উত্তরবঙ্গের বন্যা: ১৭ জনের মৃত্যু, শুভেন্দু অধিকারীর প্রশাসনিক সমালোচনা
উত্তরবঙ্গের বন্যা: ১৭ জনের মৃত্যু, শুভেন্দু অধিকারীর প্রশাসনিক সমালোচনা
উত্তরবঙ্গের পাহাড়ি ও সমতল এলাকা টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত। বৃষ্টির কারণে ধস ও নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে, যার ফলে দার্জিলিং, আলিপুরদুয়ার, জলদাপাড়া, কোচবিহার-সহ বিস্তীর্ণ অঞ্চল জলমগ্ন হয়েছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। বহু মানুষ এখনও আশ্রয়হীন এবং পর্যটক আটকা পড়েছেন। প্রশাসন ও উদ্ধারকারী দল তাদের সমতলে আনার চেষ্টা চালাচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে কলকাতায় দুর্গাপুজো কার্নিভালের আয়োজন নিয়ে কটাক্ষ করেছেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর প্রশ্ন, ‘মুখ্যমন্ত্রী কেন উত্তরবঙ্গকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন না?’ তিনি বলেন, ‘কার্নিভাল নাকি বাংলার ঐতিহ্য! তা দশমীর চার দিন পর সরকারি অনুদান আর প্রশাসনিক চোখ রাঙানির কারণে প্রতিমা নিরঞ্জন আটকে রেখে, মিছিল করিয়ে ঘাটে যাওয়া কবে থেকে বাংলার ঐতিহ্য হয়ে গেল?’
‘কলকাতা ভেসে যাওয়া ও কিছু নিরীহ মানুষ বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যাওয়ার পরেও মুখ্যমন্ত্রী পুজো উদ্বোধন নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। এখন কার্নিভাল নিয়ে ব্যস্ত। এক বছর আগের কথা মনে পড়ে যায়, যখন বলেছিলেন ‘উৎসবে ফিরুন’, তবেই তো লোকে আনন্দে মেতে থাকবে, ন্যায্য প্রশ্ন করবে না।’
উত্তরবঙ্গের বন্যার জন্য প্রশাসনিক ব্যর্থতাকেই দায়ী করেছেন শুভেন্দু। তাঁর প্রশ্ন, ‘মুখ্যমন্ত্রী চটজলদি উত্তরবঙ্গ যেতে আগ্রহী নন কেন? সেখানে ডিভিসি নামক বলির পাঁঠা নেই দোষারোপ করার জন্যে? নাকি ওখানে গিয়েও চিন, ভুটান, নেপালের বহিরাগত জলের তত্ত্ব দেবেন?’
এই বিষয় নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের এক মুখপাত্র জানান, ‘উত্তরবঙ্গ বিপুল বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত। সিকিম, ভুটান থেকে আসা নদীগুলিও বিপদ বাড়াচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী পুরো নজর রাখছেন, বৈঠক করেছেন, নির্দেশ দিয়েছেন এবং মনিটর করছেন। সোমবার নিজে যাচ্ছেন। প্রশাসন এবং দল সংশ্লিষ্ট এলাকায় নেমে পড়েছে। মানুষের পাশে আছে।’
উত্তরবঙ্গের এই বন্যা শুধু মানুষের জীবনই বিপন্ন করছে না, পাশাপাশি পাহাড়ি এলাকা ও সমতল এলাকার অবকাঠামোও ধ্বংস হচ্ছে। নদীর জল বেড়ে যাওয়ায় রাস্তা বন্ধ, ঘরবাড়ি ও হোমস্টে ক্ষতিগ্রস্ত, বিদ্যুৎ ও পানীয় জলের সরবরাহ ব্যাহত হয়েছে। প্রশাসন উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম চালাচ্ছে।
দার্জিলিং, মিরিক ও আলিপুরদুয়ারে পর্যটকরা এখনো আটকা পড়েছেন। প্রশাসন বিকল্প রুট ব্যবহার করে তাদের সমতলে আনার চেষ্টা করছে। শিলিগুড়ি-কালিম্পঙ রুট খোলা থাকলেও নদীর পানি বৃদ্ধি ও ধসের কারণে যানবাহনের চলাচল সীমিত।
বন্যার কারণে বনাঞ্চলও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হাতি, গন্ডার ও অন্যান্য বন্যপ্রাণী নদী পার হওয়ার সময় প্রাণ হারাচ্ছে। বন সংরক্ষণ সংস্থা উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম চালাচ্ছে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী কয়েক দিনে আরও ভারী বৃষ্টি হতে পারে। প্রশাসন জনসচেতনতা বাড়াতে টেলিভিশন, রেডিও ও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে সতর্কতা জারি করেছে।
শিশু, মহিলা ও প্রবীণদের জন্য নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। স্কুল ও কলেজ বন্ধ রাখা হয়েছে। স্থানীয় পুলিশ, সেনা ও NDRF টিম উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমে যুক্ত আছে।
পর্যটক ও স্থানীয় মানুষদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে দূরে থাকুন এবং প্রশাসনের নির্দেশনা মেনে চলুন। সরকার বিকল্প রুট ব্যবহার করে দ্রুত সমাধান করছে।
উত্তরবঙ্গের বন্যা ও ধস প্রমাণ করছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ কতটা হঠাৎ এবং ভয়ংকর হতে পারে। প্রশাসন ও উদ্ধারকারী দল ত্রাণ কার্যক্রমে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে।
📢 সবার আগে নিউজ আপডেট পেতে আমাদের ফলো করুন
📰 রাজনীতি | ⚽ খেলা | 🎬 বিনোদন | 🌍 আন্তর্জাতিক খবর 👉 সবকিছু এক ক্লিকেই পান আপনার হাতে।
👍 ফলো করুন Facebook 💬 Join করুন WhatsApp গ্রুপে
No comments:
আপনার মতামত এর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ 👇
👉 যদি মনে হয় বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ, পোস্টটি শেয়ার করুন 🔄নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন