“ভোটের আগে গেমচেঞ্জার চাল! মিঠুনের কাঁধে ভরসা রাখল বঙ্গ বিজেপি, অন্য নেতারা তবে কোথায়?”
ভোটের আগে মমতার পথেই হাঁটছে বঙ্গ বিজেপি — এবার গুরুদায়িত্ব মিঠুন চক্রবর্তীর কাঁধে
প্রকাশিত: 8 সেপ্টেম্বর 2025 | রিপোর্ট: স্থানীয় সংবাদদল
দীর্ঘদিন ধরেই রাজ্যের পুজো কমিটিগুলোকে সরকারি অনুদান দেওয়ার বিরোধিতা করে এসেছে বিজেপি। তথাকথিত “রাজ্যায়িত অনুদান” ও রাজনৈতিক পরোক্ষ সুবিধা প্রদানের অভিযোগের প্রেক্ষিতে গেরুয়া শিবির বারবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের সমালোচনা করেছে। অথচ ভোটের মরসুম ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে বিজেপিও মঞ্চে এবং পুজো-চর্চায় প্রভাব বিস্তার করতেই মমতার কৌশলের অনুকরণ করছে — এবার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে পুজো কমিটিগুলোকে আর্থিক সহায়তা করবে জেলা-স্তরে বিজেপি, আর ওই কাজটি করা হবে দলের তারকা নেতা ও অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তীর মাধ্যমে। দলে থাকা সূত্রে এই তথ্য সংগৃহীত হয়েছে। 0
সূত্রের বরাতে জানা গেছে, ২০২১ সালের নির্বাচনী মরসুমে জেলা-স্তরে ক্লাব ও পুজো কমিটিগুলোকে অর্থ পাঠানোর নাম করে রাজ্যের কিছু জায়গায় বড়সড় অনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল — নির্ধারিত পরিমাণ অর্থ মাঝপথে গায়েব হয়ে যাওয়া, আর কোন কোন ক্ষেত্রে অনুদানই না পৌঁছিয়ে নেতাদের কণ্ঠে সুবিধা ওঠার মতো অভিযোগ শোনা গিয়েছিল। এসব প্রেক্ষাপটে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকরা এবার একটি কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন: সরাসরি প্রাপ্তির পদ্ধতি ন্যূনতম তছরুপ রোধ করবে বলে মনে করছেন তারা। ফলে জেলা-সংবিধানিক নেতাদের হাতে বালকভর্তি টাকা না দিয়ে, প্রতিটি পুজো কমিটির প্রতিনিধিকে সরাসরি এসে অনুদান গ্রহণের নিয়ম চালু করা হবে — যাতে গৌণ পথ দিয়ে তহবিলের আন্দোলন সীমিত করা যায়। 1
কেন মিঠুন — এবং তার রাজনৈতিক গুরুত্ব
মিঠুন চক্রবর্তী চলচ্চিত্র ও জনমানসে দীর্ঘদিন ধরে পরিচিত মুখ। রাজনৈতিক পরিসরে তাঁর উপস্থিতি গেরুয়া শিবিরকে সাংস্কৃতিক ও সামাজিক ইম্প্যাক্ট বাড়াতে সহায়তা করে — বিশেষত পুজো-মণ্ডপের মতো জনসেবামূলক ও সাংস্কৃতিক প্ল্যাটফর্মে। একজন জনপ্ৰিয় অভিনেতা হিসেবে মিঠুনের ‘ফেস’ জেলায়-জেলায় ব্যাপক মানুষের সমাগম তৈরি করতে পারে, যা ভোটকৌশলে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। অনেকে মন্তব্য করেছেন, পুজো উৎসবকে কেন্দ্রে রেখে ভোট বাতাস বদলানোর প্রচেষ্টা চলছে — সেই কৌশলেই বিজেপি এবার মিঠুনকে মহড়া দেওয়ার দায়িত্ব দিয়েছে। 2
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, মিঠুনের মতো সাংস্কৃতিক আইকনকে সামনে করে বিজেপি দুই ধরণের লক্ষ্য অর্জন করতে চায়: (১) সাধারণ মানুষের কাছে দলকে আরও কাছাকাছি দেখা এবং (২) পুজো কমিটিগুলোর মঞ্চে, সমাজে এবং লোকাল মিডিয়ায় দৃশ্যমানতা বাড়ানো। ভোটকেন্দ্রিক দৃষ্টিকোণ থেকে এগুলো ছোট লক্ষ্য নয় — বিশেষত যেখানে সাংস্কৃতিক উৎসব পার্টি-লজিস্টিক ও জনসম্পৃক্ততার জন্য শক্ত ভূমিকা রাখে।
পিছনের আর্থিক কেলেঙ্কারির ভয় ও কেন্দ্রীয় জবাব
২০২১ সালের ভোটের সময় অনুদান বিতরণ নিয়ে ওঠা অভিযোগগুলোর কথা দলের শীর্ষ পর্যায়ের নজরে এসেছে বলে শোনা যাচ্ছে। অতীতে অনুদান বিলোপ বা বিতরণে স্বচ্ছতার অভাব হবার অভিযোগ উঠলে তা দলের ভাবমূর্তির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে — বিশেষত যেখানে স্থানীয় পর্যায়ে ক্ষুদ্র-মাঝারি ক্লাব আর সঞ্চালন কমিটিগুলো সরকারি বা পার্টি-অর্থের উপর নির্ভরশীল। তাই এবারের বদলে দেওয়া পদ্ধতি — সরাসরি প্রাপ্তি ও কেন্দ্রীয় তদারকি — মূলত সেই ঝুঁকি কমাতে নেওয়া হয়েছে বলে রাজনৈতিক সূত্রে মত করা হচ্ছে। 3
কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক ও জেলা পর্যায়ের নেতাদের নির্দেশে অনুদান সংগ্রহের জন্য ক্লাব-প্রতিনিধিদের সরাসরি এসে যোগদান করতে বলা হয়েছে — অর্থাৎ নগদ বা চেক হাতে বুঝিয়ে দেওয়া হবে নির্দিষ্ট স্থানে, যা ডকুমেন্টেড রাখার সুযোগ বাড়াবে। এমন ব্যবস্থায় অনিয়মের সম্ভাবনা কমবে এবং ‘মধ্যস্থতাকারী’দের হাত থেকে অর্থ সরে আসবে, এটাই পরিকল্পনার মূল উদ্দেশ্য বলে জানানো হয়েছে।
সমালোচনা ও প্রতিক্রিয়া
রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ এবং সমালোচকরা জানিয়েছেন — ভোটের আগে পুজো কমিটিগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ানো হলে সেটি ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক আচারকে রাজনৈতিকভাবে instrumentalise করা হবে বলে অভিযোগ ওঠে। অনেকেই বলছেন, যদি একটি রাজনৈতিক দল উৎসবের মঞ্চে আর্থিকভাবে উপস্থিতি বাড়ায়, তবে তা ধর্মীয় অনুষ্ঠানকে রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার অংশে পরিণত করে। এই ধরনের সমালোচনার মধ্যে দিয়ে গেরুয়া শিবিরও যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে নিজের নির্বাচনী কৌশল বলবৎ রাখতে চায়। অন্যদিকে, পুজো-কমিটির অনেক প্রতিনিধিই আর্থিক সহায়তা পেলে সাংগঠনিক চাপ কমবে বলে স্বীকার করছেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন প্রশাসনও নিয়মিতভাবে পুজো কমিটিগুলোকে দিচ্ছে সরকারি অনুদান; ২০২৫ সালের গরম সেশনে সরকার পুজো অনুদান বৃদ্ধি করে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে — সেই প্রেক্ষিতে প্রতিটি দলই উৎসবকে কেন্দ্র করে ভোট-কৌশল সাজাচ্ছে বলেই রাজনৈতিক পর্যালোচনায় উঠে এসেছে। 4
কি নির্দেশনা ঐতিহাসিকভাবে এসেছে এবং ভবিষ্যৎ কৌশল
বর্তমান সিদ্ধান্ত অনুযায়ী — জেলা নেতাদের হাতে তহবিল তুলে না দিয়ে সরাসরি প্রাপ্তির পদ্ধতিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। এছাড়া ফেরত প্রতিবেদনের ব্যবস্থা জোরদার করা হবে যাতে অনুদান কোথায় ব্যয় হচ্ছে সেই হিসাব-নিকাশ পাওয়া যায়। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এই পদক্ষেপ শুধু তছরুপ রোধ করবে না, বরং ভোটের সময় নিজেদের ‘প্রবাহ’ বজায় রাখতে সাহায্য করবে।
আগামী কয়েক সপ্তাহে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় মিঠুন চক্রবর্তীর অংশগ্রহণে অনুদান বিতরণী অনুষ্ঠানের মরশুম শুরু হলে সেটি সংবাদমাধ্যমে ব্যাপকভাবে তুলে ধরা হবে — এবং সেটা স্বাভাবিকভাবেই ভোটের আবহে রাজনৈতিক প্রভাব তৈরি করবে। ফলে যে দলই উৎসব ও সাংস্কৃতিক প্ল্যাটফর্ম নিয়ন্ত্রণ করবে, সে মাটিতে ভোটপ্রভাবও বাড়াতে পারবে — এটাই রাজনীতিবিদদের গণনায় সক্রিয় বিষয়।
📢 সবার আগে নিউজ আপডেট পেতে আমাদের ফলো করুন
📰 রাজনীতি | ⚽ খেলা | 🎬 বিনোদন | 🌍 আন্তর্জাতিক খবর 👉 সবকিছু এক ক্লিকেই পান আপনার হাতে।
👍 ফলো করুন Facebook 💬 Join করুন WhatsApp গ্রুপে


No comments:
আপনার মতামত এর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ 👇
👉 যদি মনে হয় বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ, পোস্টটি শেয়ার করুন 🔄নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন