বিধান ভবন ভাঙচুর মামলায় জামিন পেলেন বিজেপি নেতা রাকেশ সিং
বিধান ভবন ভাঙচুর মামলায় জামিন পেলেন বিজেপি নেতা রাকেশ সিং
🗓 আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
বিধান ভবন ভাঙচুর মামলায় অভিযুক্ত বিজেপি নেতা রাকেশ সিং
কলকাতার বিধান ভবন ভাঙচুর মামলা ঘিরে রাজ্য রাজনীতি আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। বৃহস্পতিবার শিয়ালদহ আদালতে শুনানিতে বিজেপি নেতা রাকেশ সিং-এর জামিন মঞ্জুর হলেও, আপাতত তিনি মুক্তি পাচ্ছেন না। কারণ, তাঁর নামে আরও একাধিক মামলা রয়েছে, যার কারণে তাঁকে এখনই জেল হেফাজতে থাকতে হবে।
ঘটনার সূচনা
এই মামলার সূত্রপাত হয় বিহারে আয়োজিত কংগ্রেসের এক জনসভা থেকে। অভিযোগ অনুযায়ী, সভা চলাকালীন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং তাঁর মায়ের বিরুদ্ধে অশ্রাব্য ভাষা ব্যবহার করা হয়। সেই বক্তব্য ঘিরে বিজেপি সমর্থকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়। অভিযোগ, এর জেরেই কলকাতায় বিধান ভবনে হামলা চালানো হয়।
সেই সময়কার একাধিক ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ওই ভিডিও ফুটেজে রাকেশ সিংকেও দেখা গিয়েছে বলে দাবি পুলিশের। আর এখান থেকেই তাঁকে মূল অভিযুক্ত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
পুলিশি তদন্ত ও গ্রেফতার
ঘটনার পর থেকেই রাকেশ সিং পলাতক ছিলেন। তাঁকে না পেয়ে প্রথমে পুলিশ গ্রেফতার করে তাঁর ছেলে শিবম সিং-কে। পুলিশের দাবি, শিবমকেও এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে আটক করা হয় এবং পরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
এরপর পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে ধীরে ধীরে উঠে আসে আরও তথ্য। তদন্তে জানা যায়, হামলার পরিকল্পনা এবং সংগঠনের ক্ষেত্রে রাকেশ সিংয়ের সরাসরি ভূমিকা ছিল। দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর অবশেষে তাঁকেও গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় কলকাতা পুলিশ।
এই ঘটনায় মোট আটজনকে গ্রেফতার করা হয়, যাদের মধ্যে শিবম সিং ইতিমধ্যেই জামিন পেয়েছেন। কিন্তু রাকেশ সিংয়ের ক্ষেত্রে আইনি লড়াই আরও জটিল হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আদালতের অবস্থান
বৃহস্পতিবার শিয়ালদহ আদালতে শুনানি চলাকালীন রাকেশ সিংয়ের জামিন মঞ্জুর করা হয়। তবে আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, তাঁর বিরুদ্ধে আরও মামলা থাকায় আপাতত তিনি জেল হেফাজতেই থাকবেন। এর অর্থ, রাকেশের আইনজীবীরা সাময়িক স্বস্তি পেলেও তাঁর মুক্তির সম্ভাবনা এখনই নেই।
বিচারকের মন্তব্য অনুযায়ী, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা থাকায় প্রতিটি মামলার ভিত্তিতে আলাদা শুনানি হবে। ফলে একটিতে জামিন পেলেও অন্য মামলার কারণে তাঁকে জেলে থাকতে হবে।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
এই ঘটনা ঘিরে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক মহলে তুমুল আলোচনা শুরু হয়েছে। বিজেপির দাবি, এটি একটি “রাজনৈতিক প্রতিহিংসা”। তাঁদের বক্তব্য, কংগ্রেস ও তৃণমূলের সঙ্গে যোগসাজশ করে রাজ্যের প্রশাসন বিজেপি নেতাদের হয়রানি করছে।
অন্যদিকে, কংগ্রেস ও তৃণমূলের দাবি, আইন অনুযায়ীই পদক্ষেপ করা হয়েছে। কারও বিরুদ্ধে প্রমাণ থাকলে আইন তার বিচার করবে। রাজনৈতিক লাভ বা ক্ষতির জায়গা থেকে প্রশাসন কাজ করছে না।
সামাজিক প্রভাব ও জনমত
বিধান ভবনের মতো একটি ঐতিহাসিক ভবনে হামলার ঘটনা সাধারণ মানুষের মনেও গভীর প্রভাব ফেলেছে। অনেকেই মনে করছেন, রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে ক্রমবর্ধমান সংঘর্ষ এবং অপশব্দ প্রয়োগের সংস্কৃতি থেকে এই ধরনের সহিংসতার জন্ম হচ্ছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় এই মামলাকে ঘিরে চলছে ব্যাপক আলোচনা। কেউ বলছেন, আইনের শাসন বজায় রাখতে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। আবার কেউ মনে করছেন, প্রশাসন রাজনৈতিকভাবে পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে কাজ করছে।
আইনি লড়াইয়ের পরবর্তী ধাপ
রাকেশ সিং এবং তাঁর আইনজীবীরা এখন সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তবে আইনি প্রক্রিয়া দীর্ঘ হতে পারে। কারণ, প্রতিটি মামলার আলাদা শুনানি এবং প্রমাণ উপস্থাপনের প্রয়োজন রয়েছে।
আইন বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই মামলার রায় রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বড় প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষ করে, আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপির ভাবমূর্তিতে এর প্রভাব পড়তে পারে।
উপসংহার
সব মিলিয়ে, বিধান ভবন ভাঙচুর মামলায় রাকেশ সিংয়ের জামিন মঞ্জুর হলেও তাঁর মুক্তি আপাতত সম্ভব হচ্ছে না। আরও একাধিক মামলা ঝুলে থাকায় তাঁর জেল হেফাজত অব্যাহত থাকবে। আদালতের কড়া অবস্থান এবং রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া মিলিয়ে স্পষ্ট—এই মামলার প্রভাব আগামী দিনে রাজ্য রাজনীতিকে আরও উত্তপ্ত করবে।
📢 সবার আগে নিউজ আপডেট পেতে আমাদের ফলো করুন
📰 রাজনীতি | ⚽ খেলা | 🎬 বিনোদন | 🌍 আন্তর্জাতিক খবর 👉 সবকিছু এক ক্লিকেই পান আপনার হাতে।
👍 ফলো করুন Facebook 💬 Join করুন WhatsApp গ্রুপে


No comments:
আপনার মতামত এর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ 👇
👉 যদি মনে হয় বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ, পোস্টটি শেয়ার করুন 🔄নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন