ছত্তিশগড়ে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা: হুগলির পাঁচ পর্যটকের মৃত্যু
ছত্তিশগড়ে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা: হুগলির পাঁচ পর্যটকের মৃত্যু

Y বাংলা ডিজিটাল ডেস্ক: ছত্তিশগড়ের কানহা ন্যাশনাল ফরেস্ট ঘুরতে গিয়ে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন হুগলির ডানকুনি এলাকার পাঁচজন শিক্ষক ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা। এই দুর্ঘটনায় আরও কয়েকজন গুরুতর জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন। খবর পৌঁছতেই এলাকায় নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ডানকুনি শ্রীরামকৃষ্ণ বিদ্যাশ্রম উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষিকা ও তাঁদের পরিবার পুজোর ছুটিতে ছত্তিশগড় বেড়াতে গিয়েছিলেন। রবিবার তাঁরা একটি এসইউভি ভাড়া করে কানহা ন্যাশনাল ফরেস্ট ঘুরতে যান। গাড়িটিতে চালক-সহ মোট ১০ জন ছিলেন। ঘোরাঘুরি শেষে তাঁরা বিলাসপুর স্টেশনের দিকে ফিরছিলেন। বিকেলের দিকে জাতীয় সড়কে তাঁদের গাড়ির সঙ্গে একটি ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষ এতটাই ভয়াবহ ছিল যে গাড়ির সামনের অংশ সম্পূর্ণভাবে দুমড়ে-মুচড়ে যায়।
স্থানীয়দের তৎপরতায় দুর্ঘটনার পরপরই স্থানীয়রা উদ্ধার কাজে নামেন। তাঁরা পুলিশকে খবর দেন এবং আহতদের গাড়ি থেকে বের করে হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালের চিকিৎসকরা পাঁচজনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। বাকিদের গুরুতর অবস্থায় ভর্তি করা হয়েছে। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন তিনজন শিক্ষিকা এবং তাঁদের পরিবারের দুই সদস্য। আহতদের মধ্যে রয়েছেন এক শিশু ও দুই প্রবীণ যাত্রী।
পর্যটক দলের সদস্যরা শ্রীরামপুর, নদিয়া ও কলকাতার বিভিন্ন জায়গার বাসিন্দা ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। ডানকুনি স্কুলে দুর্ঘটনার খবর পৌঁছাতেই স্তব্ধ হয়ে যায় গোটা প্রতিষ্ঠান। সহকর্মী ও ছাত্রছাত্রীরা শোকে স্তব্ধ। হুগলি জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ সুবীর মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, “এই দুর্ঘটনা অত্যন্ত মর্মান্তিক। ডানকুনি স্কুলের বর্তমান ও প্রাক্তন দুই শিক্ষিকাই এই দলে ছিলেন। ছত্তিশগড়ে আহত ও নিহত পরিবারের সদস্যদের প্রয়োজনীয় সব সহায়তা দেওয়া হবে।”
হুগলির ডিআই এবং অতিরিক্ত জেলা শাসক (উন্নয়ন) ইতিমধ্যেই ছত্তিশগড় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন বলে জানা গিয়েছে। মৃতদেহগুলি পশ্চিমবঙ্গে ফেরানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। রাজ্য প্রশাসনের পক্ষ থেকেও পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে। শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ সুবীর মুখোপাধ্যায়ের পাশাপাশি সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ও বিষয়টি ব্যক্তিগতভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। তিনি বলেন, “এই বিষয়ে মুখ্যসচিবের সঙ্গে কথা হয়েছে। মুখ্যসচিব বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন এবং পরিবারের পাশে প্রশাসন থাকবে।”
স্থানীয় প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে অতিরিক্ত গতি এবং সামনের ট্রাকের হঠাৎ ব্রেক করাকে প্রাথমিকভাবে সন্দেহ করা হচ্ছে। দুর্ঘটনাস্থলে ট্রাক চালককে আটক করা হয়েছে এবং তদন্ত শুরু হয়েছে। পুলিশ জানাচ্ছে, আহতদের বিবৃতি থেকে ঘটনার পুরো চিত্র পরিষ্কার হবে।
দীর্ঘ পুজো ছুটির আনন্দ মুহূর্তেই পরিণত হল শোকে। স্কুল, পরিবার, এবং গোটা ডানকুনি এলাকায় এখন একটাই প্রার্থনা — আহতরা যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন।
হ্যাশট্যাগ: #ChhattisgarhAccident #HooghlyTeachers #KanhaNationalForest #RoadAccident #BengalNews
No comments:
আপনার মতামত এর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ 👇
👉 যদি মনে হয় বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ, পোস্টটি শেয়ার করুন 🔄নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন