সুপ্রিম কোর্ট কলকাতা হাইকোর্টের রায় বহাল রাখল — পার্ট-টাইম 'কর্মবন্ধু'দের সব আর্থিক সুবিধা দিতে রাজ্যবিধেয় নির্দেশ ।

সুপ্রিম কোর্ট কলকাতা হাইকোর্টের রায় বহাল রাখল — পার্ট-টাইম 'কর্মবন্ধু'দের সব আর্থিক সুবিধা দিতে রাজ্যবিধেয় নির্দেশ

সুপ্রিম কোর্ট কলকাতা হাইকোর্টের রায় বহাল রাখল — পার্ট-টাইম 'কর্মবন্ধু'দের সব আর্থিক সুবিধা দিতে রাজ্যকে নির্দেশ

তারিখ: 18 আগস্ট 2025 | রিপোর্ট: স্থানীয় হিউম্যান রিসোর্স্ ডেস্ক

পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অধীনে কাজ করা পার্ট-টাইম সাফাইকর্মী বা পরিচিত নাম 'কর্মবন্ধু'দের জন্য আইনি লড়াইতে বড়সড় সুসংবাদ। দেশের সর্বোচ্চ আদালত কলকাতা হাইকোর্টের সিদ্ধান্তকে বহাল রেখে রাজ্যকে নির্দেশ করেছে যে মামলাকারী কর্মীদের সমস্ত বকেয়া আর্থিক সুবিধা প্রদান করতে হবে — ফলে লক্ষাধিক অস্থায়ী কর্মীর পরিস্থিতি বদলের পথে। 0

এই রায়টি ২০২৫ সালের ১৮ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের চূড়ান্ত আদেশে ঘোষণা করা হয়। আদালত বলেছে যে তারা ভারতীয় সংবিধানের ধারা ১৩৬ অনুযায়ী কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে হস্তক্ষেপ করার মতো কোনও সঙ্গত কারণ খুঁজে পায়নি, ফলে হাইকোর্টের রায়ই চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে। এই মামলায় সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ এবং সিদ্ধান্ত রাজ্য সরকারের দেওয়া আবেদন (Special Leave Petition) খারিজ করার রূপ নিয়েছে। 1

ঘটনার পটভূমি (সংক্ষেপে)

বিষয়টি শুরু হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে— রাজ্যের খাদ্য ও সরবরাহ দপ্তরের অধীনে কর্মরত কয়েকজন অস্থায়ী সাফাইকর্মী (পার্ট-টাইম কর্মবন্ধু) তাদের বকেয়া আর্থিক সুবিধা, সমান কাজের জন্য সমান অধিকারের দাবি নিয়েই আদালতে যান। প্রথম স্তরে ২০১৭ সালের ২৭ জানুয়ারির মেমোর‍্যান্ডামের ভিত্তিতে ট্রাইব্যুনাল আবেদনকারীদের পক্ষে রায় দেয় এবং সমস্ত সুবিধা প্রদানের নির্দেশ দেয়। পরবর্তীতে ২০২২ সালে সেই রায় বিলোপিত হলে কর্মীদের মনে হত বড় ধাক্কা লেগেছে। কিন্তু তারা হাল ছাড়েনি এবং পুনরায় হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। হাইকোর্ট ২০১১ সালের ১৬ সেপ্টেম্বরের পুরনো মেমোর্যান্ডামকে ভর করে আবার কর্মীদের পক্ষে রায় দেয় এবং ২০১৬ সালের জুলাই থেকে বকেয়া আর্থিক সুবিধা ৯০ দিনের মধ্যে পরিশোধের নির্দেশ দেয়। 2

সুপ্রিম কোর্টে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন ও আদালতের মনোভাব

পশ্চিমবঙ্গ সরকার হাইকোর্টের ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে Special Leave Petition (SLP) দায়ের করে। তবে আদালত পর্যবেক্ষণ করে যে আবেদন দাখিল করতে সময়ের অমিতব্যয়ী বিলম্ব হয়েছে এবং আবেদনকারীর (অর্থাৎ রাজ্য সরকারের) ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। পরিণামে সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্টের সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপের জন্য পর্যাপ্ত কারণ না পাওয়ায় রাজ্য সরকারের SLP খারিজ করে দেয়। 3

মুখ্য সিদ্ধান্তের সারমর্ম:

  • কলকাতা হাইকোর্টের রায় বহাল থাকবে। 4
  • রায়ে বর্ণিত মামলাকারী কর্মীদের সমস্ত প্রকার আর্থিক সুবিধা — বকেয়া বেতন, ভাতা এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা— রাজ্য সরকারকে দ্রুতভাবে প্রদান করতে বলা হয়েছে। 5
  • এই রায় পশ্চিমবঙ্গের অন্যান্য অস্থায়ী কর্মীদের জন্য শক্তিশালী আইনি নজির স্থাপন করবে। 6

অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রভাব

এই রায়ের ফলে সরাসরি প্রভাব পড়বে প্রথমত মামলাকারী কাজকর্মীদের উপর — তাদের বকেয়া বেতন-ভাতা মিটলে স্বাভাবিক জীবনে আর্থিক স্থিরতা আসবে। দ্বিতীয়ত, সিদ্ধান্তটি সামগ্রিকভাবে অস্থায়ী শ্রমিকদের আত্মবিশ্বাস বাড়াবে; যারা নিজেদের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত তাদের অনেকে একই পথে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করার সাহস পাবেন। তবে মানতে হবে, এই রায় একেবারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে রাজ্যের সব অস্থায়ী কর্মীর কাছে সুবিধা পৌঁছে দেবে না— যারা এখনও বঞ্চিত আছেন, তাদেরকে আলাদাভাবে আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে এবং এই রায় তাদের জন্য শক্তিশালী আইনি ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে। 7

আইনি বিশ্লেষণ (সংক্ষিপ্ত)

সমালোচকরা বলছেন যে, কাজের প্রকৃতি 'পার্ট-টাইম' বলে চিহ্নিত করলেও যদি নিয়োগকালে সেই পদের জন্য sanctioned পোস্ট মঞ্জুর করা থাকে এবং নিয়মতান্ত্রিক নিয়োগ সম্পন্ন হয়ে থাকে, তখন সেই কর্মীরা ভাতা-বেতন ইত্যাদি পাওয়ার ক্ষেত্রে অযোগ্য নয়। আদালতও মূলত সেই দিকটিকেই গুরুত্ব দিয়েছে—একই ধাঁচের কেসে পূর্ববর্তী আদালত এবং শীর্ষ আদালত যে নীতি নিয়েছেন তা এখানেও প্রযোজ্য হয়েছে। এই রায় ভবিষ্যতে অনুরূপ অন্যান্য মামলায়ও বিচারিক আইনত প্রেক্ষাপট হিসেবে কাজ করবে। 8

কর্মীদের করণীয় ও পরবর্তী ধাপ

যেসকল অস্থায়ী কর্মী এখনও তাদের প্রাপ্যতা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন, তারা নিম্নলিখিত কাজগুলো বিবেচনা করতে পারেন — (ক) তাদের ব্যক্তিগত নিয়োগপত্র, নিয়োগের ধরণ ও পোস্টের স্বীকৃতি (sanctioned post) সম্পর্কিত কাগজপত্র সংগ্রহ করা; (খ) স্থানীয় হিউম্যান রিসোর্স বা শ্রম অধিদপ্তরে লিখিতভাবে দাবি জানানো; (গ) প্রয়োজন হলে আইনজীবীর সাহায্য নিয়ে হাই কোর্ট/কর্মক্ষেত্রভিত্তিক বিধি অনুযায়ী আইনি লড়াই ছেড়ে না দেওয়া। এই সুপ্রিম কোর্টের রায় তাদের আইনি অভিযাত্রায় শক্তিশালী সহায়ক হবে। 9

সরকারি ও প্রশাসনিক প্রতিক্রিয়া

রায় ঘোষণার পর রাজ্য সরকার বা সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞপ্তি বা নির্দেশিকা জারি করা নেই (লিখিতভাবে) — তবে আদেশ অনুসারে প্রশাসনকে দ্রুতভাবে কর্মীদের বকেয়া পরিশোধ নিশ্চিত করতে কার্যকর সংস্থাগত ব্যবস্থা নিতে হবে। (নোট: এই খবরটি প্রকাশের সময় পর্যন্ত প্রশাসনিক গাইডলাইন জারির তথ্যের জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরের বিজ্ঞপ্তি চেক করা প্রয়োজন)। 10

উপসংহার

দেশের সর্বোচ্চ আদালতের এই সিদ্ধান্ত পশ্চিমবঙ্গের অস্থায়ী পার্ট-টাইম কর্মীদের জন্য আইনি ও সামাজিকভাবে একটি বড় সাফল্য হিসেবে দেখা হচ্ছে। এটি প্রমাণ করে যে ধারাবাহিক আইনি লড়াই ও সঠিক প্রমাণ-প্রস্তাবের মাধ্যমে প্রাপ্যতার দাবিগুলো আদায় করা যায়। একই সঙ্গে এই রায় প্রশাসনিক দায়বদ্ধতার পাশাপাশি রাজ্য পর্যায়ে অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ-নীতি ও মজুরি কাঠামো পুনর্বিবেচনার ইঙ্গিতও দেবে — যাতে ভবিষ্যতে সমাধানগুলো ন্যায্য ও সময়োপযোগীভাবে কার্যকর করা যায়। 11

নোট: এই প্রতিবেদন তৈরিতে আদালতের আদেশ ও প্রাসঙ্গিক সংবাদ-রিলিজগুলোকে সূত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। (উল্লেখিত অনলাইন সূত্র: Supreme Court cause list, কলকাতা হাইকোর্ট সম্পর্কিত নথি ও সম্প্রতি প্রকাশিত সংবাদবিশ্লেষণ)।

📢 সবার আগে নিউজ আপডেট পেতে আমাদের ফলো করুন

📰 রাজনীতি | ⚽ খেলা | 🎬 বিনোদন | 🌍 আন্তর্জাতিক খবর 👉 সবকিছু এক ক্লিকেই পান আপনার হাতে।

👍 ফলো করুন Facebook 💬 Join করুন WhatsApp গ্রুপে

No comments:

আপনার মতামত এর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ 👇
👉 যদি মনে হয় বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ, পোস্টটি শেয়ার করুন 🔄নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন

Featured post

ভারতকে জ্যাভলিন ও এক্সক্যালিবার — আমেরিকার $93 মিলিয়ন অস্ত্রবিক্রয় অনুমোদন বিশ্ব সংবাদ: ভারতকে জ্যা...

Search This Blog

Powered by Blogger.