পাকিস্তানকে ধুয়ে দিল আফগানিস্তান
পাকিস্তানকে ধুয়ে দিল আফগানিস্তান
ইসলামাবাদ, ১৮ অক্টোবর: পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ দাবি করেছেন, আফগানিস্তানের তালিবান বর্তমানে ভারতের হয়ে 'প্রক্সি যুদ্ধ' (Proxy War) লড়ছে। তাঁর এই মন্তব্যের জেরে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। আফগানিস্তান ও ভারতের পক্ষ থেকে এই দাবি সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করা হয়েছে।
খাজা আসিফ সম্প্রতি এক সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকারে বলেন, “আফগানিস্তানের ভেতরে ভারতের প্রভাব বাড়ছে। তালিবান ভারতের হয়ে কাজ করছে এবং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে।” তাঁর এই বক্তব্য পাকিস্তানের অভ্যন্তরেও ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই মন্তব্যে পাকিস্তানের কূটনৈতিক অবস্থান আরও দুর্বল হতে পারে।
তবে আফগানিস্তানের প্রাক্তন সাংসদ ও মানবাধিকারকর্মী মরিয়ম সোলাইমানখিল খাজা আসিফের বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে বলেন, “যথেষ্ট নাটক হয়েছে। পাকিস্তান কখনও আফগানদের বন্ধু ছিল না। বরং পাকিস্তানই বছরের পর বছর ধরে আফগানদের ব্যবহার করে নিজেদের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক লাভ করেছে। আশ্রয় দেওয়ার নামে আফগান শরণার্থীদের কাছ থেকে সস্তা শ্রম, আন্তর্জাতিক তহবিল ও কূটনৈতিক সুবিধা আদায় করেছে পাকিস্তান।”
- পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফের দাবি—তালিবান ভারতের হয়ে কাজ করছে।
- আফগান প্রাক্তন সাংসদ মরিয়ম সোলাইমানখিলের পাল্টা মন্তব্য—পাকিস্তানই আফগানদের শোষণ করেছে।
- ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আসিফের দাবিকে “সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন” বলে জানিয়েছে।
- বিশ্লেষকদের মতে, পাকিস্তানের এই কূটনৈতিক অবস্থান আন্তর্জাতিক মহলে দেশটির বিশ্বাসযোগ্যতা ক্ষুণ্ণ করছে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানান, পাকিস্তান নিজস্ব ব্যর্থতা ঢাকতে সবসময়ই ভারতকে দোষারোপ করে। “আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি নিয়ে পাকিস্তানের মন্তব্য সম্পূর্ণ অযৌক্তিক,” বলেন তিনি।
বিশ্ব বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই বিবৃতিগুলি দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতাকে আরও জটিল করে তুলছে। ইতিমধ্যেই আফগান-পাক সীমান্তে গুলিবিনিময় ও বাণিজ্যিক অচলাবস্থার কারণে উত্তেজনা বাড়ছে। দুই দেশের নাগরিকরাও একে অপরের প্রতি অবিশ্বাস প্রকাশ করছেন।
আফগান সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, তালিবান সরকারের মুখপাত্রও পাকিস্তানের মন্তব্যের বিরোধিতা করেছেন। তিনি বলেন, “আফগানিস্তান কোনও দেশের প্রক্সি নয়। আমরা স্বাধীন দেশ এবং আমাদের নিজস্ব নীতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিই।”
সব মিলিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার কূটনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোড়ন ফেলেছে এই বিতর্ক। আন্তর্জাতিক কূটনীতিকরা সতর্ক করে বলেছেন, ইসলামাবাদ ও কাবুলের মধ্যে সম্পর্ক যতদিন বিশ্বাসের ঘাটতিতে থাকবে, ততদিন সীমান্ত অঞ্চলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কঠিন হবে।



No comments:
আপনার মতামত এর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ 👇
👉 যদি মনে হয় বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ, পোস্টটি শেয়ার করুন 🔄নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন