীকে।

হিন্ডেনবার্গের অভিযোগ ও বাজারে প্রভাব

২০২৩ সালের ২৫ জানুয়ারি হিন্ডেনবার্গ একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে। এতে দাবি করা হয়, আদানি সংস্থা দীর্ঘ এক দশকেরও বেশি সময় ধরে কারচুপি করে নিজেদের নথিভুক্ত সংস্থাগুলির শেয়ার দর বৃদ্ধি করেছে। পাশাপাশি, সেবির বিধি এড়িয়ে ভুঁইফোঁড় বিদেশি সংস্থার মাধ্যমে শেয়ার কিনে অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখার চেষ্টা করা হয়েছে।

এই রিপোর্ট প্রকাশের পর দেশের অভ্যন্তরে তো বটেই, আন্তর্জাতিক বাজারেও তীব্র প্রভাব পড়ে। আদানি সংস্থার শেয়ার হু হু করে পড়তে থাকে, এবং বিশ্বের ধনীতম ব্যক্তির তালিকায় তার অবস্থানও হঠাৎ কমে যায়। প্রাথমিকভাবে প্রায় ১৩ লক্ষ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয় সংস্থার।

সেবি তদন্ত ও ক্লিনচিট

আদানির বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপিত হওয়ার পর সেবি তদন্ত শুরু করে। আড়াই বছরের অনুসন্ধানের পর বৃহস্পতিবার, সেবি পৃথকভাবে দুটি অংশে বিশদ বিবৃতি প্রকাশ করে। তাতে বলা হয়েছে যে, আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যে সমস্ত অভিযোগ ছিল—অভ্যন্তরীণ লেনদেন, বাজারে কারসাজি বা শেয়ারবাজারের নিয়ম লঙ্ঘন—সেগুলি সব ভিত্তিহীন।

হিন্ডেনবার্গের দাবি ছিল, আদানিরা অর্থ পাচারের জন্য কয়েকটি প্রাইভেট সংস্থা ব্যবহার করেছে। তবে সেবি জানায়, যে সময়ে ওই লেনদেন হয়েছিল, তখন সেই সময়ের আইন লঙ্ঘিত হয়নি। আইন পরে সংশোধিত হয়েছে। সেবি আরও নিশ্চিত করেছে যে, আদানি গোষ্ঠী সমস্ত ঋণ পরিশোধ করেছেন, বরাদ্দ অর্থ সঠিক কাজে ব্যবহার করেছেন এবং কোনো অনিয়ম হয়নি।

SEBI অফিস

সেবি অফিসে আড়াই বছরের তদন্ত শেষে প্রকাশিত ক্লিনচিট।

বিশেষজ্ঞ প্যানেলের অনুসন্ধান

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে একটি বিশেষজ্ঞ প্যানেলও গঠন করা হয়েছিল। তাদের অনুসন্ধানও সেবির মতো ফলাফলের দিকে নির্দেশ করেছিল। তারা আদানির বিরুদ্ধে কোনও অনিয়মের প্রমাণ খুঁজে পায়নি।

গৌতম আদানির প্রতিক্রিয়া

সেবি ক্লিনচিট দেওয়ার পর গৌতম আদানি সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, ‘‘আমরা সবসময় বলে আসছি, হিন্ডেনবার্গের দাবি ভিত্তিহীন। এত দিনের তদন্তের পর সেবি-ও সেটাই বলল। স্বচ্ছতা এবং সততাই আদানি গোষ্ঠীর সম্পদ। এই ভুয়ো রিপোর্টটির জন্য যাঁদের ক্ষতি হয়েছে, যাঁরা টাকা হারিয়েছেন, আমরা তাঁদের জন্য গভীর ভাবে দুঃখিত। যাঁরা এভাবে ভুয়ো খবর ছড়ান, তাদের দেশের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত। ভারতের জনগণের প্রতি আমরা সর্বদা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’’

আর্থিক ও বাজারের প্রভাব

হিন্ডেনবার্গ রিপোর্ট প্রকাশের পর আদানি গোষ্ঠী প্রায় ১৩ লক্ষ কোটি টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিল। সংস্থার শেয়ার বাজারে মান হ্রাস পেয়েছিল। তবে সেবির ক্লিনচিট ও বিশেষজ্ঞ প্যানেলের ফলাফলের পর, বাজারে আস্থা ফেরার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে।

সারসংক্ষেপ

  • হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের অভিযোগ ভিত্তিহীন প্রমাণিত।
  • সেবি আড়াই বছরের তদন্ত শেষে ক্লিনচিট দিয়েছে।
  • বিশেষজ্ঞ প্যানেলও আদানির বিরুদ্ধে কোনও অনিয়মের প্রমাণ খুঁজে পায়নি।
  • আর্থিক ক্ষতি ও শেয়ার দর পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ায়।
  • গৌতম আদানি স্বচ্ছতা ও সততার প্রমাণ দিয়েছেন।

📢 সবার আগে নিউজ আপডেট পেতে আমাদের ফলো করুন

📰 রাজনীতি | ⚽ খেলা | 🎬 বিনোদন | 🌍 আন্তর্জাতিক খবর 👉 সবকিছু এক ক্লিকেই পান আপনার হাতে।

No comments:

আপনার মতামত এর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ 👇
👉 যদি মনে হয় বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ, পোস্টটি শেয়ার করুন 🔄নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন

Featured post

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারা অনুপ্রাণিত শোভন চট্টোপাধ্যায়, মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে স্বীকৃতি অভিষেক বন্দ্...

Search This Blog

Powered by Blogger.