উত্তরবঙ্গের বন্যা: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মৃতদের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা ও হোমগার্ড চাকরির ঘোষণা
উত্তরবঙ্গের বন্যা: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মৃতদের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা ও হোমগার্ড চাকরির ঘোষণা

উত্তরবঙ্গের পাহাড়ি ও সমতলভূমি এলাকা টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত। শনিবার রাতের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ভুটান থেকে নেমে আসা জল, পাহাড়ি ঢল ও নদীর জলস্রোতের কারণে নাগরাকাটা ও ধূপগুড়ি এলাকা তলিয়ে গেছে। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, এই দুর্যোগে অন্তত ২৩ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। সোমবার সকালে এই পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে উত্তরবঙ্গের উদ্দেশ্যে রওনা দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
দমদম বিমানবন্দর থেকে রওনা দেওয়ার আগে মুখ্যমন্ত্রী মৃতদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, “মৃত্যুর ক্ষতিপূরণ কখনই যথেষ্ট হয় না। তবে বেঁচে থাকা পরিবারের জন্য আমরা পরিবার পিছু ৫ লক্ষ টাকা প্রদান করব। পরিবারের একজনকে হোমগার্ডের চাকরিও দেওয়া হবে।”
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিকদের জানান, “উত্তরবঙ্গে পৌঁছে নাগরাকাটা ও হাসিমারার প্রান্ত পর্যন্ত যাব। যতদূর সম্ভব দুর্গত এলাকায় পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করব। কতটা জল সামলাব? বিহার, উত্তরপ্রদেশ থেকে জল আসছে। গঙ্গা টইটম্বুর। ডিভিসি ইচ্ছেমতো জল ছেড়ে চলেছে। মাইথন, ডিভিসন, পাঞ্চেতের জন্য জলযন্ত্রণা ভোগ করছি। কলকাতার কী অবস্থা হয়েছিল তা আমরা জানি। ভুটান ও সিকিমের জল নাগরাকাটা ও ধূপগুড়িতে ভয়ংকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে।”
শুক্রবার ও শনিবার রাতে লাগাতার বৃষ্টির ফলে নদী ও খাল উজান থেকে নেমে আসা ঢলে তলিয়ে গেছে বহু এলাকা। জনগণ নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে। পাহাড়ি ও নিম্নাঞ্চলে মৃতদের সংখ্যা বেড়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের তৎপরতায় অনেককে উদ্ধার করা গেছে, তবে অনেক মানুষ এখনও বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছেন।
উদ্ধারকাজে নিয়োজিত দমকল, সেনা ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকরা বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে রাতভর কাজ করছেন। খাদ্য, পানি এবং মেডিকেল সাপোর্ট পৌঁছে দেওয়ার জন্য প্রশাসন বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে। স্থানীয় স্কুল ও কলেজে জরুরি শেল্টার ক্যাম্প খোলা হয়েছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়: “উত্তরবঙ্গের মানুষদের সাহায্য করাই আমাদের প্রধান কর্তব্য। দুর্ঘটনা ও বন্যার কারণে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদের পাশে থাকতে হবে। সরকারের সম্পূর্ণ সহযোগিতা রয়েছে।”
রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মৃতদের পরিবারকে আর্থিক সাহায্য ছাড়াও হোমগার্ডের চাকরির ব্যবস্থা করা হয়েছে যাতে পরিবার নিজের জীবিকা বজায় রাখতে পারে। এই পদক্ষেপকে স্থানীয়দের মধ্যে স্বস্তির বার্তা হিসেবে দেখছেন অনেকেই।
সংবাদ অনুযায়ী, নাগরাকাটা ও ধূপগুড়ি এলাকার বাসিন্দাদের জন্য দ্রুত ত্রাণ বিতরণ, খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আহত ও দুর্গতরা স্থানীয় হাসপাতাল ও নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসনের তদারকিতে উদ্ধারকাজ অব্যাহত রয়েছে।
দুর্গত এলাকায় মুখ্যমন্ত্রীর আগমনের ফলে ত্রাণ কার্যক্রম ত্বরান্বিত হবে এবং স্থানীয়দের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। নদীর বাঁধ, খাল ও নদীস্রোতের ওপর নজর রাখা হবে। প্রশাসনের পাশাপাশি রাজ্য সরকার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পর্যবেক্ষণ চালাবে।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এই ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগে ত্রাণ কার্যক্রমকে রাজনৈতিক রঙ দেওয়া উচিত নয়। দুর্যোগ কবলিত এলাকায় তৎপর থাকা স্থানীয় প্রশাসন ও সরকারের সহায়তা জরুরি। বন্যায় আক্রান্তদের পুনর্বাসন এবং মৃতদের পরিবারের সহায়তা দ্রুত নিশ্চিত করা আবশ্যক।
জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, নদীভাঙন ও পাহাড়ি ঢলে রাস্তা ও যোগাযোগ ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে উদ্ধারকারীরা উক্ত এলাকায় প্রবেশ করতে সক্ষম হয়েছেন। স্থানীয় সরকারি ও বেসরকারি সাহায্যকর্মীরা মিলে খাদ্য, পানি, ওষুধ এবং অন্যান্য জরুরি সামগ্রী বিতরণ করছেন।
পরিস্থিতি মনিটর করার জন্য রাজ্য সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দপ্তর এবং জেলা প্রশাসন ২৪ ঘণ্টা কাজ করছে। পরিস্থিতি স্থিতিশীল না হওয়া পর্যন্ত উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকলকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
📢 সবার আগে নিউজ আপডেট পেতে আমাদের ফলো করুন
📰 রাজনীতি | ⚽ খেলা | 🎬 বিনোদন | 🌍 আন্তর্জাতিক খবর 👉 সবকিছু এক ক্লিকেই পান আপনার হাতে।
👍 ফলো করুন Facebook 💬 Join করুন WhatsApp গ্রুপে
No comments:
আপনার মতামত এর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ 👇
👉 যদি মনে হয় বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ, পোস্টটি শেয়ার করুন 🔄নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন