নাগরাকাটায় বিপর্যস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সাধারণ মানুষকে নিরাপদে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন
উত্তরবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতিতে সরজমিনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
Y বাংলা ডিজিটাল ডেস্ক: টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গ। নাগরাকাটায় বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু এবং বিধায়ক শংকর ঘোষের উপর হামলার ঘটনার প্রেক্ষাপটেও সোমবার সরজমিনে এলাকায় পৌঁছেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি সাধারণ মানুষকে শান্ত থাকার বার্তা দিয়েছেন এবং রাজনৈতিক বিভাজন ভুলে দুর্গতদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
উত্তরবঙ্গে বন্যার প্রভাব লক্ষণীয়। ভুটান পাহাড় থেকে নেমে আসা জলে নদী-নালা উজাড় হয়েছে। রাস্তা ধ্বংস এবং বিচ্ছিন্ন সেতুতে বাসিন্দারা বিপাকে পড়েছেন। এই পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে সকালেই এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সঙ্গে ছিলেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ ও ডিজিপি রাজীব কুমার।
মুখ্যমন্ত্রী পৌঁছেই নাগরাকাটায় দুর্গতদের সঙ্গে দেখা করেন। তিনি জানান, “রাজনীতি ভুলে এই সময় আমাদের দায়িত্ব দুর্গতদের পাশে দাঁড়ানো।” পাশাপাশি তিনি সাধারণ মানুষকে সতর্ক করেন, কোনও প্ররোচনায় পা না দিতে।
ত্রাণ কার্যক্রম ও নিরাপত্তা
নাগরাকাটার কালীখোলা এলাকা পরিদর্শনকালে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আগামী দু-একদিনের মধ্যে ফের জোয়ার আসতে পারে। এখানে রাস্তার ধারে সরকারের তরফে ত্রাণশিবির খোলা হয়েছে। যারা এসেছেন, তারা ভালো করেছেন। যারা এখনও নিজের বাড়িতে রয়েছেন, দ্রুত এখানে চলে আসুন। নিরাপদে থাকবেন। খাওয়া-দাওয়ার বিষয়ে চিন্তা করতে হবে না।”
ভাঙা রাস্তা, ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি ও বিচ্ছিন্ন সেতু মেরামতের দায়িত্ব রাজ্য সরকার নিজে নেবে। যেসব বাড়ি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে, সেগুলোও পুনর্নির্মাণ করা হবে। প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে সমন্বয় করে দ্রুত ত্রাণ বিতরণ নিশ্চিত করা হচ্ছে।
প্রাকৃতিক পরিস্থিতি ও প্রশাসনিক উদ্যোগ
উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন নদী ও স্রোতের উপর নজর রাখা হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সরকারি ত্রাণকর্মীরা খাদ্য, পানীয়, এবং চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছে দিচ্ছেন।
সেখানে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ত্রাণ কার্যক্রমে সবাইকে সহযোগিতা করতে হবে। প্রশাসন এবং সরকার সক্রিয়ভাবে কাজ করছে যাতে কেউ বিপদে না পড়ে।” পাহাড়ি ঢল ও প্লাবনের ফলে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা দ্রুত পুনর্নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
বাসিন্দাদের অভিজ্ঞতা
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, “রাস্তাঘাট ভেঙে, সেতু বিচ্ছিন্ন হওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত হয়েছে। সরকার ও প্রশাসনের ত্রাণশিবির অনেক সাহায্য করছে, তবে প্রাথমিক সেবা দ্রুত পৌঁছানো প্রয়োজন।” মুখ্যমন্ত্রী উপস্থিত থাকায় তাদের আশা বেড়েছে।
ত্রাণ কার্যক্রমের সঙ্গে সঙ্গতি রাখার জন্য স্থানীয় বাহিনী এবং সেনা কর্মীরাও এলাকায় সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। প্রাথমিক জরুরি চিকিৎসা এবং খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করা হচ্ছে।
রাজনৈতিক পরিপ্রেক্ষিত
নাগরাকাটায় বিজেপি সাংসদ ও বিধায়কের উপর হামলার ঘটনার প্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রী শান্ত থাকার বার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেন, “এ সময় রাজনীতি ভুলে আমরা শুধু দুর্গতদের পাশে থাকতে হবে।” রাজনৈতিক উত্তেজনা সত্ত্বেও প্রশাসন কাজ করছে যাতে মানুষ নিরাপদে থাকে।
মুখ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেছেন, “ত্রাণ কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন হবে। কারো ঘর ভেঙে গেলে তা পুনর্নির্মাণের দায়িত্ব সরকার নেবে। রাজ্য সরকার এবং প্রশাসন সব সময় জনগণের পাশে থাকবে।”
সার্বিক পরিস্থিতি
উত্তরবঙ্গের দুর্গত এলাকা দ্রুত স্বাভাবিক করতে প্রশাসন এবং রাজ্য সরকার সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। নদী, স্রোত ও পাহাড়ি এলাকার প্রভাবিত অংশে পর্যাপ্ত ত্রাণ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্থানীয় মানুষদের নিরাপদ স্থানে স্থানান্তর ও খাদ্য সহায়তা নিশ্চিত করা হয়েছে।
ত্রাণ কার্যক্রম, রাস্তা মেরামত, বাড়ি পুনর্নির্মাণ এবং প্রশাসনিক নজরদারির মাধ্যমে রাজ্য সরকার এবং প্রশাসন মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরজমিন পরিদর্শন সেই প্রচেষ্টাকে আরও দৃঢ় করেছে।
উত্তরবঙ্গের এই বন্যা পরিস্থিতি সামলাতে প্রশাসন, সেনা এবং ত্রাণকর্মীরা একযোগে কাজ করছে। স্থানীয় মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর পাশাপাশি রাজ্য সরকার প্রাথমিক পর্যায়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পুনর্গঠনের দায়িত্ব নিচ্ছে।
📢 সবার আগে নিউজ আপডেট পেতে আমাদের ফলো করুন
📰 রাজনীতি | ⚽ খেলা | 🎬 বিনোদন | 🌍 আন্তর্জাতিক খবর 👉 সবকিছু এক ক্লিকেই পান আপনার হাতে।
👍 ফলো করুন Facebook 💬 Join করুন WhatsApp গ্রুপে
No comments:
আপনার মতামত এর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ 👇
👉 যদি মনে হয় বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ, পোস্টটি শেয়ার করুন 🔄নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন