দুর্যোগ পরিদর্শনে হামলা: রক্তাক্ত বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু ও বিধায়ক শংকর ঘোষ হাসপাতালে
দুর্যোগ পরিদর্শনে গিয়ে রক্তাক্ত বিজেপি সাংসদ ও বিধায়ক — ঘটনাস্থল থেকে হাসপাতালে নেওয়ার সময় ফেসবুক লাইভে ভয়াবহ সূচনা

সোমবার সকালে নাগরাকাটা, বামনডাঙা ও নেউটিয়া অঞ্চলে ত্রাণ ও দুর্যোগ পরিদর্শনে গিয়েছিলেন মালদহ উত্তরের সাংসদ খগেন মুর্মু ও শিলিগুড়ির বিধায়ক শংকর ঘোষ। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নদীপথ ও বিস্তীর্ণ প্লাবিত এলাকা সরেজমিন যাচাই করতে গেলে হঠাৎই কিছু প্রতিহিংসাপরায়ণ ব্যক্তি তাঁদের লক্ষ্য করে হামলা চালায়। ঘটনাস্থলে ইট, লাঠি ও জুতো নিক্ষেপ করা হয়; সেই আঘাতে খগেন মুর্মু ও শংকর ঘোষ দু’জনেই রক্তাক্ত হন। কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা করিয়ে দ্রুতই তাঁদের শহরের একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়।
হামলার সময় গৃহীত একটি ফেসবুক লাইভ ভিডিওতে শংকর ঘোষ নিজের কণ্ঠে বিশদ বর্ণনা দেন। তিনি বলেন, “আমরা ত্রাণ পৌঁছে দিতে গিয়েছিলাম; এক পর্যায়ে কিছু মানুষ ‘দিদি দিদি’ বলে এসে আমাদের ওপর চড়াও হয়। শুরুতে গালাগালি—পরে ইট ছোঁড়া শুরু হয়। আমার গাড়ির কাচ ভেঙে যায়, সারাটা শরীর কাচে ভর্তি; খগেনদার মাথায় রক্ত পড়ছে। মূলত নিরস্ত মানুষদের সাহায্যে গিয়েছিলাম—কেন এই আচরণ, সেটাই আমাদের বুঝে ওঠা যাচ্ছে না।” তাঁর ভাষায়, পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ ছিল যে তিনি গাড়ির সিটের তলায় শুয়ে না পড়লে হতে পারত মারাত্মক আঘাত।
হামলার পর মহল্লার বেশ কয়েকটি বাড়িতেই ভাঙচুরের তথ্য পাওয়া গেছে এবং পরিস্থিতি শান্ত না হওয়ায় স্থানীয়রা ভয় ও অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন। দুর্গত এলাকায় বন্যার প্রভাব এখনও রয়ে গেছে—রাস্তা, ঘরবাড়ি এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা বড় ক্ষতিগ্রস্ত। ত্রাণ বিতরণ করতে গিয়ে সংঘর্ষের ঘটনা তীব্র উদ্বেগ তৈরি করেছে—বিশেষত যেখানে সাহায্যার্থীদের নিরাপত্তা বজায় রাখা জরুরি। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, দুর্যোগপরবর্তী উত্তেজনা ও পাল্টা রাজনৈতিক অভিযোগ কখনো কখনো পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে।
স্থানীয় বিএনপি/ত্রাণকর্মী ও সাধারণ মানুষ একদিকে বলছেন—এমন পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীদের মধ্যে শৃঙ্খলাবদ্ধ সহযোদ্ধা থাকা দরকার এবং ত্রাণ কার্যক্রমকে রাজনৈতিক রং দেয়া উচিত নয়। অপরদিকে রাজনৈতিক দলগুলোর সমর্থকরা নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরছেন। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে ঘটনার তদন্ত চলছে, বোমা-স্কোয়াড বা অতিরিক্ত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী পাঠানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে যদি পরিস্থিতি অশান্ত হয়।
শংকর ঘোষ (ফেসবুক লাইভে): “আমি জানি না কেন তারা আমাদের উপর এতটা আক্রোশ দেখিয়েছে। আমরা সাহায্যের হাত বাড়িয়েছিলাম—কেউ কি সাহায্য নিতে পছন্দ করেনি? তাদের প্রশ্ন ছিল—'কেন এসেছ'—অন্যায়ভাবে এগিয়ে এসে তারা মারধর শুরু করে। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, দুর্যোগের সময় ভুল তথ্য, বিশৃঙ্খলা এবং স্থানীয় আবেগের উত্তেজনা সহিংসতা বাড়াতে পারে। দ্রুত, স্বচ্ছ ও সংবেদনশীলভাবে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা এবং স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে সমন্বয় বাড়ানো যাতে থাকে—এগুলো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জরুরি। এছাড়া, ঘটনার সত্যতা ও দোষীদের চিহ্নিত করতে কড়া তদন্তভিত্তিক ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান করা হয়েছে।
ঘটনা সম্পর্কে রাজ্য ও জেলা প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া পাওয়া মাত্রি আমরা আপডেট করে দেব। এখনও পর্যন্ত পুলিশের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে যে তদন্ত শুরু হয়েছে এবং ঘটনায় আহতদের চিকিৎসার পাশাপাশি আক্রান্ত এলাকা ঘিরে নিরাপত্তা বাড়ানো হচ্ছে। রাজনৈতিক দলের স্তরে বিবৃতি প্রত্যাশিত; ঘটনার ব্যাখ্যা ও দোষীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার দাবি উত্থাপিত হয়েছে।
পরিস্থিতি শান্ত হলে ঘূর্ণিঝড়-প্রভাবিত ও প্লাবিত এলাকার মানুষের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দিতে দ্রুত পদক্ষেপ অব্যাহত রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে। সহায়ক সংস্থাগুলো এবং প্রশাসনের তদ্বিরেই মূল লক্ষ্য হওয়া দরকার যাতে পুনর্বাসন প্রক্রিয়া দ্রুত এগোতে পারে এবং রাজনৈতিক সংঘাতের কারণে মানুষের ক্ষতিটি আরও বেড়ে না যায়।
📢 সবার আগে নিউজ আপডেট পেতে আমাদের ফলো করুন
📰 রাজনীতি | ⚽ খেলা | 🎬 বিনোদন | 🌍 আন্তর্জাতিক খবর 👉 সবকিছু এক ক্লিকেই পান আপনার হাতে।
👍 ফলো করুন Facebook 💬 Join করুন WhatsApp গ্রুপে
No comments:
আপনার মতামত এর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ 👇
👉 যদি মনে হয় বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ, পোস্টটি শেয়ার করুন 🔄নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন