সোনম ওয়াংচুক গ্রেফতারের বিরুদ্ধে হেবিয়াস কর্পাস: সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রকে নোটিস
সোনম ওয়াংচুকের এনএসএ-আটক: গীতাঞ্জলির হেবিয়াস কর্পাস আবেদনে সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রকে নোটিস

লাদাখের রাজধানী লেহে ২৪-২৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সংঘটিত সহিংস ঘটনার পর পরিবেশকর্মী ও জনজীবন-সংলগ্ন আন্দোলনের মুখপাত্র সোনম ওয়াংচুকে ২৬ সেপ্টেম্বর জাতীয় নিরাপত্তা আইনের ধারায় (এনএসএ) গ্রেফতার করে কর্তৃপক্ষ এবং পরে তাঁকে যোধপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। ওই ঘটনার তদন্ত ও গ্রেফতার সংক্রান্ত আইনি বৈধতা নিয়ে বর্তমানে শীর্ষ আদালত প্রশ্ন তুলেছে। 2
গীতাঞ্জলি জে ওয়াংমো সুপ্রিম কোর্টে অভিষিক্ত হেবিয়াস কর্পাস আবেদনে যুক্তি দিয়েছেন যে, তাঁর বা তাঁর স্বামীর প্রতি গ্রেফতারের কারণ সম্পর্কে তাঁকে কোনো নোটিস বা অনুলিপি জানানো হয়নি এবং গ্রেফতারের পর থেকে তাঁকে স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে দেয়া হচ্ছে না। আবেদনটি (আর্টিকেল ৩২ এর অধীনে) ৩২ নম্বর ধারার ভিত্তিতে দায়ের করা হয়েছে এবং এতে ২২ নম্বর ধারা অনুযায়ী গ্রেফতারের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় সরকারের পাশাপাশি জম্মু ও কাশ্মীর এবং রাজস্থান প্রশাসনকে নোটিস পাঠিয়েছে। 3
বিষয়টি যে মাত্র আইনি নয়, তা রয়ে গেছে রাজনৈতিক ও মানবাধিকারগত প্রেক্ষাপটেও — লাদাখের এক বড় অংশই দীর্ঘকাল ধরে পূর্ণ রাজ্য মর্যাদা এবং সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলভুক্তির দাবি তুলছে। বহু মাস ধরে চলা এই আন্দোলনের মধ্যেই সোনম ওয়াংচুক অনশন ও জনসংযোগের মাধ্যমে অংশগ্রহণ করছিলেন; কেন্দ্র বলছে যে আন্দোলনকে ভ্রান্তভাবে তীব্র করা ও সহিংসতা উস্কানির অভিযোগ রয়েছে, এমনকি কেন্দ্রীয়ভাবে 'Arab Spring' রূপক ব্যবহার করে তাঁর বিরুদ্ধে আঞ্চলিক অস্থিরতা সৃষ্টির অভিযোগ তোলা হয়েছে বলে সরকারি বিবৃতিতেও আছে। অপরদিকে সমর্থকরা বলেন, তিনি একটি শান্তিপূর্ণ ও সাংবিধানিক আন্দোলনের মুখ্য কণ্ঠস্বর ছিলেন। 5
হেবিয়াস কর্পাস আবেদনটি শুধুই ব্যক্তিগত মুক্তির অনুরোধ নয়—এটি গ্রেফতারের প্রক্রিয়া, নোটিশ প্রদান, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সূত্র ও শাখা-নিবন্ধন এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিতকরণের ওপর একটি বিস্তৃত আইনি প্রশ্নও তুলে ধরছে। আবেদনপত্রে উল্লেখ রয়েছে যে, যদি গ্রেফতারের কারণ পরিবারের কাছে ও আইনজীবীদের কাছে না জানানো হয়, তাহলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি উপযুক্ত আইনি প্রতিরক্ষা গড়ে তুলতে পারবেন না এবং সেই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বোর্ড/কর্তৃপক্ষের সামনে যথাযথ প্রতিনিধিত্বও বাধাগ্রস্ত হবে। 6
সুপ্রিম কোর্টে পর্যবেক্ষণ করে বেঞ্চ (বিচারপতি অরবিন্দ কুমার ও বিচারপতি এনভি আঞ্জারিয়া) কেন্দ্রকে কড়া প্রশ্ন করেছে — কেন গীতাঞ্জলি জে ওয়াংমোকে নোটিস বা অনুলিপি আগাম দেওয়া হয়নি এবং কেন তাঁকে স্বামীর সঙ্গে প্রাথমিক সাক্ষাৎকার ও পুনরাবৃত্তি দেখা থেকে বঞ্চিত রাখা হয়েছে। আদালত এই দিকগুলো সরকারি জবাব দাবি করেছে এবং শুনানি ১৪ অক্টোবর নির্ধারণ করে বেশ কয়েকটি সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে নোটিস জারি করেছে। 7
আইন-বিশ্লেষকরা বলছেন, এনএসএ ধারায় গ্রেফতারের ক্ষেত্রে কবে এবং কোথায় নোটিস দিতে হবে সে বিষয়ে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া ও মানবাধিকার রক্ষার বিধান বিবেচ্য; একই সঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তা ও গণতান্ত্রিক অধিকার—দুটি পরস্পরবিরোধী দিকও আদালত দেখতে পারেন। মামলার ফলাফল কেবল ব্যক্তিগত মুক্তি নির্ধারণ করবে না, বরং ভবিষ্যতে অনুরূপ এনএসএ প্রয়োগ ও পারিবারিক-নোটিশ সংক্রান্ত প্রশাসনিক আচরণে আইনগত একটি প্রিসিডেন্ট স্থাপন করতে পারে। 8
বাকিতে বলা যায়, লাদাখে চলমান আন্দোলনের পটভূমি, ২৪ সেপ্টেম্বরের ঘটনার তীব্রতা, সার্বিক নিয়ন্ত্রণমূলক সিদ্ধান্ত এবং নাগরিক নাগরিকদের বক্তব্যের সীমা—এই সব কিছুকে এখন আদালত গুরুত্ব সহকারে পর্যালোচনা করবে। ১৪ অক্টোবর হাই-প্রোফাইল এই মামলায় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা ও রায় সরকারি নীতিনির্ধারণে ও ভবিষ্যৎ প্রশাসনিক সিদ্ধান্তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
📢 সবার আগে নিউজ আপডেট পেতে আমাদের ফলো করুন
📰 রাজনীতি | ⚽ খেলা | 🎬 বিনোদন | 🌍 আন্তর্জাতিক খবর 👉 সবকিছু এক ক্লিকেই পান আপনার হাতে।
👍 ফলো করুন Facebook 💬 Join করুন WhatsApp গ্রুপে
No comments:
আপনার মতামত এর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ 👇
👉 যদি মনে হয় বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ, পোস্টটি শেয়ার করুন 🔄নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন