সিঙ্গাপুরে জুবিন গর্গের রহস্যজনক মৃত্যু — CID গ্রেফতারের পর তদন্তে চাঞ্চল্যকর মোড়

গুয়াহাটি: সিঙ্গাপুরে জুবিন গর্গের রহস্যজনক মৃত্যু — CID গ্রেফতারের পর তদন্তে চাঞ্চল্যকর মোড়

গুয়াহাটি: সিঙ্গাপুরে জুবিন গর্গের রহস্যজনক মৃত্যু — CID গ্রেফতারের পর তদন্তে চাঞ্চল্যকর মোড়

প্রকাশক: ওয়াসীমা সুলতানা  |  তারিখ: ৮ অক্টোবর ২০২৫  |  রিপোর্ট: গুয়াহাটি
Zubeen Garg ও সন্দীপন গর্গ
ছবি: জুবিন গর্গ (ডান) এবং সন্দীপন গর্গ—CID সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুসারে সন্দীপন ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন।

দেশের উত্তর-পূর্বের জনপ্রিয় সংগীত পরিচালক ও গায়ক জুবিন গর্গ-এর (৫২) রহস্যজনক মৃত্যু ১৯ সেপ্টেম্বর সিঙ্গাপুরে ঘটেছে—তার পর থেকেই ঘটনাটি নিয়ে চলছে তীব্র চলমান তদন্ত। ঘটনার শুরু থেকেই রহস্য ও ষড়যন্ত্র-অভিযোগ মিশ্রিত আলোচনা চলেছে; সম্প্রতি মামলায় এক নতুন মোড় এসেছে যখন ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (CID) গায়কের আপন আপোদাস্ব সৎভাই ও অসম পুলিশের অফিসার সন্দীপন গর্গ-কে গ্রেফতার করেছে এবং তাকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছে।

সূত্রের বরাতে জানা গেছে, ১৯ সেপ্টেম্বর গুয়াহাটি থেকেই নর্থ ইস্ট ইন্ডিয়া ফেস্টিভ্যাল-এ যোগ দিতে সিঙ্গাপুর গিয়েছিলেন জুবিন। সেখানে একটি ইয়ট ট্রিপে অংশ নেওয়ার সময় সমুদ্রের কাছে সাঁতার কাটার পর রহস্যজনকভাবে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন এবং পরে হাসপাতালে পৌঁছে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকে ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে স্থানীয় ও জাতীয় স্তরে নানা তদন্ত ও জল্পনা শুরু হয়।

প্রসঙ্গগত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য (সারাংশ):
  • জুবিন গর্গ ১৯ সেপ্টেম্বর সিঙ্গাপুরে সমুদ্রের কাছে সাঁতার কাটার সময় নিখোঁজ হন; পরে তাকে হাসপাতালে নিলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
  • CID ও SIT তদন্তে গায়কের ম্যানেজার, অনুষ্ঠানের আয়োজক এবং দুই সহকর্মী—শামকানু মহন্ত, সিদ্ধার্থ শর্মা, শেখরজ্যোতি গোস্বামী ও অমৃতপ্রভা মহন্তসহ কয়েকজনকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার বা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে এবং তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
  • পুলিশ ঘটনার তদন্তের অংশ হিসেবে কিছু ক্ষেত্রে হত্যার অভিযোগ (বিএনএস/আইপিসি-এর সংশ্লিষ্ট ধারায়) অন্তর্ভুক্ত করেছে এবং মামলাটি বর্তমানে উচ্চমাত্রার বিচারকীয় অনুসন্ধান ও সাইলো-জোরা তদন্তের অধীনে।
  • স্থানীয় সরকার, বিশেষত রাজ্যের মন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রী ঘটনাটির দ্রুত ও স্বচ্ছ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন এবং জনগণের শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।

তদন্তকারি সূত্র বলছেন, জিজ্ঞাসাবাদ ও প্রাথমিক সূত্র অনুসন্ধানে কিছু প্রাসঙ্গিক ভিডিও ফুটেজ এবং উপস্থিত ব্যক্তিদের বিবরণ পেয়েছে SIT ও CID। ওই ভিডিওগুলিতে দেখা গেছে, ইয়ট ট্রিপ চলাকালে জুবিন কেবল একা সাঁতার কাটছিলেন না—কয়েকজনই তাঁর সঙ্গে ছিলেন, কেউ তাঁকে ঘিরে ছিল, আর কেউ ভিডিও তুলে রেখেছিলেন। তদন্তকারীরা ওই ফুটেজ এবং ব্যক্তিদের মোবাইল ফোনের ডেটা বিশ্লেষণ করছেন যাতে স্পষ্টভাবে বোঝা যায় ঘটনাক্রম কিরূপ ছিল।

জবানবন্দি অনুযায়ী, একাধিক গ্রেফতারকৃত ব্যক্তি তদন্তে বিভিন্ন পর্যায়ে জানিয়েছে যে ঘটনাটি দুর্ঘটনার মতোই মনে হলেও কিছু অস্বাভাবিক দিক রয়েছে। এক গ্রেফতারকৃত সহকর্মী দাবি করেছেন যে গায়ক হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং কিছু সময় পর তাকে উদ্ধার করা হলেও পরে বাঁচানো যায়নি—তবে আরেক গ্রেফতারের মাটির সূত্রে অভিযোগ ওঠেছে যে হয়তো কোনো প্ররোচনা বা বিষক্রিয়া থাকতেই পারে; এ ধরনের দাবিও তদন্তে তোলা হয়েছে।

ঘটনার পরে রাজ্যব্যাপী শোক ও উদ্বেগ দেখা দেয়। বৃহৎ সংখ্যক ভক্ত এবং শিল্পমহল শোকাহত হলেও একই সময় ঘটনাটি নিয়ে কটূক্তি, অপপ্রচার ও রাজনৈতিক দ্বন্দ্বও দেখা দিয়েছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ঘটনাটির ন্যায্য বিচার ও প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা চাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। সিঙ্গাপুর প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে ওই ঘটনায় প্রযুক্তিগত সহায়তা নেওয়া হচ্ছে—তবে সিঙ্গাপুর থেকে সরাসরি প্রমাণ সংগ্রহ বা ফরেনসিক রিপোর্ট আসা কিছুটা সময়সাপেক্ষ কাজ।

আইনগত তথা ন্যায়বিচার সম্পর্কিত নিয়তি:

এই ধরনের রকমারি ঘটনা তদন্তে আদালত প্রক্রিয়া, রিমান্ড ও জিজ্ঞাসাবাদ—এই তিনটি অংশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সন্দীপন গর্গকে CID হেফাজতে নেওয়ার পর আজ তাঁকে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (CJM) আদালতে পেশ করা হয়েছে এবং পুলিস রবিবারের রিমান্ডের জন্য আবেদন করলেও আদালত বিচারিক কারণ বিবেচনায় গ্রহণ করে সাত দিনের রিমান্ড প্রদান করতে পারে। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে যেসব ধারায় অভিযোগ এনেছে পুলিশ—তারা যদি বাংলাদেশ/সিঙ্গাপুর ইন্টারঅ্যাকশনের প্রয়োজন পড়ে, তাহলে আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে রেকোয়েস্ট করা হতে পারে।

স্থানীয় রাজনৈতিক মহল ও ভক্তদের মধ্যে অনেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন দাবি-অভিযোগ করছেন—কেউ বলছেন গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত না করলে সরকারের প্রতি আস্থা নষ্ট হবে, আবার কেউ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ষড়যন্ত্রের কথা বলছেন। পুলিশি তদন্তে রাজনৈতিক কোনো হস্তক্ষেপ যাতে না ঘটে, সে বিষয়ে প্রশাসনও বারবার আশ্বস্ত করেছে যে তদন্ত স্বাধীনভাবেই চালানো হবে।

বর্তমানে তদন্তকারীরা নিম্নলিখিত গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো যাচাই করছেন: (১) ইয়ট ও সাঁতার সংক্রান্ত যে ভিডিও ও ফুটেজ আছে—তার সম্পূর্ণ ক্রনোলজি; (২) যেসব ব্যক্তিরা ঐ সময়ে ইয়টে ছিলেন—তাদের গতিবিধি ও মোবাইল/কমিউনিকেশন ডেটা; (৩) গায়কের শারীরিক মর্যাদাসূচক রিপোর্ট ও সিঙ্গাপুর থেকে প্রাপ্ত মেডিক্যাল রিপোর্ট; (৪) ঘটনার আগে-পরে ওই আয়োজনের আর্থিক লেনদেন ও দায়িত্বশীলদের দায়িত্ব-পরিসর।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আন্তর্জাতিক ঘটনায় জটিলতা বেশি থাকে—কারণ প্রাথমিক প্রমাণ-উপাদান বিদেশে পাওয়া গেলে তা আনতে কূটনৈতিক ও প্রক্রিয়াগত সময় লাগে। তবুও ভারতীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলো ঠিকভাবে সিঙ্গাপুর প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয়ে কাজ করলে দ্রুত অর্থপূর্ণ ফল পাওয়া সম্ভব। জনসাধারণের আস্থা ফিরিয়ে পেতে সর্বোপরি দরকার স্বচ্ছতা ও সময়মতো তথ্য প্রকাশ।

এদিকে পরিবারের পক্ষ থেকে তারা চাইছেন—দ্রুত এবং সুষ্ঠু তদন্ত হোক যাতে মর্মান্তিক ভাবে বিদায় নেওয়া শিল্পীর প্রতি ন্যায় বিচার নিশ্চিত হয়। পরিবার ও ভক্তগণ রাষ্ট্রকে আস্থা দেখিয়ে রেখেছেন এবং প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ করেছেন যেন তথ্য আড্ডা-সূত্রে গোপন রাখা না হয়।

#ZubeenGarg #জুবিনগর্গ #SandipanGarg #CID #সিঙ্গাপুরমৃত্যু #নর্থইস্টফেস্টিভ্যাল #তদন্তচালু
রিপোর্টার: ওয়াসীমা সুলতানা | এসাইনড অফিস—গুয়াহাটি
নোট: এই প্রতিবেদনটি সংবাদশৈলীতে প্রস্তুত করা হয়েছে—প্রাথমিক সূত্র ও সরকারি বিবৃতি অনুযায়ী তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে; তদন্ত চলমান থাকায় ভবিষ্যতে কিছু তথ্য পরিবর্তিত হতে পারে।

📢 সবার আগে নিউজ আপডেট পেতে আমাদের ফলো করুন

📰 রাজনীতি | ⚽ খেলা | 🎬 বিনোদন | 🌍 আন্তর্জাতিক খবর 👉 সবকিছু এক ক্লিকেই পান আপনার হাতে।

👍 ফলো করুন Facebook 💬 Join করুন WhatsApp গ্রুপে

No comments:

আপনার মতামত এর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ 👇
👉 যদি মনে হয় বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ, পোস্টটি শেয়ার করুন 🔄নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন

Featured post

দুর্গাপুর গণধর্ষণ: সিবিআই তদন্ত দাবি পরিবারের, পুনর্নির্মাণে পুলিশের নজর দুর্গাপুর গণধর...

Search This Blog

Powered by Blogger.