সামশেরগঞ্জ ঘটনা: ক্ষতিগ্রস্তেরা এখনও পুনর্বাসন পাননি, হাইকোর্টের কড়া অভিযোগ

সামশেরগঞ্জ ঘটনা: ক্ষতিগ্রস্তেরা এখনও পুনর্বাসন পাননি, হাইকোর্টের কড়া অভিযোগ

ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদে সামশেরগঞ্জ অশান্তি: ক্ষতিগ্রস্তরা এখনও ক্ষতিপূরণ বা পুনর্বাসন পাননি — হাইকোর্টের তীব্র অভিযোগ

Y বাংলা ডিজিটাল ব্যুরো | আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | কলকাতা হাই কোর্ট রিপোর্ট
সামশেরগঞ্জে অশান্তি ও ক্ষতিগ্রস্তদের পরিস্থিতি
সামশেরগঞ্জ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন না হওয়া প্রসঙ্গে কলকাতা হাইকোর্টের কড়া মন্তব্য।

Y বাংলা ডিজিটাল ব্যুরো: ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদের ঘটনাকে কেন্দ্র করে মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জে (Shamserganj Case) যে অশান্তি হয়েছিল, তার পরও ক্ষতিগ্রস্তরা ক্ষতিপূরণ বা পুনর্বাসন পাননি—এমনই একটি বিস্ফোরক অভিযোগকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্ট তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। বিচারপতি সৌমেন সেন রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা NIA—উভয়ের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন।

হাইকোর্টের সরাসরি প্রশ্ন: কোথায় পুনর্বাসন?

বিচারপতির কথায়, “দুর্গাপুজোর আগেও কি এদের পুনর্বাসন দেওয়া হল না?” আদালত স্পষ্টভাবে ভেবেছে যে — দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও ক্ষতিগ্রস্তরা কবে স্বাভাবিক জীবনে ফিরবেন, সেটি নিয়েই সন্দেহ রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তরা এখনও ঘরবাড়িহীন বেড়াচ্ছেন, অথচ প্রশাসন থেকে চোখে পড়ে এমন কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না।

আদালত বলল:
  • ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণ প্রদান সুদক্ষ এবং সময়োপযোগীভাবে হতে হবে।
  • যদি প্রয়োজন হয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এগিয়ে এসে তদন্তভার নেবে—তার মধ্যেও কোনও বাধা থাকা উচিত নয়।
  • কেউই প্রশাসনিক দায়িত্ব থেকে কুলকিনারা করতে পারবে না—আইনি জবাবদিহি প্রযোজ্য থাকবে।

NIA কি — কেন কেন্দ্রীয় সংস্থাকে টেনে আনা হচ্ছে?

হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, রাজ্যের তদন্তে ত্রুটি রয়েছে বলে অভিযোগ উঠছে; আবার কেন্দ্রীয় সংস্থাও স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে তদন্তে নামেনি। বিচারপতি উল্লেখ করেছেন, “NIA চাইলে আগেই তদন্তভার গ্রহণ করতে পারত, কোনও বাধা ছিল না। রাজ্যের তদন্তে ত্রুটি থাকার অভিযোগ উঠলে কেন্দ্রীয় সংস্থার সহায়তা গ্রহণ প্রাসঙ্গিক।”

ক্ষতিগ্রস্তদের অবস্থা — কিছুই মেলেনি

স্থানীয় সূত্র ও অভিযোগকারীদের বক্তব্য অনুযায়ী, বহু পরিবার এখনও অস্থায়ী শেল্টারে রয়েছেন। তাদের বাড়ি-ঘর নষ্ট হয়েছে, জীবিকা ব্যাহত হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা বা পুনর্বাসন মিলেনি বলে তারা জানান। আদালত এই বাস্তব পরিস্থিতির প্রতি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

সংক্ষিপ্ত টাইমলাইন (মূল পয়েন্ট):
  • ওয়াকফ আইন নিয়ে প্রতিবাদের সময় সামশেরগঞ্জে অশান্তি ঘটে।
  • পুলিশ ও প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ হয়; বেশ কিছু মামলা এবং তদন্ত শুরু হয়।
  • ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন/ক্ষতিপূরণও প্রক্রিয়ায় বলে জানানো হয়েছিল, কিন্তু বাস্তবে তা অসম্পূর্ণ থাকায় মামলাকারীরা হাইকোর্টে অভিযোগ করেন।
  • হাইকোর্ট মঙ্গলবার/বৃহস্পতিবার (সাম্প্রতিক শুনানি) রাজ্য ও NIA-র ভূমিকা নিয়ে তীব্র প্রশ্ন তুলেছে।
  • পরবর্তী শুনানি নির্ধারিত হয়েছে — ২০ নভেম্বর।

রাজ্য প্রশাসন ও NIA— দুইপক্ষেরও ভূমিকা প্রশ্নের মুখে

আদালতের বক্তব্য অনুযায়ী, যদি রাজ্যের তদন্তে কোনো ঘাটতি থেকে থাকে, তাহলে কেন্দ্রীয় সংস্থার সহায়তা নেয়া যেতে পারত। অপরদিকে যদি NIA-র স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষমতা বা ইচ্ছে থাকে, তারা আগেভাগেই তদন্তভার নিতে পারত। আদালত এই দুই ধারা—রাজ্য ও কেন্দ্র—কেউই দায়িত্ব এড়াতে পারবে না বলে প্রতিপাদ্য করেছেন।

আইনি প্রভাব ও ভবিষ্যত নির্দেশ

আদালত রাজ্য সরকারের কাছে তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে। পরবর্তী শুনানিতে আদালত রিপোর্ট মূল্যায়ন করে কঠোর নির্দেশনার নির্দেশ দিয়েছে—যেমন দ্রুতভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করা। বিচারপতি স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, প্রশাসনিক দায়িত্বজ্ঞানহীনতার জন্য কোনও ছাড় প্রদান করা হবে না।

স্থানীয় প্রতিক্রিয়া ও সমর্থন

স্থানীয় নেতারা ও সমাজকর্মীরা বলছেন, ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের ব্যাপারে তৎপরতা না থাকলে আইনগত পথ ছাড়াও গণতান্ত্রিক চাপ প্রয়োগ করা হবে। সামাজিক সংগঠনগুলিও পুনর্বাসন কার্যক্রম ত্বরান্বিত করার আহ্বান জানাচ্ছে।

কী চাচ্ছেন ক্ষতিগ্রস্তরা?
  • দ্রুত ও স্থায়ী পুনর্বাসনের ব্যবস্থা
  • ন্যায্য ক্ষতিপূরণ ও পুনর্গঠন অনুদান
  • পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ও পুনর্বাসনকালে রেশন-সহায়তা
  • আইনি ও মানসিক সহায়তা—দূর্বল পরিবারগুলো যাতে দ্রুত স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারে

পরবর্তী শুনানি — কী প্রত্যাশা?

২০ নভেম্বরের শুনানিতে আদালত রাজ্য সরকারের রিপোর্ট যাচাই করবে এবং প্রয়োজনে NIA-র তৎপরতা কেন গ্রহণ করা হয়নি তা নিয়ে কেন্দ্রেরও ব্যাখ্যা চাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আদালত যদি সিদ্ধান্ত নেন—তবে দ্রুত পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণের নির্দেশ জারি করা যেতে পারে, বা কেন্দ্রীয় তদন্তের নির্দেশও দেওয়া যেতে পারে।

📢 সবার আগে নিউজ আপডেট পেতে আমাদের ফলো করুন

📰 রাজনীতি | ⚽ খেলা | 🎬 বিনোদন | 🌍 আন্তর্জাতিক খবর — সবকিছু এক ক্লিকে পেতে আমাদের ফলো করুন

👍 ফলো করুন Facebook 💬 Join করুন WhatsApp গ্রুপে

🔎 নোট: এই প্রতিবেদনটি প্রকাশিত তথ্য ও আদালতে উঠা পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে প্রস্তুত করা হয়েছে। তদন্ত ও আদালতের পরবর্তী রায়ে পরিস্থিতি পরিবর্তিত হতে পারে—যদি আপনি চান, আমরা পরবর্তী আপডেট রিপোর্ট করে দেব।

No comments:

আপনার মতামত এর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ 👇
👉 যদি মনে হয় বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ, পোস্টটি শেয়ার করুন 🔄নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন

Featured post

উত্তরবঙ্গের বন্যা-ধস: কেন্দ্রের সাহায্য না পেয়ে তৃণমূলের তীব্র অভিযোগ ...

Search This Blog

Powered by Blogger.