মৌসম নুর: তৃণমূল ছাড়ছেন কি? — মালদা রাজনীতিতে জল্পনা

মৌসম নুর: তৃণমূল ছাড়ছেন কি? — মালদা রাজনীতিতে জল্পনা

মৌসম নুর: তৃণমূল ছাড়ছেন কি? — মালদা রাজনীতিতে জোরালো জল্পনা

মালদা, 8 অক্টোবর 2025 • রিপোর্ট: Y বাংলা ডিজিটাল ডেস্ক
মৌসম নুর — মালদা
মালদা কেন্দ্রে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে রাজ্যসভার সাংসদ মৌসম নুর (ফাইল ছবি)

দুর্গাপুজো শেষ হতেই মালদার রাজনৈতিক বাতাসে নতুন এক গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে — রাজ্যসভার সাংসদ মৌসম নুর কি তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে ফের কংগ্রেসে ফিরে আসছেন? স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্মে এ নিয়ে আলোচনা তীব্র। যদিও মৌসম নিজে বারবার বলেছেন, তিনি তৃণমূলে একনিষ্ঠ ও দলের নির্দেশ মেনে কাজ করে যাবেন, তবুও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এই সময়ে থাকা তাঁর গতিবিধি ও পারিবারিক পটভূমি বিশ্লেষণ করে সম্ভাব্য কৌশল দেখছেন।

মৌসম নুরের রাজনৈতিক যাত্রা প্রথাগত ও পারিবারিকভাবে গড়া। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন নিয়ে পড়াশোনা করেছিলেন। রাজনীতিতে প্রবেশের আগেই তাঁর পরিবার মালদার প্রভাবশালী রাজনৈতিক পরিবারের সদস্য হিসেবে পরিচিত। মা রুবি নুর কংগ্রেস থেকে বিধায়ক ছিলেন — সেই ঐতিহ্যই মৌসমকে ঘিরে ভালো যোগাযোগ গড়ে তোলে। ২০০৮ সালে মায়ের মৃত্যুর পরে তিনি সুজাপুর কেন্দ্রে উপনির্বাচন জিতে বিধায়ক হন; পরবর্তীকালে ২০০৯ সালে লোকসভায় জয়ী হন এবং মানুষের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগের মর্যাদা লাভ করেন।

সংক্ষেপে:
  • মৌসম নুর — প্রাক্তন কংগ্রেস কার্যকারী, ২০১৯-এ তৃণমূলে যোগদান।
  • ২০২০-তে তৃণমূলের নির্দেশে রাজ্যসভার সাংসদ হন।
  • আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জল্পনা ও কংগ্রেসের 'ওদার উন্মুক্ত' ঘোষণা দৃশ্যমান।

২০১৯ সালে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর থেকে মৌসম মালদা জেলার তৃণমূল কাঁধে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর আমলেই মালদায় তৃণমূল প্রথমবার বিধায়ক আসনে জয়ী হয় বলে দলের কount করে। কিন্তু লোকসভা এবং পরবর্তী নির্বাচনে তার ফলাফল মিশ্র ছিল; মাঝে বিজেপি প্রার্থী খগেন মুর্মুর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবং হারও ছিল। ২০২০-এ তৃণমূল নেতৃত্ব তাঁকে রাজ্যসভার সংসদ সদস্য (Rajya Sabha MP) হিসেবে দিল্লি পাঠায় — সেই পদে থাকাকালীন তিনি কেন্দ্রীয় স্তরে রাজনৈতিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন।

এই সময়ে রাজনৈতিক সমালোচনার এক অংশ ছিল — লোকসভা কেন্দ্রের নির্বাচন এবং তৃণমূলে যোগদানের পর তাঁর স্থানীয় গ্রহণযোগ্যতা কিছুটা প্রশ্নবিদ্ধ। পার্টির জেলা নেতৃত্বের পদ থেকে সরিয়ে রাখা হওয়াও তাঁর রাজনীতির একটি প্রবণতা নির্দেশ করে। এসব প্রেক্ষিতে রাজনৈতিক মহলের ধারণা, রাজ্যসভার মেয়াদ শেষ হলে — যা আগামী মার্চে হবে — তাঁর সেলফ-রিইনভেনশনের সুযোগ থাকতে পারে।

অন্যদিকে কংগ্রেস জেলা সভাপতি ইশা খান চৌধুরির মন্তব্যও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। তিনি জানিয়েছেন, যারা তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দিতে চান, তাদের কাছে দরজা খোলা রয়েছে। ইশার কড়া বক্তব্যের এক দিক হলো — স্থানীয় পর্যায়ে কংগ্রেস পুনরায় শক্তি সঞ্চয় করছে এবং প্রয়োজনে যারা ফিরে আসতে চান তাদের স্বাগত জানাবে।

মৌসম নিজে সাংবাদিকদের বলেছেন, তিনি তৃণমূলে আছেন, দলের যে দায়িত্ব দেওয়া হবে তা তিনি পালন করবেন এবং বর্তমানে তাঁকে দলের তরফে কোনও সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি। এই ধরনের বক্তব্য অনেকে 'দলীয় নিয়মানুস্য' হিসেবে দেখলেও স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষণ আরও সূক্ষ্ম: অনেক ক্ষেত্রেই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা পার্টি বদলে দলগত স্থান ও নির্বাচনী সুযোগ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেন তখনই যখন স্থানীয় রাজনৈতিক পরিবেশ ও ভোটার সমর্থন সে পথে ঠেকায়।

স্থানীয় নেতাদের কথায়, মৌসমের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ এখনও আছে — গলিসরকারি অনুষ্ঠানে উপস্থিতি, সামাজিক কার্যক্রম ও জনসংযোগ বেড়েছে। এটাই ইঙ্গিত দেয় যে তিনি নিজের রাজনৈতিক সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছেন। একই সঙ্গে কংগ্রেসের উন্মুক্ত নামা-নেওয়া নীতির কারণে অনেকেই মনে করছেন, যদি মৌসম কংগ্রেসে ফিরে যান, তা মালদা রাজনৈতিক মানচিত্রে বড় ধরনের তরঙ্গ তৈরি করবে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বোর্ডের নম্বর নির্ভর করবে প্রধানত তিনটি বিষয়ের উপর — (১) মৌসমের নিজস্ব জনপ্রিয়তা এবং মাঠে তার সমর্থন, (২) তৃণমূলে তার অবস্থান ও ভবিষ্যৎ প্রস্তাবনা, এবং (৩) কংগ্রেসের স্থানীয় কৌশল ও ক্ষমতা পুনরুজ্জীবনের ষড়যন্ত্র। যেকোনও সিদ্ধান্তই নির্বাচনী ফলাফলে প্রভাব ফেলবে এবং ২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনের আগে গণনাগত ভাবে গুরুত্ব পাবে।

প্রভাব:
  • মৌসম কংগ্রেসে ফিরে গেলে মালদা-নগর ও মালদা উত্তর কেন্দ্রে কংগ্রেসের শক্তি বৃদ্ধি পেতে পারে।
  • তৃণমূলের স্থানীয় দলে শূন্যতা তৈরি হতে পারে, বিশেষ করে ওই অঞ্চলে সামনের নির্বাচনী প্রার্থী তালিকা পরিকল্পনায় বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে।
  • রাজ্যের সামগ্রিক রাজনীতিতে এ ধরনের দলে নাম 변경 বাতাস আরও বাড়াবে এবং রাজনৈতিক আলাপ-আলোচনার সূর তৈরি করবে।

ফলে এখনকার অবস্থায় প্রতিটি পক্ষই সংযত পদক্ষেপ নিচ্ছে। মৌসম স্পষ্ট করে বলছেন, “দল যদি দায়িত্ব দায়, আমি করব,” আর কংগ্রেস বলছে — দরজা খোলা। মাঠের রাজনীতি, ভোটার-আচরণ এবং দলে থাকা কৌশলই চূড়ান্ত নিয়ামক হবে।

কপিরাইট অবস্থা: এই প্রতিবেদটি কপিরাইট-মুক্ত (Public Domain / CC0) হিসেবে প্রকাশ করা হলো — আপনারা এটি অনায়াসে কপি, সম্পাদনা ও পুনঃপ্রকাশ করতে পারবেন। প্রস্তুতকারক: Y বাংলা ডিজিটাল ডেস্ক।
আপডেট: ৮ অক্টোবর ২০২৫ • রিপোর্টার: Y বাংলা ডিজিটাল ডেস্ক •

📢 সবার আগে নিউজ আপডেট পেতে আমাদের ফলো করুন

📰 রাজনীতি | ⚽ খেলা | 🎬 বিনোদন | 🌍 আন্তর্জাতিক খবর 👉 সবকিছু এক ক্লিকেই পান আপনার হাতে।

👍 ফলো করুন Facebook 💬 Join করুন WhatsApp গ্রুপে

No comments:

আপনার মতামত এর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ 👇
👉 যদি মনে হয় বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ, পোস্টটি শেয়ার করুন 🔄নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন

Featured post

দুর্গাপুর গণধর্ষণ: সিবিআই তদন্ত দাবি পরিবারের, পুনর্নির্মাণে পুলিশের নজর দুর্গাপুর গণধর...

Search This Blog

Powered by Blogger.