বিহার ভোটের আগে নতুন দায়িত্বে অধীর চৌধুরী, কংগ্রেসের সিনিয়র পর্যবেক্ষক নিযুক্ত
বিহার ভোটের আগে নতুন দায়িত্বে অধীর চৌধুরী, কংগ্রেসের সিনিয়র পর্যবেক্ষক নিযুক্ত

ডিজিটাল ডেস্ক: বিহার বিধানসভা নির্বাচন ঘিরে সক্রিয় হয়ে উঠেছে জাতীয় রাজনীতির বড় বড় দলগুলি। বিজেপি, আরজেডি ও জেডিইউ’র মতো শিবিরগুলির পাশাপাশি কংগ্রেসও মাঠে নামতে শুরু করেছে নতুন কৌশলে। সেই প্রেক্ষিতেই শনিবার কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য ও প্রাক্তন লোকসভা বিরোধী দলনেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরীকে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে নিয়োগ করল দল।
কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গের নির্দেশে এবং এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) কে সি বেণুগোপালের ঘোষণায় জানা যায়, বিহার বিধানসভা ভোটের প্রস্তুতির জন্য তিনজন প্রবীণ নেতাকে সিনিয়র পর্যবেক্ষক হিসাবে নিয়োগ করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের বহরমপুরের প্রাক্তন সাংসদ অধীর চৌধুরী, রাজস্থানের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত এবং ছত্তীসগড়ের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বঘেল।
- দল: ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস
- দায়িত্ব: বিহার বিধানসভা নির্বাচনের সিনিয়র পর্যবেক্ষক
- অন্যান্য পর্যবেক্ষক: অশোক গহলৌত, ভূপেশ বঘেল
- ঘোষক: এআইসিসি সাধারণ সম্পাদক কে সি বেণুগোপাল
- সভাপতি: মল্লিকার্জুন খাড়গে
কংগ্রেসের এই সিদ্ধান্তকে রাজনৈতিক মহল দেখছে আসন্ন বিহার নির্বাচনে দলের প্রভাব বৃদ্ধির প্রচেষ্টা হিসেবে। কারণ, বিহারে কংগ্রেসের সংগঠন এখনও দুর্বল বলে মনে করা হয়। তাই জাতীয় স্তরের নেতাদের দায়িত্ব দিয়ে সংগঠন পুনর্গঠনের বার্তা দিয়েছে দল।
গত সপ্তাহেই পটনায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বর্ধিত বৈঠক। সেই বৈঠকে রাজ্য স্তরের নেতারা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন গৌরব গগৈ, শশী থারুর, জিতিন প্রসাদসহ কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। বৈঠকে গৌরব গগৈ উল্লেখ করেন, “বিজেপি এনআরসি-র নামে উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে বিভাজনের রাজনীতি শুরু করেছিল। এখন সেই একই মডেল বিহারেও প্রয়োগের চেষ্টা চলছে।”
তাঁর বক্তব্যের প্রতিধ্বনি করে অধীর চৌধুরী বলেন, “বিজেপি ও সঙ্ঘ পরিবার জনবিন্যাস বদলের অভিযোগ তুলে ধর্মীয় মেরুকরণের তত্ত্ব নতুন মোড়ে পেশ করছে। বাংলা ও অসমের মতো বিহারেও তারা এই রাজনীতি কাজে লাগাতে চায়।” অধীরের মতে, ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতি রক্ষা করা এখন কংগ্রেসের বড় চ্যালেঞ্জ।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিহারে কংগ্রেসের পর্যবেক্ষক হিসেবে অধীরের নিয়োগ তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, অধীর চৌধুরী দীর্ঘদিন ধরে সংগঠন পরিচালনা ও জাতীয় রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। তাঁর তীক্ষ্ণ বক্তব্য ও সাংগঠনিক অভিজ্ঞতা কংগ্রেসের পক্ষে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বহরমপুর কেন্দ্র থেকে অধীর প্রার্থী হয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকে প্রায় ৮৫ হাজার ভোটে পরাজিত করেন তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী ও জাতীয় দলের প্রাক্তন ক্রিকেটার ইউসুফ পাঠান। পরাজয়ের পর অধীর চৌধুরী বলেছিলেন, “বাংলার রাজনীতি ক্রমশ ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। যারা উদার ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী, তাদের জন্য এখনকার নির্বাচন কঠিন।”
পরাজয়ের পরও অধীরকে একাধিক সাংগঠনিক বৈঠকে দেখা গেছে সক্রিয়ভাবে উপস্থিত থাকতে। দলীয় সূত্রে খবর, কংগ্রেস সভাপতি খাড়গে তাঁর অভিজ্ঞতা ও নেতৃত্বের গুণাবলীকেই সামনে রেখে এই নতুন দায়িত্ব দিয়েছেন।
রাজনৈতিক মহলের একাংশের মত, বিহারের নির্বাচনে অধীর চৌধুরীর ভূমিকা হতে পারে কংগ্রেসের পুনরুজ্জীবনের সূচনা। কারণ, রাজ্যের ২৪৩ আসনের মধ্যে কংগ্রেস গতবার মাত্র ১৯টি আসনে জিতেছিল। তাই ২০২৫ সালের এই নির্বাচনে তাঁরা অন্তত ৫০ আসনে লড়াইয়ের লক্ষ্য নিয়েছেন।
এদিকে অশোক গহলৌত এবং ভূপেশ বঘেলের অন্তর্ভুক্তি দলীয় নেতৃত্বের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষার প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে। দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা এবং রাজনৈতিক নেটওয়ার্ক কংগ্রেসের প্রচারযুদ্ধকে আরও সুসংহত করতে পারে।
অধীরের ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, তিনি বিহারে যুব ভোটারদের মধ্যে ধর্মনিরপেক্ষতা, কর্মসংস্থান ও কৃষক ইস্যু নিয়ে প্রচারে জোর দেবেন। দলীয় কৌশল অনুযায়ী, অক্টোবরের শেষ সপ্তাহ থেকেই বিহারের বিভিন্ন জেলায় কংগ্রেস পর্যবেক্ষকদের নেতৃত্বে মিছিল, জনসভা ও দরপত্র কর্মসূচি শুরু হবে।
শেষ পর্যন্ত দেখা যাবে, এই নতুন দায়িত্বে অধীর চৌধুরীর নেতৃত্বে কংগ্রেস কতটা নিজেদের হারানো জমি পুনরুদ্ধার করতে পারে। কিন্তু একটা জিনিস পরিষ্কার—অধীর আবারও জাতীয় রাজনীতির ময়দানে নিজের সক্রিয় উপস্থিতি জানান দিলেন।
📢 সবার আগে নিউজ আপডেট পেতে আমাদের ফলো করুন
📰 রাজনীতি | ⚽ খেলা | 🎬 বিনোদন | 🌍 আন্তর্জাতিক খবর 👉 সবকিছু এক ক্লিকেই পান আপনার হাতে।
👍 ফলো করুন Facebook 💬 Join করুন WhatsApp গ্রুপে
No comments:
আপনার মতামত এর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ 👇
👉 যদি মনে হয় বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ, পোস্টটি শেয়ার করুন 🔄নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন