ভারতে লা নিনার প্রভাবে ভয়ঙ্কর শীত: ২০২৫ সালের শেষের দিকে হাড়কাঁপানো শীতের পূর্বাভাস
ভারতে লা নিনার প্রভাবে ভয়ঙ্কর শীত: ২০২৫ সালের শেষের দিকে হাড়কাঁপানো শীতের পূর্বাভাস
ছোটবেলায় পাঠ্যবইয়ে শেখা ছয় ঋতু আজকাল আর দেখা যায় না। গ্রীষ্ম, বর্ষা ও কিছুটা শীতের মধ্যে মানিয়ে নিতে হচ্ছে ভারতবাসীকে। সাম্প্রতিক সময়ে আবহাওয়ার চরম অস্থিরতাই ‘নিউ নর্ম্যাল’। কখনও প্রচণ্ড গরম, কখনও দেরিতে আসা বর্ষা, আবার হঠাৎ থামতে না চাওয়া বৃষ্টি—এসবই এখন সাধারণ দৃশ্য। তবে এবার আবহাওয়ার অস্থিরতার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ভয়ঙ্কর শীতের পূর্বাভাস, যার পোশাকি নাম ‘লা নিনা’।
আরও খবর পড়ুন , অবিরাম বর্ষণে জলস্ফীতি, পশ্চিম মেদিনীপুরে বন্যার আশঙ্কা
হিসাব অনুযায়ী বর্ষাকাল অগস্টে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেপ্টেম্বরের শেষেও ভারী বৃষ্টি থেকে রেহাই পাওয়া যায়নি। হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ডের পাহাড়ি অঞ্চলে অতিবৃষ্টি, মেঘভাঙা বৃষ্টি ও হড়পা বান ও ধসে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কলকাতাও পুজোর আগে ভয়ঙ্কর বৃষ্টিতে নাজেহাল। ভাসছে উত্তরবঙ্গ। আবহাওয়াবিদদের মতে, বর্ষার দুর্ভোগের পর কলকাতার জন্য আরও কঠিন শীতের সময় আসতে চলেছে।
মৌসম ভবন এবং মার্কিন আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, চলতি বছরে পূর্বের তুলনায় অনেক বেশি শীত পড়তে চলেছে। বিশেষ করে উত্তর ভারতে তীব্র শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাবনা রয়েছে। অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে ‘লা নিনা’ তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ৭১ শতাংশ। মার্কিন ক্লাইমেট প্রেডিকশন সেন্টারও এই পূর্বাভাসকে সমর্থন দিয়েছে।
লা নিনা শব্দটি স্প্যানিশ ভাষার, যার অর্থ ‘ছোট মেয়ে’। এটি এক ধরনের জলবায়ুগত অবস্থা, যখন প্রশান্ত মহাসাগরের কিছু অংশ অস্বাভাবিকভাবে ঠান্ডা হয়ে যায়। এর ফলে বিশ্বজুড়ে অতিবৃষ্টি বা তীব্র শীত দেখা দেয়। বিপরীতে, জল যদি অস্বাভাবিকভাবে গরম হয়, তাকে বলা হয় এল নিনো, যা খরা ও অনাবৃষ্টি ডেকে আনে।
লা নিনার সময় দক্ষিণ আমেরিকার কাছাকাছি পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরের জল ঠান্ডা হয়, আর ইন্দোনেশিয়া ও অস্ট্রেলিয়ার দিকে জল উষ্ণ হয়। ফলে বৈশ্বিক আবহাওয়ার প্যাটার্নে বিরাট প্রভাব পড়ে। নভেম্বর-ডিসেম্বরে উত্তর ভারতে শৈত্যপ্রবাহ ও তুষারপাত বেড়ে যায়।
ভারতে লা নিনার প্রভাবে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হয়। কৃষিনির্ভর দেশের জন্য এতে কৃষিকাজে সুবিধা থাকে, পাশাপাশি ভূগর্ভস্থ জলের পরিমাণও বাড়ে। একই সঙ্গে শীতও তীব্র হয়ে ওঠে। পাহাড়ি অঞ্চলে বেশি তুষারপাত হয়। তবে সাম্প্রতিক জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে লা নিনার চরিত্রও অস্বাভাবিক হয়ে উঠেছে। বর্ষার সময়ে ভারী বৃষ্টি এবং অন্য অঞ্চলে অনাবৃষ্টি এর প্রমাণ।
মার্কিন আবহাওয়া সংস্থা এনওএএ জানিয়েছে, বর্তমানে লা নিনা সক্রিয়। অতীতে ২০২০ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ট্রিপল ডিপ লা নিনা সক্রিয় ছিল। ২০২৩ সালে এল নিনো সক্রিয় হয়। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এই ওঠানামার প্রভাব আরও স্পষ্ট।
বিশেষজ্ঞদের মতে, অক্টোবর থেকে জানুয়ারির মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব বেশি থাকবে। ফলে শীতের আমেজ আগেভাগেই অনুভূত হতে পারে। ২০২৫ সালের শেষের দিকে প্রশান্ত মহাসাগরের আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে উত্তর ভারতের উপরিভাগে জেট স্ট্রিম প্রবাহিত হবে। এর ফলে বাংলা ও গোটা দেশজুড়ে কনকনে হাড়কাঁপানো শীত পড়তে পারে। পাহাড়ি এলাকায় রেকর্ড তুষারপাতও হওয়ার আশঙ্কা আছে।
গত বছর লা নিনার প্রভাবে দিল্লি, রাজস্থান, পাঞ্জাব, হরিয়ানা ও উত্তরপ্রদেশে ১৭ দিনের টানা শৈত্যপ্রবাহ ও শীতল দিনের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। এবারের পূর্বাভাস আরও ভয়ঙ্কর।
আরও খবর পড়ুন , অসম-নাগাল্যান্ড সীমান্তে উত্তেজনা: জালাল বস্তিতে ৯৩টি পরিবারের বাড়ি পুড়ল
📢 সবার আগে নিউজ আপডেট পেতে আমাদের ফলো করুন
📰 রাজনীতি | ⚽ খেলা | 🎬 বিনোদন | 🌍 আন্তর্জাতিক খবর 👉 সবকিছু এক ক্লিকেই পান আপনার হাতে।
👍 ফলো করুন Facebook 💬 Join করুন WhatsApp গ্রুপে
No comments:
আপনার মতামত এর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ 👇
👉 যদি মনে হয় বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ, পোস্টটি শেয়ার করুন 🔄নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন