মধ্যপ্রদেশের ছিন্দওয়াড়ায় কাশির সিরাপ সন্দেহে কিডনি বিকল: ৬ শিশুর মৃত্যু
মধ্যপ্রদেশের ছিন্দওয়াড়ায় কাশির সিরাপ সন্দেহে কিডনি বিকল: ৬ শিশুর মৃত্যু

সংক্ষিপ্ত শিরোনাম: পারসিয়া ও আশপাশের গ্রামে শুরু হওয়া ঠান্ডা-কাশি-জ্বরের পরে কিডনি বিকল ও ডায়ালিসিসের প্রয়োজন নিয়ে ৬ শিশুর মৃত্যু ঘটেছে; প্রশাসন দুটি কাশির সিরাপের বিক্রি সাময়িকভাবে বন্ধ করেছে ও তদন্ত চলছে।
ছিন্দওয়াড়া মেডিক্যাল কলেজের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ দীপক প্যাটেলের কথায়— প্রথমে শিশুরা ঠান্ডা-কাশি ও জ্বর নিয়ে আসে। কয়েক দিনের মধ্যে তাদের প্রস্রাব বন্ধ হয়ে যায় এবং কিডনি ক্রমান্বয়ে কাজ করা বন্ধ করে। জটিল অবস্থায় আক্রান্ত শিশুদের উন্নত চিকিৎসার জন্য নাগপুরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে; তবুও এখন পর্যন্ত ছয় শিশুকে বাঁচানো যায়নি।
জরুরি নির্দেশিকা (জেলা প্রশাসন)
- প্রেসক্রিপশন ছাড়া শিশুদের কোনও ওষুধ দেবেন না।
- ঠান্ডা-কাশি হলে অবিলম্বে সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান।
- ভুয়ো ডাক্তারদের কাছে চিকিৎসা করাবেন না।
- প্রতিটি ৬ ঘণ্টায় শিশুর প্রস্রাবের পর্যবেক্ষণ করুন; প্রস্রাব বন্ধ থাকলে সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তার দেখান।
- বমি বা অস্বাভাবিক অবসাদ দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসকের কাছে নিন।
- শিশুদের প্রচুর পরিমাণে জল পান করান এবং জ্বর দুই দিনের বেশি থাকলে অবিলম্বে চিকিৎসাসেবা নিন।
স্থানীয় সূত্র বলছে, ১ সেপ্টেম্বরের পরে পরাসিয়া, উমরেঠ, জাতাছাপর, বারকুহি-সহ বিভিন্ন গ্রামে শিশুমহলে ঠান্ডা-কাশি-জ্বরের প্রবণতা বাড়ে। অনেক অভিভাবক স্থানীয় ওষুধের দোকান বা ক্লিনিক থেকে কাশির সিরাপ কিনে ব্যবহার শুরু করেন; পরে কয়েকদিনের মধ্যে কিছু শিশুর অবস্থা দ্রুত খারাপ করে। রক্ত পরীক্ষা ও অন্যান্য টেস্টে জাপানি এনসেফেলাইটিস বা প্রচলিত ভাইরাল অজানা পাওয়া না গেলেও বায়োপসিতে কিডনি সম্পর্কিত গণঅস্বাভাবিকতা ধরা পড়েছে বলে হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
জেলা কালেক্টর শৈলেন্দ্র সিং বলেন প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ৪ সেপ্টেম্বরে রেকর্ড করা হয়েছিল; ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট ৬টি মৃত্যু হয়েছে। প্রশাসন ৫৩৮টি নমুনা সংগ্রহ করেছে এবং প্রায় ৩০০ জনের কিডনি ও লিভার ফাংশন টেস্ট করা হয়েছে — এখনও নিশ্চিত কারণ চিহ্নিত করা হয়নি এবং তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
নিষেধাজ্ঞা ও সন্দেহিত সিরাপের নাম
প্রাথমিক অভিযোগ এবং প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসক ‘Coldrif’ ও ‘Nextro-DS’ নামে দুইটি কাশির সিরাপের বিক্রিতে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন; শুধুমাত্র অনুমোদিত ওষুধই বিক্রি করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্যবিভাগ ও বিশেষজ্ঞ টিম
এসসিডিএস ও সিডিসির (CDC) বিশেষজ্ঞ টিম পরিদর্শন করেছে এবং স্থানীয় হাসপাতাল ও নমুনা সংগ্রহ কেন্দ্রে কাজ করছে; কেন্দ্রীয় তত্ত্বাবধানে আরও পরীক্ষামূলক রিপোর্ট তৈরি হচ্ছে বলে জানা গেছে।
অভিভাবকদের জন্য পরীক্ষা-নির্দেশনা
- যদি শিশুর প্রচলিত প্রস্রাব বন্ধ থাকে বা গড়পড়তা থেকে কম হয় — তৎক্ষণিক চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান।
- ডায়ালিসিসের প্রয়োজন হলে দ্রুত নিকটস্থ সরকারি/বেসরকারি মেডিক্যাল কনসেনটারে যোগাযোগ করুন।
- অবশ্যই প্রেসক্রিপশন সহ মেডিকেল পরামর্শ অনুযায়ীই ওষুধ ব্যবহার করুন; ওভার-দ্য-কাউন্টার সিরাপ/ওষুধ প্রয়োগ করা থেকে বিরত থাকুন।
- প্রতিটি উপসর্গের সময় রেকর্ড রাখুন (জ্বরের সময়, সিরাপ দেওয়ার সময়, প্রস্রাবের হার ইত্যাদি)।
বিশেষ দ্রষ্টব্য
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে প্রশাসন ও স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ অনুরোধ করেছে— যে কোনো ধরনের ওষুধ প্রয়োগের আগে অনুমোদিত প্রেসক্রিপশন নিন এবং স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নির্দেশনা মেনে চলুন। তদন্ত ফলাফল প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত কেটেছে এমন কোনো সিদ্ধান্তকে নিশ্চিত হিসেবে মেনে নেওয়া উচিত নয়।
- স্থানীয় ও দেশের সংবাদমাধ্যম ও স্বাস্থ্যবিজ্ঞপ্তি — বিস্তারিত তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশের পরে এই তালিকা আপডেট করুন।
No comments:
আপনার মতামত এর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ 👇
👉 যদি মনে হয় বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ, পোস্টটি শেয়ার করুন 🔄নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন