পটনা থেকে: এনডিএর সমন্বয় বৈঠক — আসনবণ্টন ঘিরে উসকি, ধর্মেন্দ্র প্রধানের মধ্যস্থতা

পটনা থেকে: এনডিএর সমন্বয় বৈঠক — আসনবণ্টন ঘিরে উসকি, ধর্মেন্দ্র প্রধানের মধ্যস্থতা |

পটনা, ৫ অক্টোবর: এনডিএর সমন্বয় বৈঠক — আসনবণ্টন ঘিরে উসকি, ধর্মেন্দ্র প্রধানের মধ্যস্থতা

পটনা, ৫ অক্টোবর ২০২৫লেখক: সালমা মন্ডল আপডেট: 05/10/2025

আসন্ন বিহার বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতিতে এনডিএ-র অভ্যন্তরীণ সমন্বয় ও আসনবণ্টন নিয়ে তীব্র আলোচনার মধ্যেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর মধ্যস্থতায় বৈঠক — জিতেন রাম মাঝির দাবি, জেডিইউ-বিজেপির সূত্র এবং সম্ভাব্য সমাধান নিয়ে বিস্তৃত রিপোর্ট।

পটনায় এনডিএ বৈঠক
ছবি: পটনায় এনডিএর সমন্বয় বৈঠক (y বাংলা নিউজ/ফাইল ছবি)
পটনা: আসন্ন বিহার বিধানসভা নির্বাচনের (Bihar Election) প্রস্তুতিতে কেন্দ্রীয় স্তরে এনডিএর মধ্যে আসন বণ্টন নিয়ে গতকাল থেকে তীব্র রাজনৈতিক আলোচনা ও সমন্বয় প্রচেষ্টা চলছে। রবিবার কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান পটনায় এসে হিন্দুস্তানি আওয়াম মোর্চা (HAM) নেতা ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতেন রাম মাঝির সঙ্গে বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে উপ-মুখ্যমন্ত্রী সম্রাট চৌধুরী এবং বিজেপির বিহার প্রभारী বিনোদ তাওড়েও উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকের পর জিতেন রাম মাঝি বলেন যে আসন বণ্টন নিয়ে আলোচনা হয়েছে এবং শীঘ্রই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। তাঁর দাবি—এই দফায় তাঁর দল ১৫ থেকে ২০টি আসন চান। এ দাবি জেডিইউ ও বিজেপির নীতিগত অবস্থানের সঙ্গে সংঘাতের সৃষ্টি করেছে, কেননা জেডিইউ ও বিজেপি প্রস্তাব করছেন মাঝির দলের অংশগ্রহণ ৭ থেকে ১০ আসনে সীমাবদ্ধ রাখার।

আরও খবর পড়ুন , ডাক্তারের প্রেসক্রিপশনে কোল্ডরিফ সিরাপ: মৃত্যু ১১ শিশুর — মধ্যপ্রদেশে চিকিৎসক গ্রেফতার, বিভিন্ন রাজ্যে সিরাপ নিষিদ্ধ

রাজনৈতিক মহলে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত বলা হচ্ছে; কারণ HAM-র সমর্থন মহাদলিত সম্প্রদায়ের বড় ভোটব্যাঙ্কে প্রভাব রাখতে পারে। গত নির্বাচনে HAM-কে মোট ৭টি আসন দেওয়া হয়েছিল, যার মধ্যে ৪টিতে জয় হয়েছিল — ফলে এবারের চাহিদা বৃদ্ধির পেছনে ওই সফলতা অন্যতম কারণ হিসেবে গণ্য হচ্ছে।

সূত্রের খবর, ধর্মেন্দ্র প্রধানের পাটনার সফরটি এনডিএর অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা দূর করার লক্ষ্যে সমন্বয়মূলক প্রচেষ্টা হিসেবে রূপ নিয়েছে। প্রধানজির সঙ্গে বৈঠকে জেডিইউ নেতা লালন সিংহও অংশগ্রহণ করেন; সেখানে জেডিইউকে ১০২টি আসন এবং বিজেপিকে ১০১টি আসনের সূত্র আলোচনা করা হয়েছিল, যা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে জেডিইউকে সামান্য সুবিধা দিলেও জোটে অমিল কমানোর উদ্দেশ্যেই প্রস্তাবটি ছিল।

আরও খবর পড়ুন বিজয়কে কাজে লাগাতে চাইছে বিজেপি: কারুর দুর্ঘটনার প্রেক্ষিতে তামিলনাড়ুর রাজনৈতিক সমীকরণ

অন্যদিকে, লোক জনশক্তি পার্টি (চিরাগ পাসওয়ান) ও উপেন্দ্র কুশওয়াহার নেতৃত্বাধীন দলগুলোর দাবিও গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা নেবে। সূত্রের বরাত দিয়ে বলা হচ্ছে, বাকি ৪০টি আসন অন্যান্য সহযোগীদের মধ্যে বণ্টিত করার প্রস্তাব চলমান—যেমন: লোক জনশক্তি পার্টিকে ২২টি, HAM-কে ৬-৮টি এবং রাষ্ট্রীয় লোক মোর্চাকে ৪টি আসন দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে এই সংখ্যা চূড়ান্ত নয় এবং দুর্গাপূজা ও দশহরা উৎসবের পর চূড়ান্ত বণ্টন ঘোষিত হতে পারে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, জিতেন রাম মাঝির কাছে ‘স্বীকৃত দল’ মর্যাদা না থাকায় তার দলের সন্তুষ্টি অর্জন কঠিন হয়ে পড়েছে। মাঝি নিজে জানিয়েছেন, তিনি “ভিক্ষা করছি না, দাবি করেই চলেছি”—এই বক্তব্য এনডিএ ভেতরের উত্তেজনা আরও বাড়িয়েছে। চিরাগ পাসওয়ানের শিবিরও তাদের দাবিতে তৎপর; আগে তারা ৪৫টি আসন দাবি করেছিল, যা কমিয়ে ২২টিতে রেখেছে — এ নিয়ে তাঁদেরও অসন্তোষ কম নয়।

এনডিএ’র অভ্যন্তরীণ ঐক্য বজায় রাখাটাই এখন মুখ্য লক্ষ্য। ধর্মেন্দ্র প্রধান বারবার জোর দিয়ে বলেছেন যে “এনডিএ-র ঐক্যই আমাদের শক্তি” এবং আসনবণ্টন নিয়ে শিগগিরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি নির্বাচনী জোটকে শক্তকরণ করে মহাগঠবন্ধনের মতো বিরোধী জোটের কৌশল মোকাবিলা করতে চান।

প্রতিপক্ষ মহাগঠবন্ধন ইতিমধ্যেই এই ভেতরের অস্থিরতাকে রাজনৈতিক সুযোগে পরিণত করার চেষ্টা শুরু করেছে। আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব দাবি করেছেন, “এনডিএ ভাঙছে” — যদিও এনডিএ শিবিরের উচ্চপদস্থ নেতা ও সমর্থকরা এমন টীকা খণ্ডন করে বলছেন যে সামান্য মতবিরোধ হচ্ছে স্বাভাবিক এবং সমাধান দ্রুত হয়ে যাবে।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা আরও মত দিয়েছেন যে আসনবণ্টন শুধুমাত্র সংখ্যার লড়াই নয় — প্রতিটি আসনে প্রার্থী মনোনয়ন, স্থানীয় শক্তি, সমাজিক গোষ্ঠীর শক্তিধর প্রভাব এবং ভোট চরিত্র নির্ধারণের মতো জটিল বিষয়ও বিবেচ্য। তাই শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে ভালো সমন্বয় না হলে স্থানীয় স্তরে আঘাত আসতে পারে।

নির্বাচনী কৌশলগত পর্যবেক্ষণে দেখা যাচ্ছে, এনডিএর সংশ্লিষ্ট দলের মাঝে আপোষমূলক সমঝোতা ও রাজনৈতিক আর্থ-সামাজিক ইস্যু বেছে নিয়ে প্রচারণা চালানো হবে। একইসঙ্গে দলের ক্যাম্পেইনে মহাদলিত ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতি বিশেষ আর্কষণ তৈরির চেষ্টা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

শেষ পর্যন্ত আসনবণ্টন ও তার পিছনের কৌশল-মুখী চ্যালেঞ্জগুলি কতটা মেটানো যায়, তার ওপরই নির্ভর করবে বিহারের রাজনৈতিক মানচিত্র। দুর্গাপূজা ও দশহরার পর এনডিএর মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু চূড়ান্ত ঘোষণার সম্ভাবনা রয়েছে — এবং সেই ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিটি জোট সদস্যের রণকৌশলও স্পষ্ট হবে। y বাংলা নিউজ এই বিষয়ে আপডেট রাখবে এবং আনুষ্ঠানিক ঘোষণার পর বিস্তারিত বিশ্লেষণ ও আসনভিত্তিক প্রতিবেদন প্রকাশ করবে।

সংক্ষিপ্ত তথ্য:
  • জিতেন রাম মাঝি দাবি: ১৫-২০টি আসন
  • জেডিইউ-জোট সূত্র (প্রস্তাবিত): জেডিইউ ১০২, বিজেপি ১০১
  • বাকি আসন বিতরণ: লোক জনশক্তি ২২, HAM ৬-৮, রাষ্ট্রীয় লোক মোর্চা ৪ (প্রায়)
  • চূড়ান্ত বণ্টন: দুর্গাপূজা/দশহরা পর ঘোষিত হতে পারে
কপি রাইট মুক্ত রিপোর্ট — y বাংলা ডিজিটাল ডেস্ক।
সম্পাদনা: ডিজিটাল ডেস্ক | যোগাযোগ: editor@ybanglanews.com

📢 সবার আগে নিউজ আপডেট পেতে আমাদের ফলো করুন

📰 রাজনীতি | ⚽ খেলা | 🎬 বিনোদন | 🌍 আন্তর্জাতিক খবর 👉 সবকিছু এক ক্লিকেই পান আপনার হাতে।

👍 ফলো করুন Facebook 💬 Join করুন WhatsApp গ্রুপে

No comments:

আপনার মতামত এর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ 👇
👉 যদি মনে হয় বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ, পোস্টটি শেয়ার করুন 🔄নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন

Featured post

দুর্গাপুর গণধর্ষণ: সিবিআই তদন্ত দাবি পরিবারের, পুনর্নির্মাণে পুলিশের নজর দুর্গাপুর গণধর...

Search This Blog

Powered by Blogger.